এলপিজি সিলিন্ডার

ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা পেলেন স্থানীয় উৎপাদকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ব্যুরো

এলপিজি সিলিন্ডারের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে শতাংশের অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর হতে অব্যাহতি পেয়েছেন স্থানীয় উৎপাদকরা। বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গতকাল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনটি আগামী বছর ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

নিয়ে গত ২১ আগস্ট বণিক বার্তায় আমদানিকারক সুবিধা পেলেও বেকায়দায় স্থানীয় উৎপাদকরা শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ পরিবেশিত হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) স্থানীয় বিক্রয়ের ওপর নতুন করে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করায় ভারসাম্যহীন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়েছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। কারণ সরাসরি সিলিন্ডার আমদানিকারকরা আগের মতোই আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা পাচ্ছেন। এতে সিলিন্ডার আমদানিতে উৎসাহ বাড়লেও স্থানীয় উৎপাদন ব্যবস্থা বড় আকারে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মূলত চাহিদার চেয়ে সিলিন্ডার উৎপাদনে অতিরিক্ত সক্ষমতা গড়ে উঠেছে দেশে। স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলো সিলিন্ডারের গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে নিরাপত্তা বিধান করে ঝুঁকিমুক্ত সিলিন্ডার সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় উদ্যোক্তারা সরকারের মূল লক্ষ্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনে যুক্ত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, দেশীয় সিলিন্ডার স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রয়ের ওপর চলতি অর্থবছরে নতুন করে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে (এসআরও নং-১৪৪ আইন/২০২০/১০৫ মূসক) যদিও স্থানীয়ভাবে সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করতে এর আগে উৎপাদিত সিলিন্ডার বিক্রয়ের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির (এসআরও নং-১৭২ আইন/২০১৯/২৯-মূসক) সুবিধা দিয়ে আসছিল সরকার। অন্যদিকে যারা সরাসরি সিলিন্ডার আমদানি করে দেশে বাজারজাত করছেন, তাদের জন্য প্রযোজ্য এসআরওতে আগের বছরের মতো চলতি অর্থবছরেও আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা বহাল রাখা হয়েছে।

এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মো. লিয়াকত আলী খান প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, আমদানি স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে এখন প্রতিযোগিতা ফেয়ার হবে। এর আগে বিক্রয় পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ দেশে গড়ে ওঠা পুরো স্থানীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে বিপদে ফেলে দিচ্ছিল। প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আমদানি প্রক্রিয়ার সঙ্গে উৎপাদন ব্যবস্থার একটা ভারসাম্য রাখার বিষয়ে আপস করা উচিত নয়।

দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) চাহিদা বেড়ে এখন সাত লাখ টনে এসে পৌঁছেছে। এরই সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাহিদা বেড়ে চলেছে এলপিজি সিলিন্ডারের। ফলে দেশের উদ্যোক্তারা সময় মনোযোগী হয়েছেন সিলিন্ডারের স্থানীয় উৎপাদনে।

এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদন খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত বিনিয়োগ প্রায় হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে ২৭টি এলপিজি উৎপাদনকারী কোম্পানি সিলিন্ডার বাজারজাত করে আসছে। এর মধ্যে ১৩টি কোম্পানি সিলিন্ডারের নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে অন্যান্য এলপিজি কোম্পানিকেও সরবরাহ করে। এই ১৩টি সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা ৯০ লাখ পিস। যদিও দেশের চাহিদা বছরে ৬০ লাখ পিস সিলিন্ডার।

দেশে এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনে সক্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামে রয়েছে টিকে গ্যাস অ্যান্ড গ্যাস সিলিন্ডার, বিন হাবিব এলপিজি, ইউনিভার্সেল গ্যাস অ্যান্ড গ্যাস সিলিন্ডার লিমিটেড, জেএমআই এলপিজি, বিএম এলপিজি, ইউনিটেক্স এলপিজি, এসএল এলপিজি। এছাড়া ঢাকা মোংলা এরিয়ায় সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা এলপিজি, ওমেরা এলপিজি, পেট্রোমেক্স এলপিজি, এনার্জিপ্যাক এলপিজি, যমুনা এলপিজি, মেঘনা এলপিজি (ফ্রেশ), ডেল্টা এলপিজি লিমিটেড। এছাড়া উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় আছে রানার এলপি গ্যাস নাভানা এলপিজি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন