টিকিটের জন্য মরিয়া সৌদি প্রবাসীরা

দফায় দফায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছুটিতে এসে দেশে আটকা পড়া সৌদি প্রবাসীরা কর্মস্থলে ফেরার জন্য উড়োজাহাজের টিকিট না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি এবং টিকিট নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করছেন তারা। এর ধারাবাহিকতায় গতকালও রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সৌদি প্রবাসীরা। এতে পুরো শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

সৌদি এয়ারলাইনসের কর্তৃপক্ষের শিডিউল অনুযায়ী, গতকাল যাদের টোকেন নম্বর ১৯০০ থেকে ২৩০০ শুধু তারাই টিকিট পাবেনএমনটা ঘোষণা ছিল আগে থেকেই। যদিও ৩০০০-এর পরের সিরিয়ালের টোকেন নম্বর যাদের, তারাও গতকাল সকাল থেকে ভিড় করেছেন টিকিটের জন্য। মূলত অনিশ্চয়তা থেকেই যত আগে সম্ভব টিকিট পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এসব প্রবাসী।

গত রোববার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম দেশে আটকা পড়া সৌদি আরব প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি উড়োজাহাজ চলাচলের ঘোষণার পর সৌদি গমনেচ্ছুরা দূতাবাসের সামনে যান। কিন্তু দূতাবাস দেশে ৩১টি ভিসা সেন্টারের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা জানান। ফলে ভিসা সেন্টারগুলোতে ভিড় করলে সেখান থেকে জানানো হয়, তারা দূতাবাস থেকে কোনো ভিসা অনুমোদনের নির্দেশনা পাননি। অবস্থায় সৌদি প্রবাসীদের মধ্যে হতাশা অনিশ্চয়তা তৈরি হলে নিয়েও গতকাল বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা।

সৌদি আরব বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী . কে আব্দুল মোমেন বলেন, সৌদি আরবে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আমাদের শত্রু রয়েছে। প্রবাসী সবচেয়ে বেশি হওয়ায় অন্যান্য দেশ আমাদের বিরুদ্ধে নালিশ করে। কারণ তাদের প্রবাসীদের সংখ্যা কমে গিয়েছে। আমাদের এখানে যখন বিশৃঙ্খলা হয়, তখন ওরা সৌদিদের ছবি নিয়ে দেখাবে। বলবে, কী লোক আনছ যারা খালি জটলা বাঁধিয়ে চিত্কার দেয়। এটা খুবই দুঃখজনক।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আটকে পড়া প্রবাসীদের পাঠানো যাবে কিনাএমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস আমরা পারব। কারণ অনেকগুলো ফ্লাইট এখন যাচ্ছে। প্রথম দিকে একটু অব্যবস্থাপনা হয়। তবে তা কঠিন কিছু নয়। আমাদের লোকেরা একটু উল্টাপাল্টা করে, এগুলো দুঃখজনক।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে খুব ভালো আলাপ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি আরব আগে চাইলে আমাদের সময় দিত না। এখন আমরা খুবই ভাগ্যবান। এখন সহজেই সাক্ষাতের সময় দেয়। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। তিনি সৌদির সঙ্গে খুবই ভালো সম্পর্ক তৈরি করেছেন।

. কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের যে ভিসা ইকামা বর্ধিত করল, এটার জন্য তাদের ধন্যবাদ দেয়া হয়েছে। এর জন্যই আলাপ করা। দ্বিতীয়ত আমাদের এখানে কিছু অভিযোগ রয়েছে, আরো ফ্লাইট দরকার। সেগুলো বাড়ানোর জন্য বলেছি। তিনি রাজি হয়েছেন। আরবি সফর মাসে আমরা আরো ফ্লাইট চাই। কারণ অনেক লোক আটকা পড়ে রয়েছে। তারা বিষয়টি বিবেচনা করবে বলেছে। আর রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তারা আমাদের ক্রমাগত সহযোগিতা করে যাবে।

সৌদির ভিসারে মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে . কে আব্দুল মোমেন বলেন, যাদের ওখানের পারমিট রয়েছে, প্রত্যেকের ভিসা বাড়ানোর কথা তারা বলেছে। মাসে যত ইকামা রয়েছে, সবগুলোকে বৈধ হিসেবে ধরা হবে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। ইকামা এবার আগের মতো সয়ংক্রিয় নেই, ওখানে গিয়ে দেখাতে হবে।

এদিকে প্রবাসীদের ফেরাতে এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সাউদিয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়েছে উভয় এয়ারলাইনসই। এছাড়া বিমান প্রবাসীদের ফেরাতে সৌদির তিন শহরে মোট ১২টি বিশেষ ফ্লাইট ঘোষণা করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন