আরো ১৫ দিন বেক্সিমকো সিনথেটিকসের শেয়ার লেনদেন স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ সেপ্টেম্বর থেকে আরো ১৫ দিনের জন্য পুঁজিবাজারে শেয়ার লেনদেন স্থগিত থাকবে বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পুঁজিবাজার থেকে স্বেচ্ছায় তালিকাভুক্তি প্রত্যাহারের জন্য সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করেছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো সিনথেটিকস। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির আবেদন গ্রহণ করে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে এর শেয়ার লেনদেন স্থগিত রাখার জন্য দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দেয়া হয়।

এক বিজ্ঞপ্তিতে বেক্সিমকো সিনথেটিকস শেয়ারহোল্ডারদের জানায়, ড্রন টেক্সচারড ইয়ার্ন (ডিটিওআই) নামে এক ধরনের পলিয়েস্টার সুতা উৎপাদন ও বিক্রির জন্য কোম্পানিটি ১৯৯০ সালের ১৮ জুলাই ‘যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর’-এ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। ১৯৯৩ সালের ৪ ও ৬ নভেম্বর যথাক্রমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) তালিকাভুক্ত হয় কোম্পানিটি।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কোম্পানির কার্যক্রম ছিল একক পণ্য অর্থাৎ ডিটিওয়াই ঘিরে। তবে তখন যেহেতু ডিটিওয়াইয়ের ব্যাপক চাহিদা ছিল, সেহেতু কোম্পানিটিও ভালো মুনাফা অর্জন করে এবং ১৯৯৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ১৮ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করেছে। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে কোম্পানি কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি। তখন থেকে কোম্পানিটি খুবই কঠিন সময় পার করতে থাকে। ডিটিওয়াই আমদানির ওপর সরকার শুল্ক হ্রাস করায় বারবার কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। শুল্ক হ্রাসের কারণে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সস্তা ডিটিওয়াই বাজার দখল করে। ফলে বাংলাদেশে এই ধরনের সুতা উৎপাদন করে মুনাফা অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়ে।

গত সাত বছর ধরে সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও কোম্পানি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন বা মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয় তাদের। এ কারণে গত কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটির শেয়ার অভিহিত মূল্যের চেয়েও কম দরে কেনাবেচা হয়ে আসছে। পরবর্তীতে কোম্পানিটি উৎপাদন কার্যক্রম ও কারখানা বন্ধে বাধ্য হয়। আইনানুযায়ী সব দেনা পরিশোধের পর সব শ্রমিক এবং বেশিরভাগ কর্মকর্তা ও স্টাফকে ছাঁটাই করে তারা।

এ অবস্থায় অন্য কোনো বিকল্প না থাকায় ডিএসই ও সিএসইতে কোম্পানির তালিকাভুক্তি প্রত্যাহার করে নেয়া উচিৎ বলে মনে করে বেক্সিমকো সিনথেটিকসের পরিচালনা পর্ষদ। যেহেতু স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে কোনো কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাতিলের বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বিধিবিধান নেই, তাই এই বিষয়ে পরামর্শ চেয়ে বিএসইসির কাছে চিঠি দিয়েছে বেক্সিমকো সিনথেটিকস।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আবেদনে শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে অভিহিত মূল্য বা প্রতি শেয়ার ১০ টাকা করে কিনে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে কোম্পানিটি। কমিশন আবেদন যাচাই-বাছাই করে তালিকাচ্যুতির বিষয়টি অনুমোদন করেছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন