তিন প্রান্তিকে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের মুনাফা ৭৬৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭৬৬ কোটি ১ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭২৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৫ টাকা ৫৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৪ টাকা ২২ পয়সা। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) শেয়ার হিসাব করলে তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়ায় ২৫ টাকা ২৯ পয়সা।

তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা হয়েছে ১৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৩৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ১৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১১ টাকা ১৪ পয়সা। আইপিও শেয়ার হিসাব করলে তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়ায় ৫ টাকা ১২ পয়সা।

৩১ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৬৬ টাকা ৩৮ পয়সা (আইপিও শেয়ার ছাড়া) ও ২৬৭ টাকা ১ পয়সা (আইপিও শেয়ারসহ)।

৩১ মার্চ কোম্পানিটির প্রাক-আইপিও শেয়ার সংখ্যা ছিল ৩০ কোটি। আইপিও শেয়ার বিবেচনায় নিলে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩।

আগামীকাল বুধবার দেশের পুঁজিবাজারে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন শুরু হচ্ছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ারটির ট্রেডিং কোড হবে ‘ডঅখঞঙঘঐওখ’।

২০ সেপ্টেম্বর ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) লটারির মাধ্যমে বরাদ্দকৃত শেয়ার সংশ্লিষ্ট শেয়ারহোল্ডারদের বিও অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল প্লাটফর্মে কোম্পানিটির আইপিও লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে ৯-১৬ আগস্ট কোম্পানিটির আইপিও সাবস্ক্রিপশন চলে। আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত ৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ারের বিপরীতে ৩৭৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা জমা পড়ে, যা নির্ধারিত কোটার প্রায় সাড়ে ৯ গুণ। আবেদন বেশি জমা পড়ায় নিয়ম অনুসারে লটারির আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭২৯তম কমিশন সভায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রান্তসীমা মূল্যের (কাট-অফ প্রাইস) চেয়ে ২০ শতাংশ কমে কোম্পানিটির শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। 

বিএসইসি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে ১০০ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলনের জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি সাধারণ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ইস্যুর প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর মধ্যে ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩৬৭টি শেয়ার যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে তাদের নিজেদের বিডিংকৃত মূল্যে ইস্যু করা হয়। যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রান্তসীমা মূল্য ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করেছেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে  ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬টি শেয়ার প্রান্তসীমা মূল্যের ২০ শতাংশ কমে অর্থাৎ ২৫২ টাকায় ইস্যু করা হয়েছে। 

চলতি বছরের ২ মার্চ বিকাল ৫টা থেকে ৫ মার্চ বিকাল ৫টা পর্যন্তটানা ৭২ ঘণ্টা ওয়ালটনের শেয়ারের প্রান্তসীমা মূল্য নির্ধারণে ইলেকট্রনিক বিডিং অনুষ্ঠিত হয়। বিডিংয়ে কোম্পানিটির প্রান্তসীমা মূল্য নির্ধারিত হয় ৩১৫ টাকা। পাবলিক ইস্যু রুলস অনুসারে প্রান্তসীমা মূল্যের ১০ শতাংশ কমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ইস্যু করা হয়। সে হিসাবে ২৮৩ টাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ওয়ালটনের শেয়ার পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রান্তসীমা মূল্যের ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ কমে শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্তনেয় ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের পর্ষদ।

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি বিএসইসির ৭১৪তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির আইপিও বিডিং অনুমোদিত হয়। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিএমআরই, ৩৩ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ পরিশোধ ও সাড়ে ৪ কোটি টাকা আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয় নির্বাচে খরচ করবে ওয়ালটন।

২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতিসহ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ২৪৩ টাকা ১৬ পয়সা, পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতি ছাড়া যা ১৩৮ টাকা ৫৩ পয়সা। গত পাঁচ বছরে কর-পরবর্তী নিট মুনাফার ভারীত গড় হারে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ২৮ টাকা ৪২ পয়সা। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনা দায়িত্বে ছিল ট্রিপল এ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন