চশমা কি কভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে?

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯- আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে চশমা পরা মানুষদের কম ঝুঁকি দেখেছেন চীনের গবেষকরা। জ্যামা অপথালমোলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটির লেখকরা লক্ষ করেছেন, গত বছরের ডিসেম্বরে উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর চশমা পরা খুব কম রোগী কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

বিশদ তদন্তের জন্য গবেষকরা কভিড-১৯-এর সব রোগীর কাছ থেকে তাদের চশমা ব্যবহারের তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। তাদের ছোট্ট গবেষণায় দেখা গেছে, কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২৭৬ জন রোগীর মধ্যে মাত্র ১৬ জন ( দশমিক শতাংশ) দিনে ঘণ্টার বেশি চশমা পরেছিলেন।

যেহেতু তারা নির্ধারণ করেছিলেন এই দশমিক শতাংশ রোগী মায়োপিয়া (স্বল্প-দৃষ্টি) আক্রান্ত, সেহেতু পরবর্তী সময়ে তারা হাসপাতালটির অবস্থান হুবেই প্রদেশে মায়োপিয়া আক্রান্ত রোগীর অনুপাত সন্ধান করেছেন। সেখানে তারা দেখতে পান, তাদের অনুপাত ৩১ দশমিক শতাংশ। মায়োপিয়া আক্রান্ত কভিড-১৯- হাসপাতালে ভর্তির অনুপাত সেই জনসংখ্যা থেকে প্রত্যাশার চেয়ে পাঁচ ভাগ কম ছিল। এটা একটি আকর্ষণীয় পর্যবেক্ষণ, তবে সব একক অধ্যয়নের মতো ফলাফলগুলো অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে নেয়া উচিত। যদিও চোখের সুরক্ষা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে গবেষণায় উঠে আসা পার্থক্যের পরিমাণ সন্দেহকে বাড়িয়ে তোলে। এর অর্থ এই নয় যে ফলাফলগুলো প্রকৃত নাও হতে পারে। তবে বৃহৎ আকারে প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত মাস্কের পাশাপাশি গগলস পরার পরামর্শ দেয়া উচিত হবে না।

যেকোনো ভাইরাল সংক্রমণের অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ হলো শরীরে প্রবেশ। যদিও আমাদের দেহের বেশির ভাগ অংশ প্রতিরক্ষামূলক ত্বক দ্বারা আচ্ছাদিত, যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে আমাদের দেহে প্রবেশে বাধা দেয়। এমনকি পাতলা ঝিল্লি আমাদের শ্বাসনালি, পাচনতন্ত্র চোখকে সুরক্ষা দেয়। পাতলা ঝিল্লির ভূমিকা হলো অক্সিজেন, খাদ্যের মতো বাহ্যিক জিনিসগুলোকে দেহের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে ভাইরাস প্রবেশপথগুলোর সুবিধা নিতে শিখেছে। কারণে প্রবেশপথগুলোর সুরক্ষার জন মাস্ক, গগলস প্রতিরক্ষামূলক পোশাক তথা পিপিই ডিজাইন করা হয়েছে।

আমরা ধারণা করতে পারি, শরীরের প্রবেশপথগুলোয় মূল আক্রমণটি বায়ুর মাধ্যমে অ্যারোসল হিসেবে সংক্রমিত ভাইরাল কণা থেকে আসে। আর ভাইরাল কণাগুলো শরীরের দুর্বল অংশগুলোয় যাওয়ার মূল উপায়টি আসে হাতের মাধ্যমে। এজন্য বারবার হাত ধুয়ে ফেলা এবং নাক, মুখ চোখ স্পর্শ না করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। চশমা বা গগলস একদিকে বায়ুতে থাকা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেবে, অন্যদিকে চোখ স্পর্শ করা থেকেও বাধা দেবে। যদিও এটা খুবই ছোট পরিসরে করা একটা পর্যালোচনা। তাই মাস্কের পাশাপাশি গগলস পরার পরামর্শ দেয়ার আগে অবশ্যই আমাদের আরো ডাটা প্রয়োজন।

সায়েন্স অ্যালার্ট

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন