ভ্যাকসিন প্রতিযোগিতার সর্বশেষ আপডেট

বণিক বার্তা ডেস্ক

এখন পর্যন্ত অগ্রগতির নিরিখে আশা করা যায়, ইতিহাসের সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে তৈরি একটি ভ্যাকসিন আমরা পেতে যাচ্ছি। সাধারণভাবে কোনো একটি ভ্যাকসিন পেতে ১০-১৫ বছর সময় লাগে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বছরের শেষ নাগাদ কভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন নিয়ে আসার প্রত্যাশা করছেন। বিশ্বজুড়ে কয়েক ডজন গবেষণা দল প্রতিষ্ঠিত কৌশলের সঙ্গে প্রযুক্তির মিশ্রণে ভ্যাকসিন তৈরিতে বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। চলুন ভ্যাকসিনের সর্বশেষ আপডেট জেনে নিই।

চলমান মহামারী নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে এমন একটি পণ্য তৈরির জন্য বিশ্বজুড়ে মিলিয়ন মিলয়ন ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ইউরোপ সবচেয়ে এগিয়ে আছে। ট্রাম্প প্রশাসন বছরই একটি কার্যকর ভ্যাকসিন হাতে পেতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও অবিশ্বাসের কারণে দেশটির জনগণের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণে অনাগ্রহীদের সংখ্যা বাড়ছে।

গত মে মাসের একটি জরিপে দেখা গিয়েছিল, কেবল ৭২ শতাংশ মার্কিন নাগরিক ভ্যাকসিন গ্রহণে আগ্রহী। তবে গত বৃহস্পতিবার পিউ রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, জরিপ করা মাত্র ৫১ শতাংশ আমেরিকান এখন বলছে যে তারা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী। এর মানে হলো মাত্র চার মাসের ব্যবধানে আরো ২১ শতাংশ মার্কিন ভ্যাকসিনের প্রতি অনাগ্রহী হয়েছে। সমীক্ষাটিতে দেখা গেছে, এখন সহজলভ্য হলে ৫১ শতাংশ আমেরিকান অবশ্যই বা সম্ভবত ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে, যা মে মাসের চেয়ে ২১ শতাংশ কম।

২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভ্যাকসিন দেয়ার ফলাফল দেখতে পাবে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরিচালক ডা. রবার্ট রেডফিল্ড। বৃহস্পতিবার সিনেটের শুনানিতে তিনি বলেছেন, আমেরিকান জনগণ ২০২১ সালের দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোয়ার্টারে ব্যাপকভাবে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেয়ার ফলাফল দেখতে শুরু করবে বলে আমি আশাবাদী। এমনকি কভিড-১৯-এর একটি ভ্যাকসিন আজ পাওয়া গেলেও যথেষ্ট পরিমাণ জনগণ এটি গ্রহণ করে প্রতিরোধক্ষমতা অর্জন করতে ছয় থেকে নয় মাস সময় লাগবে।

তবে রেডফিল্ডের প্রত্যাশিত সময়সীমার বিরোধিতা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি রেডফিল্ড বিভ্রান্ত ছিলেন। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি তিনি (রেডফিল্ড) যখন কথাটি বলেছিলেন, তখন তিনি ভুল করেছেন। এটা কেবল ভুল তথ্য।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি বলেছেন, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নির্ভর করে এটা কত সংখ্যক মানুষ গ্রহণ করছে তার ওপর। ভ্যাকসিন যখনই পাওয়া যাক না কেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক আমেরিকান ভ্যাকসিনটি গ্রহণ না করলে এটা প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিস্তার কমাতে সহায়তা করবে না। এমনকি এক-তৃতীয়াংশ আমেরিকান ভ্যাকসিনটি নিলেও সেটা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট হবে না।

এছাড়া আরো একটি উদ্বেগ হলো ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ। একটি ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন জাপানসহ ধনী দেশগুলো সেটার প্রত্যাশিত সরবরাহের অর্ধেকের বেশি ডোজ কিনে নিয়েছে। সেক্ষেত্রে গরিব মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ভ্যাকসিন সহজলভ্য হতে আরো কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।

সিএনএন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন