স্বাধীন ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি টিআইবির

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাংকগুলো যে জনগণের আমানতে পরিচালিত হয়, এই বাস্তবতা দিনে দিনে ম্লান হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেছেন, জনগণের আমানত কিছু মানুষের ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হচ্ছে ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব জনগণের আমানতের  সুরক্ষা দেওয়া। প্রতিষ্ঠানটি লুটপাটকারী ও সরকারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। দুই পক্ষের চাপে ঋণ খেলাপি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

ব্যাংক খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন সুপারিশের পাশাপাশি স্বাধীন ব্যাংক কমিশন গঠনেরও দাবি জানান তিনি।

আজ মঙ্গলবার টিআইবি পরিচালিত ‘ব্যাংকিং খাত তদারকি ও খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশ ব্যাংকের সুশাসনের সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন। 

অনলাইন এই আলোচনায় ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথাকথিত ব্যাংক মালিক, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার এই তিন পক্ষই জনগণের আমানতের কথা ভুলে গিয়ে লুটপাটকারী ও ঋণ খেলাপিদের সুযোগ করে দিচ্ছে। সরকার অনেক সময় ঋণ খেলাপি, অর্থ আত্মসাৎকারী ও জালিয়াতদের সহায়ক শক্তির ভূমিকা পালন করছে। অনেক সময় মনে হচ্ছে সরকার তাদের কাছে জিম্মি। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন ও নীতিমালা এমনিতেই দুর্বল। সরকার আরও দুর্বল করে দিচ্ছে।

টিআইবির পক্ষে মো. জুলকারনাইন, অমিত সরকার ও মোহাম্মদ রফিকুল হাসান এই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেন। প্রতিবেদন উপস্থাপন করে মোহাম্মদ রফিকুল হাসান বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।

এর মধ্যে রয়েছে ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ ও ব্যাপক অনিয়মে জর্জরিত ব্যাংকিং খাত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠন; ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ও ৪৭ ধারা সংশোধন করে বাংলাদেশ ব্যাংককে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির পূর্ণ ক্ষমতা দেয়া; বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সদস্য, গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ ও অপসারণ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লিখিত নীতিমালা প্রণয়ন করা, যেখানে নিয়োগ অনুসন্ধান কমিটির গঠন, দায়িত্ব-কর্তব্য এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকবে; বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে তিনজন সরকারি কর্মকর্তার স্থলে বেসরকারি প্রতিনিধির (খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ যেমন আর্থিক খাত ও সুশাসন বিষয়ক) সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন