কক্সবাজারে ১ হাজার ৫০৭ পুলিশ সদস্যের পদায়ন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি কক্সবাজার

মাদক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে তীব্র সমালোচনায় পড়া কক্সবাজার জেলা পুলিশ ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কক্সবাজার জেলা থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে হাজার ৪৮৭ পুলিশ সদস্যকে। আর নতুন করে জেলায় হাজার ৫০৭ পুলিশ সদস্যকে বদলি করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার পর্যন্ত কক্সবাজারে বদলি হয়েছেন হাজার ৩৪৭ জন পুলিশ সদস্য। পর্যায়ক্রমে বাকি সদস্যদেরও পদায়ন করা হবে। পরিবর্তন এসেছে কনস্টেবল থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার পদেও। পাশাপাশি বাহিনীর অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রমেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব মতে, শুক্রবার পর্যন্ত হাজার ৩৪৭ জনকে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ আট শীর্ষ কর্মকর্তা, ১৩৯ উপপরিদর্শক (এসআই), ৯২ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাজার ৫৫ জন নায়েব কনস্টেবল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কক্সবাজারের ডিবি থানাসহ সব পর্যায়ে দায়িত্বে থাকা ৩৪ পরিদর্শককে বদলি করা হয়। শুক্রবার সে সংখ্যা বেড়ে ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। বদলি হওয়া শূন্য পদ পূরণে শুক্রবারই চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে যোগ দিয়েছেন ৫৩ জন পুলিশ পরিদর্শক, ৮৫ জন এসআই-এএসআই ৭৩৪ জন কনস্টেবল। এর মধ্যে ১৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। আর ঝিনাইদহের এসপি হাসানুজ্জামানকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি গত বুধবার দায়িত্বভার গ্রহণ করলে পরদিন বৃহস্পতিবার এসপি মাসুদ হোসেন কক্সবাজার থেকে বিদায় নেন।

পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, কক্সবাজার অঞ্চলের সব পুলিশ সদস্যকেই বদলি করা হবে। এটি নিয়মিত বদলিরই অংশ।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, কক্সবাজার জেলায় পদায়নের জন্য যেসব পুলিশ সদস্যকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ টেলিকম অডিটোরিয়ামে আইজিপি তাদের ব্রিফ করেন। কীভাবে সততা স্বচ্ছতার সঙ্গে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে ব্যাপারে আইজিপি তাদের দিকনির্দেশনা দেন। ইয়াবার বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা পালন করতেও তাদের নির্দেশ দেন আইজিপি। ইয়াবা বিকিকিনির সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্য জড়িয়ে পড়লে তার পরিণতি কী হতে পারে বার্তাও দিয়েছেন আইজিপি . বেনজীর আহমেদ।

গত ২১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহকারী পুলিশ সুপার পদের সাত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। এর মধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বদলি হওয়ার পর টেকনাফ থানায় বদলি হয়ে আসা নতুন ওসি মো. আবুল ফয়সলকে ১১ দিনের মাথায় বদলি করা হয়। টেকনাফে ওসি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বিপুল অংকের অর্থের লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তাকে বদলি করা হয়।

গত বুধবার রাতে বদলি হওয়া আদেশ অনুযায়ী উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আখতারকে সিলেট রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর থানার ওসি মাসুম খানকে খুলনা রেঞ্জে, কুতুবদিয়া থানার ওসি একেএম সফিকুল আলম চৌধুরীকে খুলনা রেঞ্জে, মহেশখালী থানার ওসি দিদারুল ফেরদৌসকে বরিশাল রেঞ্জে, রামু থানার ওসি আবুল খায়েরকে রাজশাহী রেঞ্জে, চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানকে খুলনা রেঞ্জে, পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুল আজমকে রংপুর রেঞ্জে এবং টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএমএস দোহাকে খুলনা রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। এভাবে অন্য সব পরিদর্শককে দেশের বিভিন্ন রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

এর আগে ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ হত্যার পর চট্টগ্রাম মহানগরের সব পুলিশ সদস্যকে একযোগে চট্টগ্রাম রেঞ্জের বাইরে বদলি করা হয়েছিল। ২০০৫ সালের ২৮ আগস্ট ফটিকছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে জামাল উদ্দিন চৌধুরীর কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন