জ্বালানি তেল

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রফতানি বাড়িয়েছে ইরান

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইরানের জ্বালানি তেল খাতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চলছে, যা দেশটির অর্থনীতিকে বড় ধরনের চাপের মুখে ফেলেছে। এর মাঝেও চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মিত্র দেশগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি বাড়িয়েছে তেহরান। ইরান থেকে জ্বালানি তেল বহনকারী ট্যাংকারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত ছয় জাতির পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তির আওতায় ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি গুটিয়ে নিতে রাজি ছিল। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা পর্যায়ক্রমে তুলে নিতে সম্মতি দিয়েছিল ওয়াশিংটন। তবে ট্রাম্পের চুক্তি বাতিলের মধ্য দিয়ে এসব উদ্যোগ ভেস্তে যায়। উল্টো তেহরানের ওপর জোরদার করা হয় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা।

ওই সময় থেকে ইরানের মিত্র দেশগুলোর ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগের কৌশল নেন ট্রাম্প। তিনি চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ভারত, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোকে ইরান থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ করতে সচেষ্ট হন। উদ্যোগে অনেকাংশে সফল হন ট্রাম্প। ধস নামে জ্বালানি তেলসমৃদ্ধ ইরান থেকে পণ্যটি রফতানিতে। সংকটে পড়ে ইরানের অর্থনীতি।

তবে নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পর গত সেপ্টেম্বরে ইরান থেকে সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হয়েছে। সময় দেশটি থেকে জ্বালানি পণ্যটির দৈনিক গড় রফতানি দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ব্যারেলে। এর আগের মাসেও ইরান থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দৈনিক গড় রফতানি তিন লাখ থেকে সাড়ে সাত লাখ ব্যারেলের মধ্যে ওঠানামা করেছিল।

জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকারের তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান ট্যাংকারট্রেকার্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা সমীর মাদানি বলেন, গত মাসে ইরান থেকে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (কনডেনসেটসহ) রফতানি হতে দেখা গেছে। দেড় বছরের মধ্যে একদিনে পরিমাণ জ্বালানি তেল রফতানি করেনি ইরান।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইরান থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রফতানি বৃদ্ধির বিষয়ে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে ইরানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি বৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেলেও ইরান থেকে কোন কোন দেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। যদিও এর আগে ইরান থেকে ভেনিজুয়েলায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হতে দেখা গেছে। তবে খাতসংশ্লিষ্টদের ধারণা, ইরানের মিত্র দেশগুলো তেহরানের কাছ থেকে বেনামে জ্বালানি তেল কিনে পরে তা আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ করছে।

গত সপ্তাহে ইরানি তেলমন্ত্রী বিজান জাঙ্গানেহ বলেছিলেন, করোনা মহামারীর মধ্যে অর্থনীতি রক্ষার স্বার্থে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রফতানি বাড়াতে সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে ইরান। যদিও ইরান ওপেকের শর্ত মেনে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন সীমিত পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন