স্বৈরশাসক সিসির পদত্যাগের দাবিতে মিসরজুড়ে বিক্ষোভ

বণিক বার্তা ডেস্ক

মিসরের স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির পদত্যাগের দাবিতে ফের রাস্তায় নেমেছে দেশটির হাজার হাজার মানুষ। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান সত্ত্বেও তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছে। খবর মিডল ইস্ট মনিটর আল জাজিরা।

মিসরের সুয়েজ, কাফর আল দাওয়ার, কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া আসওয়ানসহ বিভিন্ন শহরে রোববার বিক্ষোভ করেছে মিসরীয়রা। মিসরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল গিজায় বড় বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভে বাধা দেয়ায় গিজার কাদায়া শহরতলিতে পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। সময় স্লোগান দেয়, স্বৈরশাসক সিসির পতন হোক।

এদিনের বিক্ষোভের বেশকিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে আল-সিসির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ থামিয়ে দিতে গেলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তাজা বুলেট কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। ইট-পাটকেল ছুড়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। রাজধানীর কায়রোর দক্ষিণে আল-বাসাতিন জেলা পার্শ্ববর্তী আরো বেশকিছু এলাকায়ও বিক্ষোভ করেছে কয়েকশ মানুষ। এছাড়া কায়রোর কূটনৈতিক এলাকা মাদি উপশহর মাদিনাত নাসরে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরেই একটানা বিক্ষোভ চলছে উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে। নির্বাসিত নেতা বিলিয়নেয়ার মোহাম্মাদ আলীর ডাকে শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আগে থেকেই বিক্ষোভের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে দেশজুড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বিক্ষোভ থামাতে দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে সরকার। মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাজা বুলেট টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ছে নিরাপত্তা বাহিনী।

সেই সঙ্গে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। সরকারের দমন-পীড়ন পুলিশের ধরপাকড়ে উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, কায়রোর তাহরির স্কয়ার, আলেকজান্দ্রিয়া সুয়েজে বহু পুলিশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সারা দেশে বহু ক্রসিং এবং মহাসড়কগুলোতে সামরিক চেকপয়েন্টও বসানো হয়েছে।

কায়রোর কেন্দ্রস্থল এর আশপাশের ক্যাফেগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি উপেক্ষা করেই রাস্তায় নামে মানুষ। বিক্ষোভ দমনে আগে থেকেই ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ নিরাপত্তা বাহিনী। দুই দিনেই আটকের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। তবে আটকের বিষয়টি স্বীকার করছে না সিসি প্রশাসন। শুক্রবার রাতের বিক্ষোভ থেকে কতজনকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু জানাচ্ছে না মিসর সরকার। তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা গণমাধ্যম সূত্রে ২০০ জনেরও বেশি মানুষের আটকের খবর পাওয়া গেছে।

আটক বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ৩৪ জন নারীও রয়েছেন। শুধু কায়রো থেকেই ১৬০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে।

সিসির শাসনামলে মিসরের অর্থনীতিতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন চরমসীমায় দাঁড়িয়েছে। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে সরকারের ব্যর্থতা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন