আলোকপাত

জ্বালানি দুর্নীতি ভোক্তার মৃত্যুফাঁদ

ড. এম. শামসুল আলম

নাইন ইলেভেনে আমেরিকায় টুইন টাওয়ারে বোমা হামলা, ২১ আগস্ট বাংলাদেশে গ্রেনেড হামলাএমন সব হামলা বিশ্ববাসীকে চমকে দেয়। এসব হামলার লক্ষ্য ছিল আমেরিকাকে এবং বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আঘাত করা। কিন্তু তার শিকার হয়ে বহু মানুষকে প্রাণ দিতে হয়। তাই এসব হামলাকে কেবল সন্ত্রাসী হামলা বলা হয় না, হত্যাকাণ্ডও বলা হয়। দুর্নীতিমুক্ত না হওয়ায় তিতাসের গ্যাস এখন মৃত্যুফাঁদ। ফাঁদের লক্ষ্য দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন নিশ্চিত করা। কিন্তু তা এখন ভোক্তার জন্য মৃত্যুফাঁদ। ফাঁদে নিহত ব্যক্তি-ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডের শিকার। তাই গত সেপ্টেম্বর মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে নিহত ভোক্তারা হত্যাকাণ্ডের শিকার। সরকারের কাছে হত্যাকাণ্ড হিসেবে ঘটনার বিচারের দাবি ভোক্তাদের। সেই দাবিতেই লেখা। 

. সরকারি মালিকানাধীন গ্যাস সঞ্চালন বিতরণ কোম্পানি তিতাসের তথ্যসূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা খানপুর তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে সেপ্টেম্বর আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মারা যায় ৩১ জন। আরো সাতজনের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। মসজিদের সম্পত্তিরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তিতাস বলেছে, তাতে তিতাসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। বক্তব্যে তিতাস আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে, গ্যাসলাইনের ত্রুটি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেজন্য আটজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশের মামলায় তিতাসসহ মসজিদ কমিটি, বিদ্যুৎ সরবরাহ ভবন নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো অভিযুক্ত।

. ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস ডিপিডিসি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জ্বালানি বিভাগ, সংস্থা বিতরণ কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের গত সেপ্টেম্বরের সভায় বলেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে সব অবৈধ লাইন অপসারণ করতে হবে। অপরিকল্পিত এলাকার বাইরে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংযোগ দেয়া যাবে না। অপকর্মের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকা হচ্ছে, শিগগির ব্যবস্থা নেয়া হবে। কর্মকর্তাদের দুর্নীতি অসদাচরণের জন্যই সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ইভিসি মিটার প্রি-পেইড মিটার সব গ্রাহকের জন্য স্থাপন করতে হবে।

. কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলেছে, দুর্নীতি, অদক্ষতা অযোগ্যতার কারণে বিদ্যুৎ জ্বালানি সরবরাহ ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। ফলে একদিকে অন্যায়ভাবে অধিক মূল্যে জনগণকে বিদ্যুৎ জ্বালানি কিনতে হচ্ছে, অন্যদিকে ক্রমাগত বর্ধিত ভতুর্কি মেটাতে করও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার এমন সব বিস্ফোরণে মানুষ হরহামেশায় হতাহত হচ্ছে। এসব অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ক্যাবের ভিন্ন মত নেই। তবে অভিযোগের তালিকায় অভিযুক্তদের নাম এবং তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থার ব্যাপারে ভিন্ন মত আছে। সরকারের সক্ষমতার ব্যাপারেও সংশয় আছে। 

. বিস্ফোরণ অভিযোগ সম্পর্কে জ্বালানি বিভাগ বলছে, দোষ কেবল তিতাসের নয়, মসজিদ নির্মাণ বৈধভাবে হয়নি। ফলে মসজিদ কমিটি, রাজুক, সিটি করপোরেশন, বিদ্যুৎ, ইউটিলিটিএরা সবাই দায়ী। তবে বোঝা যায়, পাইপলাইন থেকে নির্গত গ্যাস মসজিদের ভেতরে ট্রাপ্ট হয় এবং দাহ্য পদার্থ হিসেবে ওই গ্যাসের পরিমাণ কত বেশি হলে তাতে এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গ্যাস গন্ধযুক্ত না হওয়ায় মসজিদে এমন ভয়াবহ বিপদের উপস্থিতি বোঝা যায়নি। ক্যাবের বিবেচনায় মানহীন বৈধতাবিহীন লাইনে অনিরাপদ (গন্ধহীন) গ্যাস সরবরাহ করার অপরাধে কেবল তিতাসই অপরাধী। মসজিদ নির্মাণের বৈধতার প্রশ্নে অপরাধকে খাটো করে দেখা যায় না। অন্যদের অপরাধও অপরাধের গুরুত্ব কমায় না। ট্রাপ্ট গ্যাসে যেভাবেই আগুন ধরুক না কেন, তা অপরাধের মাত্রা নির্ধারণে কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। বিবেচ্য বিষয় হলো, অপরাধের প্রকৃতি কী এবং কারা অপরাধী।

. বলা হচ্ছে, অপরাধের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি বিভাগ পেট্রোবাংলা উভয়ই দায়ী। ক্যাবের মতে, তারা বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের ডাউন স্ট্রিম রেগুলেটর বিইআরসিকে নিষ্ক্রিয় অকার্যকর করে তাদের অপরাধের মাত্রা বাড়িয়েছে। তারা উভয়ই বিইআরসির আইন আদেশ লঙ্ঘন করে বিইআরসির আইন মতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে।

. ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। তিতাসের মাঠ পর্যায়ের আটজনকে বিভাগীয় কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। ফৌজদারি আদালতে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় অপরাধের প্রকৃতি এবং অপরাধী চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি রয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতা বলে, সে মামলা বিভাগীয় তদন্ত দ্বারা প্রভাবিত হবে। বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবার দগ্ধদের প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ চেয়ে তিতাস, জ্বালানি বিভাগসহ ১৩ জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। ফলে প্রত্যেকের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ হয়েছে।

. ফায়ার সার্ভিসের তথ্যে দেখা যায়, রাজধানীর এক-তৃতীয়াংশ অগ্নিকাণ্ড ঘটে গ্যাস পাইপলাইনের লিকেজ থেকে। তাদের হিসাব মতে, গত এক বছরে গ্যাস থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে এক হাজারটি। ডিবিসি টেলিভিশন সংবাদে বলা হয়, তিতাসের এলাকায় ১০ লাখ গ্যাস রাইজারের মধ্যে প্রায় ৭০ হাজারেই গ্যাস লিকেজ হয়। তাছাড়া ঢাকার সাত হাজার কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইনের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার লাইনই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব লাইন ২০-৪০ বছরের পুরনো। লাইন রক্ষণাবেক্ষণ পুরনো লাইন প্রতিস্থাপন এক বিচ্ছিন্ন ঘটনা। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা আশেপাশে ২৪৫ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস পাইপলাইনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জেই রয়েছে ১৭৯ কিলোমিটার। নতুন সংযোগ বন্ধ থাকলেও সাত বছরে অবৈধ সংযোগ হয় ১০ লাখ। ঘুষ লাগে সংযোগপ্রতি ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা। ২০১৮ সালে তিতাস পরিচালনা বোর্ড সাত লাখ সংযোগকে বৈধতা দেয়। দশমিক ৬৬ লাখ সংযোগকে বৈধতা না দিলেও তথ্যভাণ্ডারে যুক্ত করে নেয়। এমন সব অবৈধ গ্যাসলাইন সম্প্রসারণ সংযোগ মানহীন অনিরাপদ গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করেছে। সর্বোপরি বিস্ফোরণ অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। ভোক্তাদের মতে, তিতাস বোর্ডই এমন অবস্থার জন্য দায়ী।

. বিটিএমএর সভায় ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল শিল্প বাণিজ্যিক সংযোগের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয়, গ্যাস সংযোগ পেতে তিতাসকে বাড়তি কয়েক কোটি টাকা দিতে হয়। তিতাসের লোকজন এতটাই সংঘবদ্ধ যে তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করা যায় না। ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, তিতাসে কেজি মেপে ঘুষ লেনদেন হয়। খবরে নতুন একটি শিল্প সংযোগে দেড় কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ পায়। দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিবেদনেও তিতাসের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সব দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পায়। তবু কোনো প্রতিকার হয়নি।

১০. ২০০৯ সালের ২১ জুলাই সরকার শিল্প, বাণিজ্যিক, আবাসিকসহ সব প্রকার নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখে। অথচ অবৈধ সংযোগ বেড়ে যায়। তদন্তে তিতাসের তখনকার এমডি অভিযুক্ত হন। ২০১১ সালের জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিল্প-বাণিজ্যে নতুন সংযোগ লোড বৃদ্ধির জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। ২০১৯ সালের ২১ মে কমিটি বাতিল করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সংযোগ লোড বৃদ্ধিতে সময়েও ব্যাপক ঘুষ-দুর্নীতি হয়েছে। ভোক্তাদের দৃষ্টিতে ব্যাপারে তিতাসের আগের এমডির মতোই জ্বালানি উপদেষ্টাও অভিযুক্ত। পরে উপদেষ্টার মেয়াদ বাড়ে, এমডি বিইআরসির সদস্য হন।

১১. তিতাসের বার্ষিক প্রতিবেদনে সিস্টেম লসের হার ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দশমিক ১৭ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দশমিক ৭১ দেখানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্পে গ্যাস খরচ না হলেও ন্যূনতম বিল আদায় করা হতো, তা রহিত হওয়ায় সিস্টেম লসের হার বেড়েছে। সিস্টেম লসের সংজ্ঞামতে ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া সিস্টেম লসের যে হার বলা হচ্ছে, তাও যৌক্তিক সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যে পরিমাণ গ্যাস অবৈধ সংযোগ লাইনের মাধ্যমে চুরি হয়, ৭০ হাজার লিকেজের মাধ্যমে বাতাসে ছড়ায়, তাই সিস্টেম লস। আবার মিটারবিহীন চুলায় মাসে যে পরিমাণ গ্যাস দেয়া হয়, তা অপেক্ষা পরিমাণ বেশি দেখানো এবং প্রেসারের তারতম্য উপেক্ষা করে ভোক্তাকে পরিমাণে গ্যাস কম দিয়ে বেশি দেখানো সিস্টেম গেইন। এই লস গেইন সমন্বয় ছাড়াই বর্ণিত সিস্টেম লসের হার কারচুপি দুর্নীতির সূচক হিসেবে ভোক্তারা গণ্য করে। তিতাস বোর্ড তা করে না।

১২. জ্বালানি বিভাগ পেট্রোবাংলাকে ২০২০ সালের ১৯ ২০ জুলাই প্রদত্ত বিইআরসির দুটি পত্রে দেখা যায়, মিটারবিহীন চুলায় কম গ্যাস দিয়ে ভোক্তার কাছ থেকে বেশি পরিমাণ গ্যাসের দাম নেয়া হয়। তাতে বছরে হাজার ৯০০ কোটি টাকা ভোক্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায় হয়। তাছাড়া ইভিসি মিটারবিহীন শিল্প বাণিজ্যিক ভোক্তা পরিমাণে গ্যাস কম পায়, দাম দেয় বেশি পরিমাণের। বিইআরসির গণশুনানিতে পাওয়া তথ্যমতে, তাতে ভোক্তাকে বাড়তি অর্থ দিতে হয় প্রায় হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এসব অর্থ আত্মসাৎ না হলেও হিসাববহির্ভূত ওইসব চুরি করা গ্যাস লিকেজ হওয়া গ্যাস সমন্বয় করে সিস্টেম লস কম দেখানো হয়। অবৈধ সংযোগ গ্যাস চুরি সিংহভাগই হয় তিতাসে। তা তিতাস বোর্ড, পেট্রোবাংলা জ্বালানি বিভাগ অনুমোদিত।

১৩. ২০১৫ সালে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির আদেশে অবৈধ সংযোগ পাইপলাইন (নেটওয়ার্ক) বিচ্ছিন্ন এবং আবাসিকে প্রি-পেইড, শিল্প বাণিজ্যে ইভিসি মিটার স্থাপনের জন্য বিইআরসি আদেশ দেয়। ২০১৭ ২০১৯ সালে বিইআরসি আবারো ওই একই আদেশ দেয়। এসব আদেশ প্রতিপালিত হয়নি। মিটার স্থাপনের অগ্রগতি হতাশাজনক। ওই পত্র দুটি ইভিসি মিটার স্থাপন গাইডলাইন এবং প্রি-পেইড/স্মার্ট মিটার ক্রয় স্থাপন নীতিমালা সম্পর্কিত। পত্র দুটির বক্তব্যে প্রতীয়মান হয়, জ্বালানি বিভাগ একক বিবেচনায় গাইডলাইন নীতিমালা উভয় তৈরি করে। তাতে অংশীজনের মতামত নেয়নি। তদুপরি ওই গাইডলাইন নীতিমালা ভোক্তাস্বার্থ এবং অধিকার সুরক্ষার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ এবং বিইআরসির আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ভোক্তাদের মতে, এসবের দ্বারা জ্বালানি বিভাগ বিইআরসির আদেশ প্রতিপালনে কৌশলে বাধা তৈরি করেছে। তাতে মিটার স্থাপনে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হওয়ায় গ্যাস চুরি অব্যাহত আছে। ফলে অবৈধ সংযোগ অবৈধ পাইপলাইনে চুরি করা গ্যাস বিক্রির অবৈধ ব্যবসাও অব্যাহত আছে। এতে প্রমাণিত হয়, জ্বালানি বিভাগ এই দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত। জ্বালানি সচিব তিতাস বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ায় এই পরিণতি।

১৪. ১৯৯৩ সালের ২২৭ নং এসআরও মতে, আইওসির গ্যাস শুল্ক-ভ্যাটমুক্ত। অথচ পেট্রোবাংলা ভোক্তাদের কাছ থেকে তা আদায় করেছে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু দেশী গ্যাসের ওপর আদায়কৃত শুল্ক-ভ্যাট এনবিআরে জমা দিলেও আইওসি গ্যাসের ওপর আদায়কৃত শুল্ক-ভ্যাট জমা দেয়নি। এনবিআর তা দাবি করেছে। ভোক্তারাও ব্যাপারে পেট্রোবাংলার বিরুদ্ধে প্রতারণা দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন এবং ওই অর্থ ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের মূল্যহারে সমন্বয় করার দাবি করেছেন। পেট্রোবাংলা অর্থের হিসাব যথাযথভাবে দিতে পারেনি। হিসাবে যথেষ্ট অস্বচ্ছতা রয়েছে। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। জ্বালানি বিভাগের কারণে বিইআরসি অভিযোগ নিষ্পত্তিতে নিষ্ক্রিয়।

১৫. আইওসির গ্যাসের অনুপাত গ্যাসের সরবরাহ ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে ভোক্তা বিলের সঙ্গে বাড়তি অর্থ দিয়ে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল গঠন করে। তবে অর্থ শুল্ক-ভ্যাটমুক্ত হতে হবে এবং দেশীয় কোম্পানির গ্যাস অনুসন্ধান উৎপাদনে তহবিলের অর্থ অনুদান হিসেবে বিনিয়োগ হতে হবে। ভোক্তাদের আরোপিত এসব শর্তে বিআরসির আদেশে ২০০৯ সালে তহবিল গঠিত হয়। ২০১১ সালে অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে তহবিলের অর্থ ব্যয়ের নীতিমালা বিইআরসি প্রণয়ন করে। তা উপেক্ষা করে পেট্রোবাংলা জ্বালানি বিভাগ যোগসাজশে তহবিল দখলে নেয়। ২০১২ সালে বিইআরসির আইন আদেশ লঙ্ঘন করে স্বীয় বিবেচনায় নতুনভাবে নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং তহবিলের অর্থ অনুদানের পরিবর্তে সুদে আনসলিসিটেডভাবে নিয়োজিত বিদেশী ঠিকাদারদের বিল পরিশোধে ব্যয় করে। তাতে প্রতি ইউনিট গ্যাস উৎপাদনে বাপেক্সের ব্যয় হয় দশমিক শূন্য টাকা। অথচ আইওসির গ্যাস ক্রয় মূল্যহার দশমিক ৫৫ টাকা। উৎপাদন ছাড়াও শর্ত ভঙ্গ করে তহবিলের অর্থ নানাভাবে ব্যয় করে পেট্রোবাংলা জ্বালানি বিভাগ। ফলে তহবিল প্রহসনের শিকার। দেশীয় কোম্পানির গ্যাস উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিতে আইওসির গ্যাসের অনুপাত গ্যাস সরবরাহ ব্যয় হ্রাস পায়নি। বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবল বিতরণেই নয়, গ্যাস অনুসন্ধান উৎপাদনেও সংশ্লিষ্টদের বিকল্প অর্থ উপার্জনের কৌশল হিসেবে পেট্রোবাংলা জ্বালানি বিভাগ এভাবে দুর্নীতির ফাঁদ তৈরি করে এবং ভোক্তা প্রতারিত হন। ভোক্তাদের মতে, পেট্রোবাংলা জ্বালানি বিভাগ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত, ঘটনা তারই প্রমাণ।

১৬. ১০ সেপ্টেম্বর ৭১ টেলিভিশনের একাত্তর সংযোগ অনুষ্ঠানে জ্বালানি সচিব বলেন, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে, যারা দোষী তাদের বিচার হবে, দুই লক্ষাধিক অবৈধ সংযোগ রয়েছে, ৭০ শতাংশ গ্যাসলাইন ঝুঁকিপূর্ণ, এসব লাইন পরিবর্তন করা হবে, সিস্টেম লসের নামে এখন যা হচ্ছে, তা বন্ধ হবে, হতাহতদের প্রত্যেক পরিবারকে হাইকোর্ট লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেয়ায় বীমা ব্যবস্থা থেকে তিতাস ক্ষতিপূরণ দেবে... পরিশেষে তিনি বলেন, এখন তারা তদন্ত কমিটির রিপোর্টের অপেক্ষায় আছেন।

১৭. এসব প্রতিশ্রুতির প্রতিক্রিয়ায় ভোক্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ বলছে, করোনা ভ্যাকসিন সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর পরীক্ষা করা হোক। ভ্যাকসিন ভালো হলে তারা বেঁচে যাবেন, আর যদি মারা যান, দেশ বাঁচবে। এদের কেউ না কেউ আমাদের ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন। তাদের সম্পর্কে এই যদি মানুষের উপলব্ধি হয়, তাহলে সত্যি তা বড় উদ্বেগের বিষয়। একজন সচিবের মতো কর্মকর্তাকে তৈরি করতে দেশের কত সম্পদ ব্যয় হয়, সেই তাদেরই সম্পর্কে মানুষের এমন ধারণা! অভিযুক্তদের বিচার এখন যে তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায়, সেই তদন্ত করছে তিতাস। অর্থাৎ অভিযুক্ত নিজেই নিজের অভিযোগ তদন্ত করছে এবং নিজেই নিজের বিচারও করবে। তদন্ত বিচার কীভাবে স্বার্থসংঘাতমুক্ত হয়!

১৮. ওই প্রতিক্রিয়ায় আরো বলা হয়, বিইআরসি আইন মতে ইউটিলিটি তথা তিতাসের বিরুদ্ধে ভোক্তার অভিযোগ নিষ্পত্তির এখতিয়ার বিইআরসির। ওই আইন মতে, বিদ্যুৎ জ্বালানি খাত নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে যে স্বাধীন নিরপেক্ষ বিইআরসি, সেই বিইআরসিকে তিতাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তের জন্য জ্বালানি বিভাগ থেকে চিঠি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবে সচিব ইতিবাচক সাড়া দেননি। এদের সম্পর্কে মানুষের যে বিরূপ ধারণা, তা কি অমূলক বলা যায়?

১৯. জ্বালানি বিভাগের সচিব হওয়ায় তিনি একদিকে জ্বালানি খাতের আপস্ট্রিম রেগুলেটর জ্বালানি বিভাগের নির্বাহী প্রধান, অন্যদিকে পেট্রোবাংলার সাবসিডিয়ারি কোম্পানি তিতাসের পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান। তাহলে তিনি কোন ক্ষমতাবলে তিতাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন? এখানে কি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট (চেয়ারম্যান পক্ষ, অথচ সচিব নিরপেক্ষ) বিবেচ্য বিষয় নয়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন বিবেচনা ইংল্যান্ড-আমেরিকায় চলে, বাংলাদেশে চলে না। তিনি ব্যবস্থা নেবেন সচিব হিসেবে নয়, চেয়ারম্যান হিসেবে তিতাসের বোর্ডের মাধ্যমে। সচিবের বক্তব্যের জবাবে বলা হয়, তিতাসের সব অপরাধের দায় পরিচালনা বোর্ডের। বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পক্ষ বিধায় অভিযুক্ত। ফলে বোর্ড কর্তৃক গৃহীত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণযোগ্য হবে না, হবে প্রহসন। এই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের কারণে বিদ্যুৎ জ্বালানি দুর্নীতিমুক্ত নয়। তাই বিদ্যুৎ জ্বালানি ইউটিলিটির বোর্ডে বিদ্যুৎ জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তাদের রাখতে ভোক্তাদের আপত্তি।

২০. একাত্তর সংযোগ অনুষ্ঠানে ভোক্তাদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে বলা হয়, অর্থ উপার্জনের বিকল্প কৌশল হিসেবে গ্যাস সঞ্চালন বিতরণে তিতাস পরিকল্পিতভাবে দুর্নীতির ফাঁদে ভোক্তাদের আবদ্ধ করে রেখেছে। মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে ভোক্তাদের নিহত হওয়ার ঘটনা তারই করুণ পরিণতি। তাই ভোক্তারা ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে ঘোষণা চান। যেহেতু দুর্নীতি জনগণের জীবনরক্ষার অধিকারের মতো মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে, সেহেতু বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত সব অপরাধীকে যুদ্ধাপরাধীদের মতো জ্বালানি অপরাধী হিসেবে ভোক্তারা বিচার চান। ক্ষতি দুর্ঘটনাজনিত হলে তা পূরণ বীমার অর্থে হয়। আলোচ্য ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের দায় বীমার নয়, অপরাধীর।

২১. আইওসি সান্তোষ পিএসসির আওতায় অনুসন্ধানে মগনামায় গ্যাস পায়নি এবং মেয়াদ শেষ হওয়ায় সে পিএসসি অবসান হয়। পরবর্তী সময়ে সান্তোষ ওই পিএসসির আওতায় বাপেক্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মগনামায় পুনরায় গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য অযাচিত প্রস্তাব দেয়। বাপেক্সের কারিগরি কমিটি প্রস্তাবটি মূল্যায়ন করে এবং প্রস্তাবিত অনুসন্ধান আর্থিকভাবে লাভজনক হবে না বলে উদ্যোগে আপত্তি দেয়। বাপেক্স বোর্ড সে আপত্তি উপেক্ষা করে অবৈধ প্রস্তাব গ্রহণ করে। জ্বালানি বিভাগের অনুমোদন নেয়। বাপেক্স বোর্ডের চেয়ারম্যান জ্বালানি সচিব। ওই পিএসসির আওতায় সম্পূরক চুক্তি হয়। সান্তোষ মগনামা- অনুসন্ধান কূপ খনন করে গ্যাস পায়নি। অথচ তাতে ২৬২ কোটি টাকা তছরুপ হয়। এখানেও কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট রয়েছে। তা বিবেচনায় নিলে তছরুপ/দুর্নীতি এড়ানো যেত।

২২. বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানি ১০ শতাংশ ময়েশ্চারে কয়লা কেনে। বিল দেয় শতাংশ ময়েশ্চারে। আবার বিক্রি করে ১০ শতাংশ ময়েশ্চারে। বাস্তবে ময়েশ্চার আরো বেশি দিয়ে ভোক্তাকে পরিমাণে কয়লা কম দেয়। এভাবে কয়লা কেনায় প্রায় মোট সাত লাখ টন হিসাবের বাইরে রেখে সরকারকে এবং বেচায় মাপে প্রায় পাঁচ লাখ টন কম দিয়ে ভোক্তাকে ঠকিয়েছে। এসব তথ্য ক্যাবের তদন্তে উঠে আসে। অথচ জ্বালানি বিভাগ বা পেট্রোবাংলা কয়লা চুরি/আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করেনি। তারা কয়লা হ্যান্ডেলিংয়ে সিস্টেমলস নিরূপণে কারিগরি কমিটি গঠন করে। সে কমিটির সুপারিশ মতে, কয়লা ঘাটতি চুরির জন্য নয়, সিস্টেম লসের জন্যএমন প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করে জ্বালানি বিভাগ পেট্রোবাংলা এত বড় দুর্নীতি আড়াল করার চেষ্টায় আছে।

২৩. ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, জ্বালানি তেলের বিপণন প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) ব্যাংক হিসাব থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করে গুডনাইট পাওয়ার পিরামিড এক্সিম নামের দুটি ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির হিসাবে রাখা হয়েছে। এসএওসিএল আধা সরকারি। ৫০ ভাগ সরকারি এবং ৫০ ভাগ ব্যক্তিমালিকানাধীন। এসএওসিএলের মহাপরিচালক বেসরকারি পরিচালক দুজন যথাক্রমে ওই দুটি ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির যথাক্রমে পরিচালক মালিকদের একজন। দুদকের প্রাথমিক তদন্তে এসএওসিএলের ৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। বিপিসি প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম তদন্ত করে এবং ১০ অক্টোবর দুদকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান তদন্তের জন্য সে তদন্ত প্রতিবেদন জ্বালানি বিভাগে পাঠায়। কিন্তু জ্বালানি বিভাগ নিষ্ক্রিয়। এসএওসিএলের পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান জ্বালানি বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব। ফলে কোম্পানির দুর্নীতি জ্বালানি বিভাগের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছে। পরিস্থিতি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের শিকার।

২৪. গত ২৭ জুন পেট্রোবাংলাকে প্রদত্ত জ্বালানি বিভাগের পত্রে দেখা যায়, তিন মাসের জন্য মাত্র দুটি বেসরকারি ফ্রাকশনেশন প্লান্টকে কনডেনসেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাদবাকি ১০টি বরাদ্দ পায়নি। অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দকৃত কনডেনসেট পরিশোধন না করে অপরিশোধিত কনডেনসেট বাজারে বিক্রি করা হয় এবং তা জ্বালানি তেলে ভেজাল হিসেবে ব্যবহার হয়। এমন দুর্নীতির দায়ে অসাধু ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে জ্বালানি বিভাগ এসব দুর্নীতিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে।

২৫. গত ২৬ ডিসেম্বর বিইআরসিকে প্রদত্ত জ্বালানি বিভাগের পত্রে দেখা যায়, যেহেতু বিইআরসি আইন মতে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের মূল্যহার নির্ধারণের এখতিয়ার বিইআরসির, সেহেতু ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজির মূল্যহার নির্ধারণের জন্য জ্বালানি বিভাগ বিইআরসিকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে। অথচ বিইআরসি থেকে মতামতের জন্য পাঠানো মূল্য নির্ধারণের খসড়া প্রবিধানমালা ২০১২ সাল থেকে জ্বালানি বিভাগে পড়ে আছে। মতামত দেয়নি। ব্যবসায়ীরা এলপিজি জ্বালানি বিভাগ পেট্রোলিয়ামজাত অন্যান্য পণ্যের মূল্যহার অবৈধভাবে নির্ধারণ করে। এসব পণ্য সরবরাহে ব্যাপক দুর্নীতি এখন নিয়ন্ত্রণহীন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিইআরসি অকার্যকর। ভোক্তাদের মতে, খাতে অনিয়ম দুর্নীতির জন্য জ্বালানি বিভাগ এককভাবে দায়ী।

উপরের তথ্যাদি পর্যালোচনায় প্রমাণিত হয়, ভোক্তাদের স্বার্থ অধিকার সুরক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পেট্রোবাংলা জ্বালানি বিভাগ অযোগ্য, অদক্ষ অনুপযুক্ত এবং দুর্নীতিগ্রস্ত। বিইআরসি অকার্যকর। ভোক্তারা দুর্নীতির ফাঁদে। ফলে জ্বালানি খাত গভীর সংকটে। সে সংকট মোকাবেলায় প্রথমেই খাতকে স্বার্থসংঘাতমুক্ত হতে হবে। সেজন্য নিম্নরূপ সুপারিশ করা হলো:

* গ্যাস বিস্ফোরণে মসজিদে হতাহতের ঘটনা হত্যাকাণ্ড হিসেবে ঘোষিত হতে হবে এবং বিইআরসির মাধ্যমে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত বিচার বিভাগের দ্বারা নিশ্চিত হতে হবে।

* ঘটনাসহ জ্বালানি খাতের দুর্নীতি যেহেতু জীবনরক্ষার মতো মৌলিক অধিকার থেকে ভোক্তাদের বঞ্চিত করেছে, সেহেতু ওই খাতের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের যুদ্ধাপরাধীদের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে বিচার হতে হবে এবং

* বিদ্যুৎ জ্বালানির সব পর্যায়ের ইউটিলিটির পরিচালনা বোর্ড থেকে বিদ্যুৎ জ্বালানি উভয় বিভাগের কর্মকর্তাদের অবমুক্ত হতে হবে।

 

. এম. শামসুল আলম: জ্বালানি বিশেষজ্ঞ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন