করোনাভাইরাসে পুনঃসংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কতটা?

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯-এর প্রথম পুনঃসংক্রমণের বিষয়টি আগস্টের শেষ সপ্তাহে জানান ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের গবেষকরা। এছাড়া পুনঃসংক্রমণের আরো কিছু ঘটনার কথা শোনা গেছে, যেখানে বেঙ্গালুরুর একটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

কীভাবে প্রকৃত অর্থে পুনঃসংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়? একবার সেরে ওঠার পর ফের সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ আসলে কেমন? বর্তমানে প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রে থাকা সার্স-কোভ--এর ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ইমিউন প্রতিক্রিয়ার অর্থই বা কী? বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন ত্রিবেদী স্কুল অব বাায়োসায়েন্সের পরিচালক ভাইরোলজিস্ট . শাহিদ জামিল।

প্রথম সংক্রমণের কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর দ্বিতীয়বার পজিটিভ আসা এবং এটি থেকে ভালো হয়ে গেছে মনে হওয়ার পর ফের আক্রান্ত হওয়া কি পুনঃসংক্রমণ বোঝায়? এর উত্তরে জামিল বলেন, পুনঃসংক্রমণ বলতে যা বোঝায় তা হলো আপনি একবার সংক্রমিত হয়েছেন, এরপর ভালো হয়ে গেছেন এবং তারপর আবার সংক্রমিত হয়েছেন। এখানে এমন একটি ব্যতিক্রম ব্যাপার থাকতে পারে যে আপনার শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ খুবই কম ছিল, যখন আপনাকে নেগেটিভ দেখানো হয়েছিল এবং পরবর্তী সময়ে পরীক্ষায় সেটি ধরা পড়েছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এটি কি একই ভাইরাস যা দেখা গেছে কিংবা এটি ভিন্ন ভাইরাল ইভেন্ট দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে। এটি প্রমাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে এটি দেখা যে প্রথমবারের ভাইরাস এবং দ্বিতীয়বারের ভাইরাস কিছুটা আলাদা কিনা। ভাইরাস মানুষের শরীরে বৃদ্ধি পাওয়ার সময় সামান্য মিউটেট হয়। তাই প্রায় অসম্ভব যে একই ভাইরাস দ্বারা পুনঃসংক্রমিত হওয়া।

এক্ষেত্রে হংকংয়ের কেসটি একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে, যেখানে পুনঃসংক্রমণ দেখা গেছে। প্রথমে যে ভাইরাসটি দ্বারা লোকটি সংক্রমিত হয়েছে সেটির সিকোয়েন্স ছিল একরকম এবং দ্বিতীয়বার সংক্রমণের সময় সেটা কিছুটা ভিন্ন ছিল।

বেঙ্গালুরুর কেসটির ব্যাপারে আমি জানি না যে আসলেই তারা সিকোয়েন্স করে দেখেছে কিনা। তাই আমি বলতে পারছি না সেটি আসলেই পুনঃসংক্রমণ ছিল কিনা।

তাহলে দুটি আলাদা সংক্রমণের ক্ষেত্রে জিনোম সিকোয়েন্সই পুনঃসংক্রমণ চিহ্নিত করার জন্য যৌক্তিক উপায় কিনা? উত্তরে জামিল বলেন, হ্যাঁ। কিন্তু সেই সঙ্গে আমাকে এটাও বলতে হবে যে সিকোয়েন্সিং এমন কিছু না যা কিনা ডায়াগনস্টিক ল্যাব কিংবা হাসপাতালের সেটিংসে করা সম্ভব নয়। এর জন্য আলাদা সেটআপ দরকার।

মানুষের অনর্থক নিজেদের ভাইরাস সিকোয়েন্স করার জন্য দৌড়ঝাঁপ করার দরকার নেই। তা সিস্টেমের ওপর অহেতুক চাপ তৈরি করবে। মানে এখানে আসলে ঝুঁকি কী? এটা আসলে তাত্ত্বিক বিষয় যে কেউ আবার সংক্রমিত হবে কি হবে না সেটা। মানুষ যেটা বুঝতে পারছে না তা হলো এখানে মূল বিষয় হচ্ছে রোগ।

আমরা অনেক ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকি, যা হয়তো আমরা জানিও না, কারণ সেগুলো রোগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে না। পুনঃসংক্রমণ নিয়ে যে ভয় তা আসলে অপরিপক্ব ব্যাপার।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে বর্তমানে বিশ্বে ২৫ মিলিয়নের বেশি সংক্রমণ রয়েছে এবং এখনো বিচ্ছিন্ন কেস রয়েছে, যেগুলো বলা হচ্ছে পুনঃসংক্রমণ। এর কোনো তাত্পর্য নেই।

তিনি সময় আরো বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার যখন কারো পজিটিভ আসে, তখন এমন হতে পারে যে আপনি যা শনাক্ত করেছেন তা হয়তো কার্যকর কোনো ভাইরাস নয়, বরং ভাইরাল নিউক্লিক অ্যাসিড।

অর্থাৎ ভালো হওয়ার পরও শরীরে থেকে যাওয়া মৃত ভাইরাসের জেনেটিক উপাদান, দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সময় পজিটিভ আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন জামিল।

স্ক্রলডটইন থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন