আ.লীগের জেলা ও সহযোগী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

স্বজনপ্রীতি খতিয়ে দেখা হবে : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলা শাখা সহযোগী সংগঠনের যেসব পূর্ণাঙ্গ কমিটি দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে তাতে স্বজনপ্রীতি নিজেদের লোক দিয়ে কমিটি দেয়া হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। করোনার জন্য বিলম্বিত হয়েছে কথা সত্য। তবে এখন যেসব কমিটি জমা হয়েছে, সেগুলো কিন্তু আমরা হঠাৎ করে দিয়ে দেব না। যাচাই-বাছাই করে পরীক্ষিত নেতাকর্মী আছে কিনা, তা দেখা হবে। স্বজনপ্রীতি নিজেদের লোক দিয়ে কমিটি দেয়া হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা বাদ পড়া কোনোভাবেই হতে দেয়া যাবে না। সবাইকে বলব সামনে যে কমিটিগুলো গঠন করা হবে, সেগুলোতে অবিতর্কিত ত্যাগীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

গতকাল ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ডব্লিউবিবিআইপি) অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন।

সেতুমন্ত্রী জানান, জাইকার অর্থায়নে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে ২৩টি জেলায় ছোট মাঝারি ৬১টি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ব্যয় ধরা হয়েছে হাজার কোটি টাকা। রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল গোপালগঞ্জ জোনের আওতায় সেতুগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। একইভাবে নতুনভাবে আর সেতু নির্মাণে জন্য প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে সেতুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১। এরই মধ্যে বিভিন্ন জোনের আওতাধীন সড়কের ২৫টি সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ৩৫টি সেতুর নির্মাণের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। নতুন অন্তর্ভুক্ত ২২টি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে চুক্তি সই হয়েছে। নতুন সেতুগুলোর কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।

তিনি বলেন, আগের ৬১টি সেতু নির্মাণের প্রকল্প বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়েছে মাত্র ২৫টির কাজ। এজন্য প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের আরো যত্নবান হতে হবে। আমরা দেখেছি জাইকার সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর কাজ শুরু হতে দেরি হলেও সময়মতো কিংবা সময়ের আগেই শেষ হয় কোয়ালিটি কাজ হয়। কেএমজি প্রকল্প এর অন্যতম উদাহরণ। নানা বাধাবিপত্তি থাকা সত্ত্বেও সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। কিন্তু প্রকল্পের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা দেখছি। তবে একটা বিষয় প্রশংসনীয় বিষয় হলো প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষে দেখা যাচ্ছে প্রকল্প সাহায্যের ২৮৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে কেনাকাটা যখন পত্রপত্রিকার শিরোনাম হচ্ছে, তখন অর্থ সাশ্রয়ের এমন উদাহরণ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এর আগে কেএমজি প্রকল্পের হাজার কোটি টাকার বেশি সাশ্রয় হয়েছিল। মনে রাখতে হবে অর্থ সাশ্রয়ের চেয়েও বেশি হচ্ছে কাজের গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা। সিংহভাগ প্রকল্পের কাজ শুরু হতেই দেরি হয়ে যায়। তা সময়মতো শেষ করা যায় না। পরিকল্পনা করে প্রাথমিক কাজগুলো এগিয়ে নিতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হলে সরকারের আর্থিক প্রাক্কলন, মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হয়।

অনেক আঞ্চলিক এবং জেলা সড়ক নির্মাণকাজ শেষে সাইন-সিগন্যাল থাকে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে পিএমপির আওতায় বাস্তবায়িত প্রকল্পে সড়ক-মহাসড়কের সাইন সিগন্যাল স্থাপনের বিষয়গুলো যুক্ত থাকে। কিন্তু বাস্তবে সবক্ষেত্রে কী দেখা যায়? অনেক আঞ্চলিক জেলা সড়ক নির্মাণকাজ শেষে সাইন-সিগন্যাল থাকে না। আবার কোথাও কোথাও ছয় মাস যেতে না যেতে সড়ক বিভাজকের রঙ বিবর্ণ হয়ে যায়। বিষয়ে সচিব প্রধান প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, কোনো কোনো কাগজে দেখলাম দুর্নীতিবিরোধী অভিযান বন্ধ হয়ে গেছে। কথা মোটেও সত্য নয়। দুর্নীতি, অনিয়ম অপকর্মবিরোধী সরকারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।  এখন যেকোনো অবস্থায় যেখানেই দুর্নীতি, অপকর্ম সেখানেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিষয়টি তদারক করছেন। অভিযান চলবে। কেউ অপকর্ম করে রেহাই পাবেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন