যান্ত্রিকীকরণ বৃদ্ধিতে দ্রুতই কৃষি প্রকৌশলী নিয়োগ: কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষিমন্ত্রী . মো. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষি প্রকৌশলী নিয়োগের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কৃষি প্রকৌশল উইং স্থাপনে কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এর মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক কৃষি প্রকৌশলী নিয়োগ দেয়া হবে। ফলে দেশে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ প্রক্রিয়া আরো বেগবান হবে। কৃষক স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কৃষি প্রকৌশলীরা সহযোগিতা করবেন।

মন্ত্রী গতকাল বাংলাদেশ কৃৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবায়নাধীন অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন ইনোভেশন হাব-বাংলাদেশ (আসমি) প্রকল্প আয়োজিত লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি: বাংলাদেশে টেকসই খাদ্যনিরাপত্তার চাবিকাঠি শীর্ষক বার্ষিক কর্মশালা উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষিকাজের প্রতিটি ধাপে লাগসই কৃষি যন্ত্রের প্রয়োগ খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ধানের চারা রোপণের সময় শ্রমিক সংকটসহ শ্রমিকের বাড়তি মজুরি প্রাকৃতিক দুর্যোগ একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি করে, অন্যদিকে উৎপাদন ব্যাহত করে। আমাদের দেশে সনাতন পদ্ধতিতে অসংখ্য শ্রমিকের কঠোর পরিশ্রমে, বহু শ্রমঘণ্টার বিনিময়ে ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই করা হয়। এসবের ফলে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। ফলে কৃষিকে লাভজনক করার জন্য ভৌগোলিক কৃষি পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে অঞ্চলভিত্তিক একেক এলাকায় একেক ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার করতে হবে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিবান্ধব সরকার কৃষিকে আধুনিকীকরণ অধিকতর লাভজনক করতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, দেশে লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কৃষির যান্ত্রিকীকরণে হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা ২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আগামী দিনে যেন শুধু আমদানীকৃত কৃষি যন্ত্রপাতির ওপর নির্ভর না করে, সেজন্য আমরা স্থানীয় প্রতিষ্ঠান উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিচ্ছি যাতে দেশের উপযোগী কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে বিদেশ থেকে আনা যন্ত্রপাতিকেও দেশের উপযোগী করতে পারে। এক্ষেত্রে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকারি সম্প্রসারণ প্রতিষ্ঠান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে একত্রে যৌথভাবে লাগসই দেশীয় কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনে গবেষণা, উদ্ভাবিত যন্ত্রের উন্নয়ন জনপ্রিয়করণের কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে . রাজ্জাক বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে বিদেশী বিনিয়োগ দরকার। সেজন্য দেশী-বিদেশী যৌথ উদ্যোগকে আমরা উৎসাহ প্রদান করি।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় যৌথভাবে ফিড দ্য ফিউচার কর্মসূচি ইউএসএআইডির অর্থায়নে অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন ইনোভেশন হাব-বাংলাদেশ (আসমি) গবেষণা প্রকল্পটি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য গবেষণার মাধ্যমে চাহিদামতো উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করে ফসলের মূল্য নির্ণয়ে সময়, শ্রম অর্থ সাশ্রয়ের জন্য লাগসই যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ গবেষণার মূল লক্ষ্য। ২০১৫-১৯ সাল পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি প্রকল্পটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের চারটি জেলার চারটি উপজেলা নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিশক্তি যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক আসমি-বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক . মো. মঞ্জুরুল আলম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন