সবচেয়ে বড় আইপিওর অনুমোদন পেল রবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে রবি আজিয়াটা লিমিটেডকে ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির ৭৪১তম কমিশন সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করবে রবি।

দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক আইপিও শেয়ার ইস্যু করতে যাচ্ছে রবি। মোট ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ারের মধ্যে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার কোম্পানিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে ইস্যু করা হবে। টাকার অংকেও তাদের আইপিও সর্বোচ্চ। এর আগে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে ৪৮৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকার পুঁজি সংগ্রহ করেছিল এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেড।

গ্রামীণফোন লিমিটেডের পর দ্বিতীয় মোবাইল অপারেটর হিসেবে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে রবি। ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৪৮৬ কোটি লাখ ৫৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেছিল গ্রামীণফোন।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিসাব বছর শেষে পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া রবির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৬৪ পয়সা। উল্লেখ্য, আলোচ্য সময়ের জন্য কোনো সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করেনি কোম্পানিটি। সমাপ্ত হিসাব বছরে রবির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে পয়সা। আর গত পাঁচ হিসাব বছরের ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৩ পয়সা।

ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের মাধ্যমে কোম্পানিটির সাধারণ শেয়ারের চাঁদা প্রদানে ইচ্ছুক প্রত্যেক যোগ্য বিনিয়োগকারীকে চাঁদা গ্রহণ শুরুর দিন থেকে পূর্ববর্তী পঞ্চম কার্যদিবস শেষে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে ন্যূনতম কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে।

রবির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। চলতি বছরের মার্চ ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসার অনুমোদনের জন্য বিএসইসি বরাবর আবেদন করে সেলফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা। কোম্পানিটির পক্ষে আবেদনপত্র দাখিল করে ইস্যু ম্যানেজার আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস।

চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি রবি আজিয়াটার আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা উত্তোলনের ঘোষণা দেয়া হয়। রবির সিংহভাগ শেয়ারের মালিক মালয়েশিয়ার আজিয়াটা বারহাদের পর্ষদের পক্ষে সিআইএমবি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক দেশটির স্টক এক্সচেঞ্জ বুরসা মালয়েশিয়ায় ঘোষণা দেয়।

ওই ঘোষণায় বলা হয়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছাড়বে রবি। এর মধ্যে সাধারণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ৪০০টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে এসব শেয়ার থেকে সংগ্রহ করা হবে ৩৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। আর এমপ্লয়ি শেয়ার পারচেজ প্ল্যানের (ইএসপিপি) আওতায় রবির পরিচালক কর্মীদের কাছে ১০ টাকা দরে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে বাকি ১৩৬ কোটি লাখ হাজার ৩৪০ টাকা উত্তোলন করা হবে। আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত তহবিল থেকে রবি ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ বাকি কোটি লাখ টাকা আইপিওর ব্যয় নির্বাহ খাতে খরচ করবে।

রবির সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় হয়েছে হাজার ৪৮১ কোটি টাকা, আগের দুই হিসাব বছরে (২০১৮ ২০১৭) যা ছিল যথাক্রমে হাজার ৭৯৮ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট  মুনাফা হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ২০১৮ হিসাব বছরে যা ছিল ২১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০১৭ হিসাব বছরে কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট লোকসান ছিল ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন