২০ মাসের সর্বোচ্চে রাশিয়ায় গমের রফতানিমূল্য

বণিক বার্তা ডেস্ক

গম উৎপাদন রফতানির জন্য রাশিয়ার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। দেশটিতে কৃষিপণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করেছে। ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রাশিয়ায় গমের রফতানিমূল্য বেড়ে প্রায় ২০ মাসের সর্বোচ্চে উন্নীত হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া থেকে রফতানিযোগ্য গমের চাহিদা বেড়েছে মিসর, বাংলাদেশ তুরস্কে। এটা রুশ গমের রফতানিমূল্য বাড়ানোর পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার এগ্রিমানি।

রাশিয়ার বাজারে ২২ সেপ্টেম্বর ফ্রি অন বোর্ড (এফওবি) চুক্তিতে রফতানিযোগ্য সাড়ে ১২ শতাংশ প্রোটিনসমৃদ্ধ প্রতি টন গমের রফতানিমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৩৮ ডলার। সেপ্টেম্বরের তুলনায় দেশটির বাজারে রফতানিযোগ্য গমের দাম বেড়েছে টনপ্রতি ২৪ ডলার ৭৫ সেন্ট। প্রায় ২০ মাসের মধ্যে এটাই রাশিয়ায় গমের সর্বোচ্চ রফতানিমূল্য।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া থেকে মিসর, বাংলাদেশ তুরস্কে গম রফতানি বাড়তির দিকে রয়েছে। অন্যদিকে প্রতিকূল আবহাওয়ার জের ধরে ফ্রান্স, রোমানিয়া ইউক্রেনে কৃষিপণ্যটির উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দুইয়ের মিশেলে রাশিয়ায় গমের রফতানিমূল্য বাড়তে শুরু করেছে। কেননা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইউক্রেনে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে রফতানি কমতে শুরু করলে গমের ক্রেতারা স্বাভাবিকভাবে রাশিয়ার প্রতি ঝুঁকবেন। ফলে আগামী দিনগুলোয় রাশিয়া থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি আরো বাড়তে পারে।

গত জুলাই রাশিয়ায় গমের ২০২০-২১ বিপণন মৌসুম শুরু হয়েছে। নতুন মৌসুমের শুরু থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি লাখ টন গম রফতানি হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার ফেডারেল সেন্টার অব কোয়ালিটি অ্যান্ড সেফটি অ্যাসুরেন্স ফর গ্রেইন অ্যান্ড গ্রেইন প্রডাক্টস। ২০১৮-১৯ মৌসুমের একই সময়ে দেশটি থেকে সব মিলিয়ে কোটি ১২ লাখ টন গম রফতানি হয়েছিল। এরপর এবার সবচেয়ে বেশি গম রফতানি করেছে রাশিয়া।

গম উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় রাশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। তবে কৃষিপণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দেশটি। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর রাশিয়ায় সব মিলিয়ে কোটি ৭০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে দেশটিতে মোট কোটি ৩৬ লাখ ১০ হাজার টন গম উৎপাদন হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রামিয়ায় কৃষিপণ্যটির উৎপাদন বাড়তে পারে ৩৪ লাখ টনের বেশি। এর আগে ২০১৭ সালে রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি কোটি ৫১ লাখ ৬৭ হাজার টন গম উৎপাদন হয়েছিল।

এদিকে বাড়তি উৎপাদনের জের ধরে পরপর দুই বছরের মন্দা ভাব কাটিয়ে গতি ফিরতে পারে রাশিয়ার গম রফতানিতে। ইউএসডিএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর রাশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৬০ লাখ টন গম রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে দেশটি থেকে মোট কোটি ৩৫ লাখ টন গম রফতানি হয়েছিল। রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি কোটি ১৪ লাখ ৩১ হাজার টন গম রফতানি হয়েছিল ২০১৭ সালে।

এদিকে ইউক্রেনেও বাড়তে শুরু করেছে গমের রফতানিমূল্য। ২২ সেপ্টেম্বর দেশটির বাজারে ফ্রি অন বোর্ড (এফওবি) চুক্তিতে রফতানিযোগ্য সাড়ে ১১ শতাংশ প্রোটিনসমৃদ্ধ প্রতি টন গমের রফতানিমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৩৭ ডলারে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় দেশটির বাজারে রফতানিযোগ্য গমের দাম বেড়েছে টনপ্রতি ২৫ ডলার ৫০ সেন্ট।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন