মাস্ক, শিল্ড আর ক্যাপ পরেই চিকিৎসা দিয়েছেন তিনি!

বণিক বার্তা ডেস্ক

দিল্লির রাজীব গান্ধী সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অজিত জৈন পিপিইর সবগুলো গিয়ার ব্যবহার করেন না। কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে তার সহকর্মীরা একটি কাভারড স্যুট, সার্জিক্যাল ক্যাপ, ফেসশিল্ড, এন-৯৫ মাস্ক, জুতার কাভার গ্লাভস পরে থাকেন। তবে তিনি কেবল তিন স্তরের একটি স্নাগ এন-৯৫ মাস্ক, ফেসশিল্ড একটি সার্জিক্যাল ক্যাপ ব্যবহার করেন।

হাসপাতালটির প্রধান কার্ডিওলজিস্ট ডা. জৈন বলেন, এর মানে এই নয় যে আমি উদাসীন। আমি একটি নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমার অনুশীলনটি অন্যদের অনুসরণ করতেও উৎসাহ দিচ্ছি না।

কভিড-১৯ মহামারীতে চিকিৎসক সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত মানসম্পন্ন পর্যাপ্তসংখ্যক পিপিইর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সামনে এনেছে, যা মহামারী মোকাবেলায় সামনের সারিতে থাকা ব্যক্তিদের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হিসেবে দেখা হয়। এক্ষেত্রে ডা. জৈন নিজের পছন্দ অনুযায়ী পিপিই স্যুটটি ছেড়ে দিয়েছেন। তার সিদ্ধান্তটির পেছনে তিনটি কারণ ছিলদীর্ঘ সময় ধরে সম্পূর্ণ পিপিই পরার পর মাথা ঘোরার অভিজ্ঞতা, সম্পূর্ণ পিপিইর ব্যয় কভিড ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বিজ্ঞানের যুক্তি।

তিনি বলেন, আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে অনেক বিচার-বিশ্লেষণ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা যা জানি, ভাইরাসটি ড্রপলেটের মাধ্যমে নাক মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। দেহের দুটি অংশ যদি ভালোভাবে আটকানো থাকে এবং আপনি যদি নাক মুখ স্পর্শ না করার বিষয়ে সতর্ক থাকেন, তবে ভাইরাসটি কীভাবে প্রবেশ করবে?

ডা. জৈন বলেন, কিছু পিপিই অনুষঙ্গ কমানোর কারণে আমি আরো বেশি সচেতন হয়েছি। আমি কখনই আমার মুখ স্পর্শ করি না এবং আমি আমার রোগী দেখা শেষে গোসল করে ফেলি।

গত ১৬ জুন থেকে জৈন সম্পূর্ণ পিপিই পরা বাদ দিয়েছেন। এরপর আড়াই মাসে তিনি অন্তত এক হাজার রোগীর চিকিৎসা দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনি পাঁচবার কভিড-১৯ পরীক্ষা করেছেন। তার মধ্যে দুবার আরটি-পিসিআর, দুবার র্যাপিড অ্যান্টিজেন এবং একবার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা। তার সব ফলই কভিড-১৯ নেগেটিভ এসেছিল।

কভিড ওয়ার্ড বা আইসিইউর রাউন্ড শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডা. জৈন নিকটবর্তী গোসল ঘরে চলে গেলেন। সেখানে তিনি সাড়ে মিনিট ধরে পুরো শরীর ধুয়ে ফেললেন। তার প্রথম রাউন্ডটি ছিল সাড়ে তিন মিনিটের জন্য, এরপর তিনি হাত-মুখ ধুয়ে নিলেন। তারপর আরো দুই রাউন্ডের জন্য তিনি দুবার একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন।

তিনি বলেন, সম্পূর্ণ পিপিই ছাড়া রোগীরা আমাকে দেখতে পারে এবং তারা আরো স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আপনি যদি ভাইরাসটি থেকে নিরাপদে থাকতে চান, তবে সতর্কতা ছাড়া উপায় নেই। পিপিই মৌলিক সতর্কতার বিকল্প হতে পারে না।

দ্য প্রিন্ট

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন