দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করছে অপকা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি মিরসরাই

মিরসরাই উপজেলার হাজীশ্বরাই গ্রামের বাসিন্দা মো. আলমগীরের হাত ধরেই ১৯৯২ সালে যাত্রা করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অপকা ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়। বর্তমানে পিকেএসএফের অর্থায়নে শর্তহীন ঋণ, প্রশিক্ষণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের মধ্য দিয়ে মিরসরাই, ফটিকছড়ি কক্সবাজারে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অপকা।

জানা গেছে, দারিদ্র্য বিমোচনে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনা সুদে ঋণ প্রশিক্ষণ, শর্তহীন অর্থ প্রদান, দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বৈকালিক বিদ্যালয় স্থাপন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে মাত্র ১০০ টাকায় সারা বছরের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির প্রশিক্ষণ উপকরণ প্রদানের মাধ্যমে কৃষকের ফসল বৃদ্ধিকরণ, ভিক্ষা বৃত্তি বন্ধে ভিক্ষুক পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি। এরই মধ্যে কক্সবাজারের ছয়টি উপজেলায় স্বাস্থ্য, নারী নির্যাতন রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে অপকা। মিরসরাই-ফটিকছড়ির ৪০টি পরিবারকে গোল মরিচ, আদা হলুদ চাষের জন্য শর্তহীন আড়াই লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে। মিরসরাইয়ের সাতজন ফটিকছড়ির আটজন ভিক্ষুককে লাখ টাকায় মুদি দোকান দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। মিরসরাইয়ের ৫০টি ফটিকছড়ির ৪৫টি কৃষক পরিবারকে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির উপকরণ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে ফসল বৃদ্ধিকরণে সহায়তা করা হয়েছে। মিরসরাইয়ের ৬০টি ফটিকছড়ির ১০টি পরিবারকে মধু চাষ, বায়োগ্যাস তৈরি, কবুতর পালন, নার্সারীকরণে সহায়তা দেয়া হয়েছে। ২০০ প্রবীণকে সমাজের সম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে বিনা সুদে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ৪০টি বৈকালিক পাঠদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে হাজার ২০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। মাত্র ১০০ টাকায় মিরসরাই, ফটিকছড়ি কক্সবাজারের ১৫ হাজার প্রান্তিক পরিবারকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনা হয়েছে।

মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের ঘেরামারা গ্রামের মৃত আলী মিয়ার স্ত্রী শামসুর নাহার জানান, এক মেয়ে তিন ছেলেকে রেখে তার স্বামী মারা যান। তাই বাধ্য হয়ে তিনি ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমে পড়েন। কিন্তু উন্নয়ন সংস্থা অপকা তাকে লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করে দেয়। তিনি ওই টাকা দিয়ে একটি মুদি দোকান দেন। পরে দোকানের লাভের অংশ দিয়ে দুটি গরু কেনেন। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে তিনি ছেলেমেয়েকে নিয়ে সুখে জীবনযাপন করছেন।

বিষয়ে অপকার নির্বাহী পরিচালক মো. আলমগীর বলেন, পিকেএসএফের অর্থায়নে উন্নয়ন সংস্থা অপকা মিরসরাই-ফটিকছড়ি কক্সবাজারে দারিদ্র্য বিমোচনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পিকেএসএফের অর্থায়ন অব্যাহত থাকলে শুধু মিরসরাই, ফটিকছড়ি কক্সবাজার নয়, দেশের অন্যান্য উপজেলায় দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে অপকা

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ ফজলুল কাদের বলেন, পিকেএসএফ উন্নয়ন সংস্থা অপকার মাধ্যমে মিরসরাই, ফটিকছড়ি কক্সবাজারে দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি মিরসরাইয়ের মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় উন্নত মাছ চাষের জন্য একটি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন