শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইনে মন্ত্রিসভার অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা, আইন, ২০২০-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বৈঠকে যুক্ত হন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আইনটি অনুমোদনের কথা জানান।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এর আগেও এটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য এসেছিল, তখন বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করে এটা অনুমোদন দেয়া হয়। লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামত পাওয়ার পর স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ থেকে এটা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চিকিৎসা শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ গবেষক তৈরির লক্ষ্যে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষা গবেষণা এবং স্নাতক পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষার মান সংরক্ষণ উন্নয়নে খুলনা বিভাগে একটা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এটা প্রতিষ্ঠিত হলে খুলনা অঞ্চলের মধ্যে যত মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট বা অন্য চিকিৎসা-সংক্রান্ত যেসব ইনস্টিটিউট থাকবে, সবই খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসবে। এর আগে রাজশাহী, চট্টগ্রাম সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল, এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একই রকম আইন করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

খসড়া আইনে মোট ৫৫টি ধারা রয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, এখতিয়ার এবং ক্ষমতার বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। পরিদর্শন আর্থিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ভূমিকা উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া, ক্ষমতা দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে আইনে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল, অনুষদ, বিভাগ, প্রয়োজনীয় কমিটি শৃঙ্খলা বোর্ড গঠন এবং তাদের ক্ষমতা দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে খসড়া আইনে। রাষ্ট্রপতি থাকবেন এর চ্যান্সেলর। সমাবর্তন বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান যেখানে রাষ্ট্রপতি থাকার কথা, সেখানে যদি উনি থাকতে না পারেন, তবে উনি যাকে নির্বাচন করে দেবেন উনি তার পক্ষে সেখানে চিফ হিসেবে থাকবেন। এখন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা পাঁচটি হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

মন্ত্রিসভায় চিকিৎসা ডিগ্রি (দ্য মেডিকেল ডিগ্রিস) (রহিতকরণ) আইন, ২০২০-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মেডিকেল কলেজের ডিগ্রি মান সবকিছু নির্ধারিত হতো দ্য মেডিকেল ডিগ্রি অ্যাক্ট, ১৯১৬ দিয়ে। ২০১০ সালে বিএমডিসি বা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ করা হলো। ১৯১৬ সালের আইনের যত প্রভিশন মডিফিকেশন প্রয়োজন ছিল সবই ২০১০-এর আইনে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে দ্য মেডিকেল ডিগ্রিস অ্যাক্ট, ১৯১৬-এর কোনো কার্যকারিতা নেই। সেজন্য এটা ওনারা (চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগ) রহিত করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা থাকলেও মাস্ক পরতে জনসাধারণের অনীহা থাকায় যেকোনো সময় মার্কেট-শপিংমলে অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন সেকেন্ড ওয়েভ যদি আসে, আমাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যদি সচেতন হই, তাহলে আমাদের জন্য এটা সুবিধা হবে। পাশাপাশি উনি নির্দেশনা দিয়েছেন অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ঠাণ্ডার প্রকোপটা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের লোকজনের নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর বা অ্যাজমাটিক সমস্যা থাকে, সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। এসবে আক্রান্ত হলে যেন চিকিৎসা করান। কভিডের সেকেন্ড ওয়েভ এলে মাঠ পর্যায়ে সেটাকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে সেটার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ে মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বান করেছি। আমরা বসে বিস্তারিত কর্মসূচি নেব। দ্বিতীয় ওয়েভ আসার আগে সরকার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, মাস্ক ব্যবহার করা দরকার। সবাই মিলে ঠিকভাবে মাস্ক যদি ব্যবহার না করি, তাহলে কিন্তু মুশকিল। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই তরফ থেকে যদি মাস্ক পরা থাকে, তাহলে ৯৫-৯৮ শতাংশ নিরাপদ। আর এক তরফ থেকে মাস্ক থাকলে ৬০-৬৫ শতাংশ নিরাপদ। মাস্ক যদি না পরে, তাহলে কিন্তু কোনো কিছুই সফল হবে না। এজন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সব মসজিদে জোহর মাগরিবের নামাজের সময় যেন ঘোষণা দেয়া হয় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, এটা রাষ্ট্রীয় কল্যাণকর নির্দেশ।

এদিকে কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো। তারা যখন মনে করবে তখনই খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন