সিলেট মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণের মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল ভোরে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও সকালে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে আরেক আসামি অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করা হয়। এখনো এ মামলার এজাহারনামীয় চার আসামি পলাতক রয়েছেন।
এদিকে গতকাল নির্যাতিতার জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। দুপুরে ওই তরুণীকে সিলেট মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতে হাজির করা হলে শারমিন খানম নিলা তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
এদিকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের বিচার দাবিতে গতকাল আন্দোলনমুখর ছিল সিলেট। বিচার দাবিতে নগরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বেশ কয়েকটি সংগঠন। ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাদের নাম উঠে এলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও দোষীদের বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।
দুই আসামি গ্রেফতার: গতকাল ভোরে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেফতার করে ছাতক থানা পুলিশ। সকালেই মামলার চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত সাইফুর ও অর্জুন এমসি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী।
পুলিশ জানায়, মাধবপুর উপজেলার মনতলা সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় অর্জুনকে। অর্জুন সীমান্ত দিয়ে ভারত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানান মাধবপুর থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম দস্তগির।
এর আগে গত শনিবার নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরীর শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। নাম উল্লেখ করা আসামিদের ছয়জনই ছাত্রলীগের কর্মী। তারা হলেন সাইফুর রহমান, মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান।
সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করে যাচ্ছে। পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম সিলেটজুড়ে কাজ করছে। সীমান্ত এলাকায়ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী বলেন, দুপুরে পুলিশ নির্যাতিতা তরুণীকে ওসমানী হাসপাতাল থেকে আদালতে নিয়ে আসে। দেড়টার দিকে তিনি আদালতে ওই রাতের ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালতে তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকালে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার এক দম্পতি। ছাত্রলীগের পাঁচ-ছয়জন নেতাকর্মী তাদের ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে আসে। সেখানে দুজনকেই মারধর করে তারা। পরে স্বামীকে বেঁধে রেখে তার সামনেই স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের শিকার তরুণী বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি আছেন।