রংপুরে এক বাড়িতে দুই বোন খুনের নেপথ্য কাহিনি জানাল পুলিশ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রংপুর

রংপুর নগরীর মধ্য গনেশপুরে  দুই বোনকে হত্যার ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ঘাতক মাহফুজুর রহমান রিফাত। 

আজ রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আজ রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন।

তিনি জানান, মধ্য গনেশপুর এলাকার মোকছেদুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মীম (১৭) ও মমিনুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া (১৪)। তারা সম্পর্কে চাচাতো বোন। ঘাতক রিফাত নগরীর মধ্য বাবুখাঁ এলাকার এমদাদুল ইসলামের ছেলে। রিফাতের সঙ্গে মীমের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি মনোমালিন্য হয়। 

ঘটনার দিন (১৭ সেপ্টেম্বর) দেখা করতে চাইলে মীম রিফাতকে তার চাচার বাসায় আসতে বলে। কারণ ওই দিনই স্ত্রীকে আনতে মমিনুল ইসলাম মেয়ে জান্নাতুল মাওয়াকে বাড়িতে রেখে শ্বশুরবাড়ি কুড়িগ্রাম যান। আর জান্নাতুল মাওয়া তার চাচাতো বোন মীমকে রাতে একসঙ্গে থাকার জন্য ডেকে নেয়।

মীম তার চাচার বাড়িতে আসতে বললে ওইদিন বিকালে রিফাত তার বন্ধু আরিফুল ইসলামের বাড়ি লাহিড়ীরহাটে যায় এবং তার সঙ্গে পরামর্শ করে আরিফুলের ফোন ও অন্য একটি সিমকার্ড নিয়ে মীমের সঙ্গে যোগাযোগ করে। রিফাত ওই রাতে মীমের চাচার বাড়িতে যায় এবং তাদের মধ্যে শারীরিক মেলামেশা হয়। মীম তার ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে কেন অন্য বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রিফাত উত্তেজিত হয়ে তাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। বেরিয়ে যাওয়ার সময় জান্নাতুল মাওয়া টের পেয়ে গেলে তাকেও হত্যার পর আয়নার ভাঙা কাঁচ দিয়ে গলায় আঘাত করে মেঝেতে ফেলে রাখে । 

ওই রাতেই বন্ধু আরিফুলের বাড়িতে গিয়ে ফোন ও সিমকার্ড পরিবর্তন করে সেখানে রাত যাপন শেষে পরের দিন বাড়িতে ফিরে আসে রিফাত।

পরদিন শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মীমের মা ঘরের দরজা খুলে ভেতরে দুই মেয়ের মরদেহ পড়তে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

এ ঘটনায় শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রংপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কোতয়ালি থানায় নিহত জান্নাতুল মাওয়ার বাবা মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে  হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহসহ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রিফাতকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরিফুলের কাছ থেকে ভিকটিমের ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে আজ বিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন