পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গতকাল নির্মাণত্রুটি দেখা দেয়া পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনকালে দুই মন্ত্রী পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী নির্মাণত্রুটি সমাধানে তাড়াহুড়ো নয়, সময় নিয়ে ভালোমতো কাজটি শেষ করার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে রেলপথমন্ত্রী জানান, সমস্যাটি সমাধানে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। তবে এটি আসলেই ত্রুটি কিনা তা বলার সময় এখনো আসেনি বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে আলাদা দুটি প্রকল্পের আওতায়। এর মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। রেল সংযোগ কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৩৬ শতাংশ। এ অবস্থায় পদ্মা সেতুতে ওঠা ও নামার সময় সড়ক ও রেলপথ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। রেললাইনটি নির্মাণ করা হচ্ছে সংযোগ সড়কের ওপর দিয়ে। কিন্তু যে প্রান্তে সংযোগ সড়কের ওপর দিয়ে রেলপথটি অতিক্রম করেছে, সেখানে রেলপথটি প্রয়োজনীয় উচ্চতায় হচ্ছে না। এতে সংযোগ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বিঘ্নিত হবে বলে মনে করছেন প্রকৌশলীরা।
গতকাল সকালে মাওয়ায় পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক ও রেললাইনে নির্মাণত্রুটি দেখা দেয়া স্থান পরিদর্শনে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ত্রুটি শব্দের সঙ্গে আমরা একমত নই। ত্রুটি তখনই হবে, যখন চূড়ান্তভাবে পাওয়া যাবে। এটি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, কিছু সংশয় দেখা দিয়েছে। এত বড় প্রকল্পের পদে পদে সমস্যা হতে পারে। সেতু চালু হওয়ার আগেই এটি চিহ্নিত করা গেছে। এ ব্যাপারে উচ্চতর পর্যায়ে আলোচনা হবে।
এ সময় রেলমন্ত্রী বলেন, যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা, সেহেতু সমাধানে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য সড়ক বিভাগ ও রেলওয়ের কাছে ডিজাইন চাওয়া হয়েছে। এরপর দুটি ডিজাইন মিললে একটা সমাধানে আসা যাবে। আর আদৌ এটি কোনো সমস্যা কিনা বিশেষজ্ঞরা কিছু না বলা পর্যন্ত সেটি বলা যাচ্ছে না। সেতুতে ওঠা-নামার বিষয়টি সমন্বয় করতে হবে। পদ্মা সেতুর এ বিষয়টি পজিটিভভাবে দেখতে হবে।
এরপর জাজিরা প্রান্তে থাকা রেল সংযোগ প্রকল্পের ২৫ নম্বর পিয়ার পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী। এ পিয়ারের পাশেও একই ধরনের সমস্যা রয়েছে। এটি সমাধানের আগ পর্যন্ত সেখানে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামছুজ্জামানসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরের পর মাদারীপুরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ২৮ জনকে ১ কোটি ১২ লাখ টাকার পুনর্বাসন সুবিধার চেক বিতরণ করেন মন্ত্রী।
