অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া উপকূলে আটকা পড়ে ৯০ তিমির মৃত্যু

বণিক বার্তা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া উপকূলে আটকা পড়া ২৭০টি তিমির অন্তত এক-তৃতীয়াংশ মারা গেছে। মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে আরো বেশকিছু তিমি। গতকাল পর্যন্ত এসব তিমির মধ্যে মাত্র ২৫টিকে সমুদ্রে ফেরত পাঠাতে পেরেছেন উদ্ধারকারীরা। খবর বিবিসি।

স্থানীয় সময় সোমবার তাসমানিয়ার পশ্চিম উপকূলের অগভীর পানিতে পাইলট তিমিগুলোকে আটকা পড়া অবস্থায় দেখা যায়। তবে ঠিক কী কারণে তিমিগুলো তীরে চলে আসে তা এখনো জানা যায়নি। মেরিন জীববিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব তিমিকে উদ্ধারের জন্য বেশ কয়েকদিন লেগে যাবে। তিমিদের সমুদ্র তীরে চলে আসা অঞ্চলে বেশ সাধারণ ঘটনা। কিন্তু এর আগে গত এক দশকে একসঙ্গে এত বেশি পরিমাণ তিমি উপকূলে এসে আটকা পড়েনি। তাসমানিয়ায় সর্বশেষ বিপুলসংখ্যক তিমির তীরে অগভীর পানিতে আটকা পড়ার ঘটনা ঘটে ২০০৯ সালে। ওই সময় দুইশর মতো তিমি দ্বীপটির উপকূলে আটকা পড়ে।

সোমবার বিকালের দিকে তাসমানিয়া মেরিন কনজারভেশন প্রোগ্রামের উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। সময় তারা ম্যাকুয়ারি হেডস নামে দ্বীপটির একটি প্রত্যন্ত এলাকায় তিনটি দলে তিমিগুলোকে দেখতে পান। ম্যাকুয়ারি হেডস এতটাই প্রত্যন্ত এলাকা যে সেখানে যাওয়ার জন্য তেমন কোনো জলযান বা সড়ক যোগাযোগ নেই। তারা দেখতে পান, প্রায় ২০০টির মতো তিমি একটি বোট র্যাম্পের কাছে বালুচরে আটকে আছে। এর কয়েকশ মিটার দূরে আরো ৩০টি তিমি দেখতে পান তারা। এছাড়া ওশান বিচে তারা খুঁজে পান আরো ৩০টি তিমি।

উদ্ধারকর্মীরা জানান, তিমিগুলোর মধ্যে অধিকাংশ তুলনামূলকভাবে দুর্গম এলাকায় আটকা পড়ায় সেগুলোকে উদ্ধারে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে। তার পরও কিছু তিমি, যেগুলো তুলনামূলকভাবে গভীর পানি ছিল, সেগুলোকে সফলতার সঙ্গে সমুদ্রে ফেরত পাঠানো গেছে। আর উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন ৪০ জনের মতো প্রশিক্ষিত কর্মী। তারা মঙ্গলবার সকালে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের মাধ্যমে তিমিগুলোকে বালুচর থেকে ঠেলে সমুদ্রে পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ওয়াইল্ডলাইফ বায়োলজিস্ট . ক্রিস কারলিয়ন বলেন, তিমিগুলোকে পুনরায় পানিতে ভাসানোর কাজ হয়তো খুব কঠিন হবে না। একবার প্রাণীগুলোকে পানিতে ভাসাতে পারলে তার পরের কাজ হবে সেগুলোকে আরো দূরে ঠেলে নিয়ে যাওয়া। তবে তীব্র ঢেউয়ের বিপরীতে কাজ একটু কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এক্ষেত্রে নৌকার সহায়তা নিতে হতে পারে। তিনি আরো বলেন, তিমিগুলোকে উদ্ধারের কাজে আরেকটি বাধা হলো এগুলো বৃহৎ আকার। একেকটি পাইলট তিমির দৈর্ঘ্য মিটার পর্যন্ত হতে পারে, ওজন হতে পারে তিন টন পর্যন্ত। তাছাড়া যেখানে প্রাণীগুলো আটকা পড়েছে, সে এলাকাও দুর্গম। তবে তিমিগুলোর উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব।

. ক্রিস কারলিয়ন আরো জানান, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ধারকর্মীরা জানেন যে পাইলট তিমি সৈকতে তিন থেকে চারদিন বেঁচে থাকতে পারে। তাছাড়া যেগুলো আটকা পড়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশের অবস্থাই এখনো আশাব্যঞ্জক। তবে পুরো দলটির অবস্থা নিয়ে মঙ্গলবার একটি পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করা হবে। তাছাড়া কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে সাধারণ মানুষকে ভিড় করতে নিষেধ করেছে। কারণ উদ্ধারকাজের জন্য তাদের যথেষ্ট লোকবল রয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালে নিউজিল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে ২০০ পাইলট তিমি মারা যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন