সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর দলে অনুপ্রবেশের সুযোগ নেই —ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংগঠনিক জেলা সহযোগী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সাম্প্রদায়িক কোনো গোষ্ঠীকে কোনো অবস্থায় দলে অনুপ্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে না বলে জানালেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে কাদের বলেন, দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। হঠাৎ করে কেউ দলে এলে তাকে প্রথমেই নেতা বানানো যাবে না। সাম্প্র্রদায়িক গোষ্ঠীকে কোনো অবস্থাতেই অনুপ্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে না।

গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলী, দলের ঢাকা মহানগর শাখা এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের বলেন, আমি একটা বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই, কমিটি গঠনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় নেত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা মেনেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে হবে। দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। হঠাৎ করে কেউ দলে এলে তাকে প্রথমেই নেতা বানাতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সাম্প্র্রদায়িক গোষ্ঠীকে কোনো অবস্থাতেই অনুপ্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে না। আপনারা যারা কমিটি করেছেন বা করবেন, তাদের কমিটি গঠনে নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবে। নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষ নিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, মানুষ কাজে ফিরতে শুরু করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জীবনের সঙ্গে জীবিকার চাকা সচল হয়েছে। আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে সীমিত পর্যায়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। জাতীয় সম্মেলনের আগে পরে ৩১টি সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। করোনা সংক্রমণের বাস্তব কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে অধিকাংশ পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা পড়েছে। 

আসন্ন সাংগঠনিক সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আটটি বিভাগের জন্য আটটি টিম সাংগঠনিকভাবে আমরা প্রস্তুত করে নেত্রীর কাছে জমা দিয়েছি। অনুমোদন দিলে এই টিমগুলো আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আমাদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভা আহ্বান করা হয়েছে অক্টোবর। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্বাস্থ্যবিধি মেনে সভায় অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী দলীয় সভাপতি সর্বদা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।

কাদের আরো বলেন, আপনারা জানেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের গভীর ষড়যন্ত্রের তথ্য উদ্ঘাটন করেছে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা, যা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট কখনই জনগণের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করতে চায় না। সর্বদা ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আস্থা তাদের। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের আবেগ, ভালোবাসা, আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে এবং কাজ-কর্মে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়। আওয়ামী লীগ কখনই ষড়যন্ত্র করে না, এটি সহ্যও করে না। কিন্তু বারবার আওয়ামী লীগই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়।

দলীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে মানবিক বিবেচনায় মুক্তি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মানবিক বিবেচনাকে দুর্বলতা ভাবলে বিএনপি ভুল করবে। আমরা বিএনপি নেতৃত্বের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করতে চাই গণবিরোধী দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়েই তার দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আমরা শপথ গ্রহণ করছি।

সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ দিনটি উপলক্ষে সারা দেশে সব মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সীমিত পরিসরে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। ৩০ সেপ্টেম্বর এতিমখানায় খাবার বিতরণ করা হবে।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বিপ্লব বড়ুয়া, সায়েম খান প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন