শৈলকুপায় জমি আছে ঘর নেই প্রকল্প

নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই মেঝেতে ফাটল, ধসে পড়ছে দেয়াল

ফয়সাল আহমেদ ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের (আশ্রয়ণ- প্রকল্প) আওতায় গৃহ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহায়ক মিন্টুর নেতৃত্বে দায়সারাভাবে চলছে প্রকল্পের কাজ। হস্তান্তরের আগেই কয়েকটি ঘরের মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে, খসে পড়ছে পলেস্তারা। এরই মধ্যে গত শনিবার হাবিবপুর গ্রামে নির্মাণাধীন একটি ঘরে দেয়াল ধসে রাজন নামে এক নির্মাণ শ্রমিক আহত হন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে অফিস সহায়ক মিন্টু বিভিন্ন মহল গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আশ্রয়ণ- প্রকল্পের অধীনে ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৭টি ঘরের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটির প্রথম থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। যদিও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তবে যেসব ঘর হস্তান্তরের আগেই ফাটল কিংবা পলেস্তারা খসে পড়ছে, সেগুলো পুনরায় মেরামত করা হবে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হেল আল মাসুম জানান, তার অফিসে -সংক্রান্ত কোনো তালিকা নেই, সম্পূর্ণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এককভাবে দেখভাল করছেন। এমনকি কোন গ্রামের কোথায় ঘর হচ্ছে, সে বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য দেননি নির্বাহী কর্মকর্তা।

অন্যদিকে নিম্নমানের ইট, বালি স্বল্প পরিমাণ সিমেন্ট ব্যবহার করায় ঘরগুলো ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ঘরে উপরের ছাউনিতে হালকা কাঁচা মেহগনি কাঠের ফ্রেম রেলিং বাঁধুনিতে রডের পরিবর্তে দেয়া হচ্ছে জিআই তার। মনোহরপুর, নাকোল, দিগনগর, কাঁচেরকোলসহ বিভিন্ন এলাকায় হতদরিদ্রদের জন্য নির্মিত এসব ঘর দিনদিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অনেক ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে, কিছু ঘরের পলেস্তারা খসে পড়ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গরিবের এসব ঘর পেতে একটি দালাল সিন্ডিকেট কাজ করেছে। অনেক এলাকায় ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিয়ে পাকা ঘরের তালিকায় নাম লেখাতে হয়েছে। তবে মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ঘর হারানোর ভয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চান না ভুক্তভোগীরা।

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন জানান, ইউএনও প্রকল্পের সভাপতি এবং পিআইও সদস্য সচিব হলেও যতটুকু জানা গেছে, অফিস সহকারী মিন্টুর মাধ্যমে ইউএনওর তত্ত্বাবধানে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, নির্মাণ শ্রমিকদের অব্যবস্থাপনার কারণে হাবিবপুর গ্রামে দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাকা ঘরগুলো সরকারি বিধিমোতাবেক নির্মাণ করা হচ্ছে। নিম্নমানের ইট, সিমেন্ট, বালি ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে যান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন