অভিমত

‘বড়গোপটিলা গারো মাঠের’ জনইতিহাস

পাভেল পার্থ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রাজাই মৌজায় অবস্থিত লাউড়ের গড়ে অবস্থিত একটি পাবলিক খেলার মাঠের নাম বড়গোপটিলা গারো মাঠ একটা সময় পণাতীর্থ আর শারফিনের মোকামে আসা মানুষেরাই লাউড়ের গড় টিলা দর্শন করত। কিন্তু এখন দিন বদলেছে। লাউড়ের গড়, পাশের শিমূল বাগান, যাদুকাটা নদী, হাওড়, পেছনের মেঘালয় পাহাড় আর আদিবাসী গ্রাম ঘুরতে দলে দলে আসছে মানুষ। আগেও জমিজমা নিয়ে স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে বাইরে থেকে আসা বাঙালিদের বিবাদ হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করপোরেট পর্যটন বাণিজ্য মনস্তত্ত্ব। লাউড়ের গড় আবারো বাইরে থেকে আসা বাঙালিদের দখলের নিশানা হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারীর বিপদকে তোয়াক্কা না করে মাঠটি দখলে মরিয়া হয়েছে কিছু মানুষ। চলতি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর স্থানীয় মান্দিরা মাঠটি ফেরত চেয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের কাছে লিখিত আবেদন করেছে। জেলা প্রশাসকের কাছেও আবেদন করেছেন। ১৩ সেপ্টেম্বর মাঠে বিষয়ে এক সালিশ বসে। বৈঠকে সালিশকারীরা মাঠ প্রতিষ্ঠা সংরক্ষণে মান্দিদের ভূমিকা স্বীকার করেন। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই ঐতিহাসিক মাঠ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে এই মাঠের সূচনাকারী এবং ৭২ বছর ধরে মাঠের ব্যবস্থাপক স্থানীয় মান্দি জনগণ। নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিবাদ বহাল আছে। দ্রুত বড়গোপটিলা গারো মাঠ নিয়ে উত্থিত বিবাদের অবসান হোক। এজন্য স্থানীয় মানুষের ভাষ্য, প্রমাণ, নথির প্রতি আমাদের আস্থা ন্যায়পরায়ণতার ভিত্তি মজবুত করতে হবে। চলতি আলাপখানি বিষয়ে ন্যায্য সিদ্ধান্ত নিতে জনইতিহাসের কিছু ভাষ্য প্রমাণ হাজির করছে।

ঐতিহাসিক লাউড় পরগনা

শ্রী অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধির শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (পূর্বাংশ) কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে। বইটির দশম অধ্যায়ে আছে, প্রাচীনকালে শ্রীহট্ট লাউড়, গৌড় জয়ন্তীয়া এই তিনভাগে বিভক্ত ছিল। আইন--আকবরি গ্রন্থকে উদ্ধৃত করে তিনি জানান, সম্রাট আকবরের সময় (১৫৪২-১৬০৫) শ্রীহট্ট জেলা আটটি মহলে বিভক্ত ছিল। এর ভেতর লাউড় একটি মহল। অচ্যুতচরণ লেখেন, লাউড়ের রাজস্ব ছিল লাখ ৪৬ হাজার ২০২ দাম। দাম হলো ডবল পয়সার মতো একপ্রকার তাম্রমুদ্রা। আট দামড়ীতে এক দাম এবং চল্লিশ দামে এক শেরশাহী টাকা ছিল তখন গণনার হিসাব। আকবরের রাজস্বমন্ত্রী তোডরমল্ল কর্তৃক প্রস্তুত রাজস্ব হিসাবে লাউড়ের এই রাজস্ব হিসাব বর্ণিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এই অঞ্চল সুসঙ্গ রাজার শাসনে আসে। ১৯৫০ সালে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়। লাউড় পরগণার বনভূমি রাষ্ট্রীয় মালিকানায় আসে। ঐতিহাসিকভাবে অঞ্চলটি মেঘালয় পাহাড়ের কোলে যাদুকাটা, মাহারাম, রক্তি, পাটলাই নদীবিধৌত এবং হাওড়বেষ্টিত। মনবেগ, হাবেলীর মতো লাউড়ের আদি গ্রামগুলোর এখন কোনো হদিস নেই।

শিমূলতলী মানিগার নরখাদক

সুনামগঞ্জের সেলবরষের জমিদার বংশে ১৩০৩ বাংলায় জন্মগ্রহণ করেন আবদুর রহমান চৌধুরী। তত্কালীন ডেপুটি কমিশনারের অনুরোধে তিনি তার শিকারজীবনের শেষ বাঘটি শিকার করেন লাউড় জঙ্গলে। জানোয়ারের খাসমহল, শিমূলতলীর নরখাদক মানিগার নরখাদক নামে তার তিনটি বই আছে। তার বইতে লাউড় পরগনার দুর্গম জঙ্গলের কিছুটা পরিচয় মেলে। মানিগার নরখাদক বইতে তিনি লিখেছেন, ...পূর্ব দক্ষিণে লাউড়ের গড় রিজার্ভ ফরেস্ট। সেখানে পশু শিকার নিষিদ্ধ। নদীতীরের শিমূলবন লাউড়ের গড়ের উঁচু ভূমির মাঝখানে ধু-ধু বালুচর দিয়ে হাঁটাপথে অনেকে শারপিন মোকামে যায়। যাত্রীরা নদীর তীরে পাতলা ঝোপঝাড়ে প্রায়ই বাঘকে বিচরণ করতে দেখে। ২০০৬ সালে রাজাই, কড়ইগড়া, মাঝিটিলা, ভুরঙ্গাছড়া, লালঘাট, বড়গোপ, মাছিমপুর, চানপুর গ্রাম থেকে আমি নিজেও এই অঞ্চলের বন্যপ্রাণীদের নানা আদি বিবরণ সংগ্রহ করি। এমনকি এই অঞ্চলে নতুন বসতি স্থাপনকারী বহিরাগত বাঙালিদের অনেকের বাঘ দর্শনের স্মৃতি আছে। ১৯৬২ সালে কিশোরগঞ্জের নিকলীর কাশীপুর গ্রাম থেকে এসে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে বসতি স্থাপন করেন মহরম আলী। তার বাড়িতে এসে বাঘ গরু মেরে গিয়েছিল।

সাতদিনের আগুন, আবাদিদের আগমন

মহাভারতের খাণ্ডব বন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক অ্যামাজন বন সবই পুড়েছে লোভের আগুনে। পুড়িয়েছে বাইরে থেকে আসা মানুষেরা আর তাদের মুনাফার লোভ। পঞ্চাশের দশকে আসামের বাঙ্গাল খেদাও আন্দোলনে বিতাড়িত হাজার হাজার আশ্রয়হীন লোক সুনামগঞ্জের এই সংরক্ষিত বনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা ঐতিহাসিক এই বনে আগুন লাগিয়ে দেয়। সাতদিন সাত রাত ধরে আগুনে পুড়ে দুনিয়া থেকে হারিয়ে যায় এক প্রাচীন অরণ্য। এভাবেই ইকর-আটিয়ার গহিন বন বহিরাগতদের মাধ্যমে আবাদি কৃষিজমিনে পরিণত হয়।

নিরুদ্দেশ ইকর-আটিয়ার বন

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর সীমান্তে মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম খাসি পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ৫০ মাইল বিস্তৃত লাউড় মাহারাম বনের কথা জানা যায়। ইকর-আটিয়ার জঙ্গল নামে পরিচিত এই বনে নল, নটা, খাগ, ইকর, কাশ, বিন্যাছুবা, বনতুলসী, বুনোগোলাপ, ছণ, বেতন, বাঁশের আধিক্য ছিল। জলাভূমিতে ছিল হিজল, করচ, বরুণ, কদম, মূর্তার বাগ। গভীর এই বনে বাঘ, চিতা, খাটাশ, সজারু, বনরুই, ভালুক, শূকর, শিয়াল, হরিণ, অজগর, মহিষ, তারা বাঘসহ দেখা যেত বিরলসব পাখপাখালি। ১৭০০ সালে বাংলার শেষ স্বাধীন ভূস্বামী খাজা ওসমান লাউড় জঙ্গলের ভেতর দিয়ে সিলেটে পৌঁছেন। দেশভাগের পর এই বন নিঃশেষ হতে থাকে। ১৯৮৮ সালে মুক্তধারা থেকে প্রকাশিত মানিগার নরখাদক বইতে সম্পাদক খলিল চৌধুরী লিখেছেন, ...একসময় কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জের ভাটি এলাকা থেকে মানুষ এসে এই বনের ইকর, ছণ, নল, বেত, বাঁশ কেটে নিত। পাকিস্তান আমলে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, নোয়াখালী, কুমিল্লা থেকে দলে দলে লোক এসে নামমাত্র মূল্যে বনভূমি খরিদ করে বনধ্বংসে লেগে যায়।

হারানো হাওড়, হারানো নদী, হারানো গ্রাম

বড়গোপটিলা গারো মাঠ নিয়ে সাম্প্রতিক বিবাদ কোনোভাবেই আদিবাসী-বাঙালি দ্বন্দ্ব নয়। জাতিগত বৈষম্যের ময়দান থেকে এর সমাধানও সম্ভব নয়। সংকটের কারণ আরো উজানে, আরো ভাটিতে। প্রথমত, এখানে উজান কি ভাটিতে উভয় বনভূমি নিশ্চিহ্ন হয়েছে। উজান থেকে ভাটিতে পাহাড়ি ঢল আগে প্রাকৃতিক জঙ্গলবেষ্টনীতে বাধা পেয়ে একটা ব্যাকরণ নেমে ভাটিতে নামত। পাকিস্তান আমল থেকেই এই গণিত মানুষ গায়ের জোরে বদলে ফেলেছে। দুনিয়ার সর্বাধিক বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চলের ভাটিতে অবস্থিত হওয়ায় এখন বছর বছর পাহাড়ি ঢলে তলায় হাওড়। মেঘালয় পাহাড়ে আছে অপরিকল্পিত কয়লা পাথরখনি। এখন কেবল পানি নয়, পাহাড়ি বালিতে নিরুদ্দেশ হয়ে যাচ্ছে সীমান্তের একের পর এক হাওড়, নদী গ্রাম। অবস্থা স্থানীয় ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবহারে তৈরি করছে নতুন সংকট। নয়া বিরোধ। পচাশৌল নামে এক হাওড় ছিল উত্তর বড়দল ইউনিয়নে। মেঘালয় পাহাড় থেকে ভোলাঠাক্কর নদী, কড়ইগড়া ছড়া, ভুরঙ্গাছড়া নদী, বড়ছড়া নেমেছিল হাওড়ে। যাদুকাটা নদীর একটি ডাল লাউড়ের গড় টিলার কাছে মাহারাম নদী হয়ে পচাশৌলে প্রবেশ করেছে। ১৯৬৭ সালে নয়া বসতি স্থাপনকারী বাঙালিদের সরকারিভাবে পরিবারপ্রতি পচাশৌলের ১০ কেয়ার করে জমি তিনসনা বন্দোবস্তি হিসেবে দেয়া হয়। স্বাধীনতার পর থেকে পাহাড়ি বালিতে পচাশৌল ভরাট হতে থাকে। ১৯৮৮ সালের বন্যায় একেবারে ভরে যায় পচাশৌল আর মাহারাম গ্রামের মানুষেরা উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে। নতুন চরজমি নিয়ে তখনই স্থানীয় মান্দিদের সঙ্গে শান্তিপুরের নয়া বসতি স্থাপনকারী বাঙালিদের বিরোধ হয়। ঘর হারিয়ে অনেক বাঙালি আশ্রয় নেয় লাউড়ের গড় টিলায়। পাহাড়ি টিলা জঙ্গলে অনভ্যস্ত বাঙালিরা সমানে জঙ্গল-টিলা কেটে আবাদ বসতির বিস্তার ঘটায়। ২০১৮ সালে লাউড়ের গড়ের পাহাড় কাটা, বন নিধন এবং অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন উদ্যোগ নেয় এবং নিয়ে মামলাও হয়। কিন্তু হাওড় সীমান্তের এই ভূমি বিবাদ থামেনি। যদি উজান-ভাটির অন্যায় উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে না থামানো যায়, যদি বছরের পর বছর পাহাড়ি বালিতে মানুষের সহায়-সম্বল সব হারায়, তবে ভবিষ্যতে সংকট আরো তীব্র জটিল হবে। কেবল বড়গোপটিলা গারো মাঠ নয়, সীমান্তের সামগ্রিক ভূমি সম্পদ নিয়েই তৈরি হবে নির্দয় দরবার। ভূমি দখলে বাঙালিরা আরো মরিয়া হবে। অধিকতর প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে মান্দি-হাজংরা হারাবে ভূমির অধিকার। এর সঙ্গে যুক্ত হতে থাকবে বাণিজ্যিক মুনাফা, লুণ্ঠন, ক্ষমতা দলীয় রাজনীতির বাহাদুরি।

কেবল একটি খেলার মাঠ তো নয়!

বড়গোপটিলা গারো মাঠ কেবল একটি খেলার মাঠ নয়। লাউড়-মাহারাম অরণ্যের শেষ প্রাকৃতিক স্মৃতিচিহ্ন। প্রায় ৩১২ একর টিলা এখন নং খাসখতিয়ান ভূমি। এই টিলার পাশে রাজাই গ্রামের রেনসিং সলোমার (জন্ম ১৯৩১) ২০০৬ সালে এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছিলেন, লাউড়ের গড়ে লেঙ্গাম জনগোষ্ঠীর বেশকিছু পবিত্র এ্যাইং (পূজাস্থল) ছিল। বেসাকিন্নাহ, সয়কিন্নাহ, দমব্লি পূজা হতো এখানে। এখানকার টিলা পাহাড়ে লেঙ্গামরা স্তাউলাংখা (জুম চাষ) এবং মান্দিরা হাবাহুয়া (জুম) করত। বাঙালভিটা গ্রামের মিনোমনি দাজেল (জন্ম-১৯২১) তার মা রংশি দাজেলের সঙ্গে এই টিলায় জুম আবাদ দেখেছেন। ব্রিটিশ উপনিবেশ আমলেও আশপাশের মান্দি, হাজং, লেঙ্গামরা টিলা থেকে বনআলু, পাহাড়ি ফল ভেষজ গুল্ম সংগ্রহ করতেন। হেমন্তে এখানে কিছু খেলাধুলাও হতো। দেশভাগের পর মেঘালয়ের নংস্টইন রাজ্যের রাজা উইকক্লিফ সিয়েম রাজাই গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। পরের বছর ১৯৪৮ সালে টিলায় মান্দিরা একটি সুপরিসর খেলার মাঠ গড়ে তোলে। সরকারি প্রকৌশলী রাজা উইকক্লিফ নিজেও এই মাঠে খেলাধুলা করেছেন। পাশের লালঘাট হাজং গ্রামের টংকবিপ্লবী হেমেন্দ্র চন্দ্র সরকার (জন্ম ১৯০৪) বলেছিলেন, এই মাঠে মান্দি হাজংরা নানা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করত। ধর্মপাশার বহরাতলীর ক্যামনাথ বানাই (জন্ম-১৯৪১) থেকেও একই ভাষ্য শুনেছি। মান্দিরা এই মাঠের দেখভালের দায়িত্বে ছিল বলে মাঠটি বড়গোপটিলা গারো মাঠ হিসেবে পরিচিতি পায়। ১৯৬৮ সালে বারিক্যা মিয়া নামে এক প্রবীণ বাঙালি টিলায় বসবাস শুরু করলে টিলাটি নতুনভাবে বারিকের টিলা হিসেবেও পরিচিতি পায়। টিলায় কেবল খেলার মাঠ নয়; পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীর গভীরতা মাপক কেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়, খ্রিস্টীয় মিশনারি বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, গির্জাঘর মসজিদও গড়ে উঠেছে। সব জনভাষ্য জনইতিহাস প্রমাণ করে লাউড়ের গড়ের আদি বাসিন্দা মান্দি, হাজং, লেঙ্গাম জনগোষ্ঠী। বাঙালিরা এখানে নানাভাবে পরে এসেছে। বড়গোপটিলা গারো মাঠটির নির্মাতা, ব্যবস্থাপক সংরক্ষক স্থানীয় আদিবাসীরাই। বহিরাগতের কাছে প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ-ঐতিহ্যের প্রতি কোনো মায়া কি দরদ জন্মে না। মাঠটি স্বীকৃতিসহ আইনগতভাবে মান্দিদের কাছে ন্যস্ত করা হোক। বাইরে থেকে আসা বাঙালিরা এর মর্ম বুঝবে না। এটি সমস্যা নয়, তারা এই বাস্তুসংস্থান-সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত নয়। কেবল একটি ঐতিহ্য পাবলিক খেলার মাঠের জন্যই নয়, ঐতিহাসিক লাউড় পরগণার সর্বশেষ এই স্মৃতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা জরুরি। আর এই সংরক্ষণ তখনই জীবন্ত কার্যকর থাকবে যখন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততাকে আইনত স্বীকৃতি দেয়া হবে। খেলার মাঠটিসহ পুরো গড়টিলার সংরক্ষণের দায়িত্ব সামাজিক মালিকানা স্থানীয় জনগণের ওপর ন্যস্ত হোক। আশা করি, বড়গোপটিলা গারো মাঠের জনইতিহাস ভাষ্যকে রাষ্ট্র আমলে নেবে। নিশ্চিত করবে লাউড়ের গড়ের ন্যায়বিচার।

 

পাভেল পার্থ: লেখক গবেষক

[email protected]

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন