গত
বছরের ডিসেম্বরে
চীনের উহান
শহরে বাদুড়
থেকে আবির্ভূত
করোনাভাইরাসটি নয়
মাসে ছড়িয়ে
পড়েছে ২১৩টি
দেশে, সংক্রমিত
করেছে ২
কোটি ৮৬
লাখ মানুষকে
এবং মৃত্যু
ঘটিয়েছে নয়
লাখের ওপরে।
১৯১৮ সালের
ভয়াবহ ইনফ্লুয়েঞ্জা
মহামারীর পর
এত বড়
মহামারী এই
প্রথম। দেড়
মাস ধরে
বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন
গড়ে নতুন
করে করোনায়
আক্রান্ত হচ্ছে
আড়াই লাখ
মানুষ। আর
তা থেকে
মারা যাচ্ছে
প্রতিদিন সাড়ে
পাঁচ হাজার
করে (ওয়ার্ল্ডোমিটার,
১২ সেপ্টেম্বর)।
করোনা মহামারীর
এপিসেন্টার বা
কেন্দ্র ইউরোপ,
আমেরিকা ঘুরে
এখন শক্ত
অবস্থান নিয়েছে
লাতিন আমেরিকা
ও দক্ষিণ
এশিয়ায়।
গত এক
সপ্তাহে ব্রাজিলে
সংক্রমণ এবং
মৃত্যুহার কিছুটা
কমতে শুরু
করলেও আমাদের
পড়শি ভারতে
করোনা সংক্রমণ
বেড়েই চলেছে
সমানুপাতিক হারে।
প্রতিদিন নতুন
রোগী শনাক্তের
দিক দিয়ে
ভারত এখন
যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে
বিশ্বে প্রথম।
মোট মৃত্যু
সংখ্যার দিক
দিয়ে আমরা
চীনকে ছাড়িয়ে
গেছি দুদিন
আগেই। আর
এত অপ্রতুল
টেস্ট করার
পরও বাংলাদেশের
করোনা আক্রান্তের
সংখ্যা এখন
চীনের চার
গুণ। মোট
আক্রান্তের দিক
দিয়ে এশিয়ায়
আমাদের অবস্থান
এখন তৃতীয়।
বর্তমানে মৃত্যুহার
আগের চেয়ে
কিছুটা কমে
এলেও সংক্রমণের
হার এখনো
ঊর্ধ্বগতি। বিজ্ঞানীদের
ধারণা, এই
নভেল করোনাভাইরাস
সহসাই আমাদের
ছেড়ে যাবে
না। ফ্লু
ভাইরাসের মতোই
রয়ে যাবে
আমাদের মাঝে।
সুতরাং এ
ভাইরাসকে মোকাবেলা
করে জীবনযাপন
স্বাভাবিক করতে
হলে এখন
দরকার একটি
নিরাপদ ও
কার্যকরী ভ্যাকসিন।
একটা ভ্যাকসিন কাজ করে
কীভাবে?
একটা
কার্যকরী ভ্যাকসিন
আমাদের শরীরের
ইমিউন সিস্টেমকে
প্রস্তুত করে
রাখে এমনভাবে,
যাতে শরীরে
কোনো ভাইরাস
বা অন্যান্য
জীবাণু প্রবেশ
করামাত্রই তা
নিষ্ক্রিয় হয়ে
যেতে পারে।
ভ্যাকসিনের মাধ্যমে
কোনো নির্দিষ্ট
জীবাণুর বিরুদ্ধে
এই রোগপ্রতিরোধী
ক্ষমতা তৈরি
হয় দুভাবে:
(১) জীবাণুটির
বিরুদ্ধে নিউট্রালাইজিং
অ্যান্টিবডি তৈরি
করে এবং
(২) টি-সেলকে
(এক ধরনের
শ্বেতকণিকা) যথাযথ
ট্রেনিং বা
প্রস্তুতীকরণের মাধ্যমে।
আধুনিক বিজ্ঞানমতে,
যে ভ্যাকসিন
এ দুটি
প্রক্রিয়াকে একই
সঙ্গে উজ্জীবিত
করতে পারবে,
সেই ভ্যাকসিন
হতে পারে
সবচেয়ে কার্যকরী
এবং দিতে
পারে দীর্ঘমেয়াদি
সুরক্ষা।
গবেষণা থেকে
জানা যায়,
নভেল করোনাভাইরাসের
সংক্রমণে শরীরে
যে নিউট্রালাইজিং
অ্যান্টিবডি তৈরি
হয়, তা
তিন থেকে
চার মাসের
ভেতরেই প্রায়
নিঃশেষ হয়ে
যায়! তবে
অ্যান্টিবডি কমে
গেলেও শরীরে
থেকে যায়
ওই ভাইরাসবিরোধী
মেমোরি টি-সেল
(CD4+ GesCD8+ T cells), যারা
করোনাভাইরাসকে শনাক্ত
করতে পারে
এবং বি-সেলকে
সক্রিয় করার
মাধ্যমে নিউট্রালাইজিং
অ্যান্টিবডি তৈরি
(CD4+ T cell কর্তৃক)
ও সরাসরি
ভাইরাস সংক্রমিত
কোষকে ধ্বংস
করতে পারে
(CD8+ T cell কর্তৃক)।
এ কারণেই
ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞরা
মোটামুটি একমত
যে নভেল
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনকে
কার্যকরী এবং
দীর্ঘস্থায়ী হতে
হলে ভ্যাকসিনটিকে
ভাইরাস নিউট্রালাইজিং
অ্যান্টিবডি তৈরির
পাশাপাশি টি-সেল
রেসপন্সও ঘটাতে
হবে। বর্তমানে
আধুনিক ভ্যাকসিনগুলোর
ডিজাইনও তাই
করা হচ্ছে
এ দুটি
গুরুত্বপূর্ণ দিক
বিবেচনা করে।
ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা: নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ পদ্ধতি
একটা
ভ্যাকসিন কতটুকু
নিরাপদ ও
কার্যকরী, তা
দেখার জন্য
তিনটি ক্লিনিক্যাল
ট্রায়াল করা
হয়। প্রথম
ধাপের (ফেইজ-১)
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
করা হয়
স্বল্পসংখ্যক (২৫-১০০
জন) সুস্থ
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের
ওপর। এ
ধাপের ট্রায়ালে
দেখা হয়
প্রয়োগকৃত ভ্যাকসিনটি
শরীরে কোনো
ক্ষতিকর প্রভাব
ফেলে কিনা
এবং কতটুকু
ইমিউন রেসপন্স
করে। দ্বিতীয়
ধাপের (ফেইজ-২)
ট্রায়াল করা
হয় অপেক্ষাকৃত
অধিকসংখ্যক (১০০-৫০০
জন) সুস্থ
ভলান্টিয়ারের ওপর।
এ ধাপে
নির্ধারণ করা
হয় ভ্যাকসিনটির
কার্যকরী ডোজ
এবং তা
শরীরে কতটুকু
নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি
এবং টি-সেল
বা ইমিউন
সেল রেসপন্স
ঘটাতে পারে।
ভ্যাকসিন শরীরে
কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
করে কিনা,
তা নিবিড়ভাবে
পর্যবেক্ষণ করা
হয় কমপক্ষে
দেড় মাস।
এ দুটো
ধাপে সন্তোষজনক
ফল পাওয়া
গেলে শুরু
করা হয়
শেষ ধাপের
(ফেইজ-৩)
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল।
এ ধাপের
ট্রায়ালটি করা
হয় বৃহৎ
পরিসরে ১০-৩০
হাজার সুস্থ
বিভিন্ন বয়সের
ও গোত্রের
মানুষের ওপর।
এ ট্রায়াল
হতে হবে
রেন্ডমাইজড প্ল্যাসিবো-কন্ট্রোল্ড
ডাবল-ব্লাইন্ড
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
(RCT), যেখানে
ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী
অর্ধেকের শরীরে
দেয়া হয়
ভ্যাকসিন এবং
বাকি অর্ধেককে
দেয়া হয়
প্ল্যাসিবো (নকল
বা ডামি
ভ্যাকসিন)।
এরপর তাদের
মুক্তভাবে চলাফেরা
করতে দেয়া
হয় জনমানুষের
ভেতরে, যেখানে
করোনা মহামারী
চলমান। ট্রায়ালটি
চলতে পারে
তিন থেকে
ছয় মাস
বা তারও
বেশি সময়
ধরে। ট্রায়াল
শেষে দেখা
হয় আসল
ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের
ভেতরে কতজন
নভেল করোনাভাইরাসে
সংক্রমিত হয়েছেন।
ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের
ভেতরে যদি
৫০-৭০
শতাংশ করোনা
থেকে মুক্ত
থাকেন, তাহলে
ধরে নেয়া
হয় যে
ভ্যাকসিনটি কার্যকরী।
এই ফলাফলের
পরেই সাধারণত
একটা নতুন
ভ্যাকসিন সর্বসাধারণে
প্রয়োগের অনুমতি
দেয়া হয়।
ভ্যাকসিন উৎপাদনে কে আছে
কোন অবস্থানে?
চলতি
বছরের শুরুতেই
চীন নভেল
করোনাভাইরাসটির জেনোম
সিক্যুয়েন্স করে
ফেলে ত্বরিতগতিতে
এবং তা
উন্মুক্ত করে
দেয় সবার
জন্য। এই
সিক্যুয়েন্সকে ভিত্তি
করে বছরের
শুরু থেকেই
কয়েকটি দেশ
ভ্যাকসিন তৈরির
কাজে নেমে
পড়ে সর্বশক্তি
নিয়ে; যার
মধ্যে যুক্তরাজ্য,
যুক্তরাষ্ট্র, চীন,
জার্মানি ও
রাশিয়া অগ্রগামী।
পরবর্তী সময়ে
এদের সঙ্গে
যুক্ত হয়
ফ্রান্স, ভারত,
ইতালি, অস্ট্রেলিয়া,
কানাডা ও
কিউবা। বাংলাদেশের
একমাত্র কোম্পানি
গ্লোব বায়োটেক
তাদের ভ্যাকসিন
উদ্ভাবন প্রক্রিয়া
শুরু করে
মার্চের শুরুতে।
ভ্যাকসিন উৎপাদন
একটি জটিল
ও লম্বা
প্রক্রিয়া, যেখানে
সফলতার হার
মাত্র ৬-৭
শতাংশ। ভ্যাকসিন
দৌড়ে এখন
পর্যন্ত অংশ
নিয়েছে মোট
১৩১টি ভ্যাকসিন,
যার মধ্যে
৯৩টি রয়েছে
ল্যাবরেটরি পর্যায়ে
এবং ৩৮টি
রয়েছে বিভিন্ন
ধাপের ক্লিনিক্যাল
ট্রায়ালে। ক্লিনিক্যাল
ট্রায়ালে থাকা
ভ্যাকসিনগুলোর মধ্যে
শেষ ধাপ
বা ফেইজ-৩
ট্রায়ালে রয়েছে
অক্সফোর্ডের চ্যাডক্স-১,
মর্ডানার এমআরএনএ
ভ্যাকসিন, জার্মানির
বায়োন্টেক (ফাইজার),
চীনের সিনোভ্যাক,
সিনোফার্ম ও
ক্যানসিনোবায়ো এবং
রাশিয়ার স্পুটনিক-৫
ভ্যাকসিন (নিউইয়র্ক
টাইমস ভ্যাকসিন
ট্র্যাকার)।
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন
তাদের ফেইজ-৩
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
শেষ করবে
সেপ্টেম্বরে এবং
অক্টোবরেই তারা
ভ্যাকসিনটি বাজারে
আনার প্রস্তুতি
নিচ্ছে। অন্যদিকে
মর্ডানা ও
সিনোভ্যাক তাদের
ভ্যাকসিন এ
বছরের শেষে
বা আগামী
বছরের প্রথমে
বাজারে আনতে
পারে। রাশিয়ার
স্পুটনিক-৫
এবং চীনের
ক্যানসিনোবায়ো ও
সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন
ফেইজ-৩
ট্রায়াল না
করেই নিজ
নিজ দেশের
জনসাধারণের ওপর
প্রয়োগ করা
শুরু করেছে!
কোন ভ্যাকসিন কতটুকু কার্যকর?
করোনা
প্রতিরোধে এবার
বেশ কয়েকটি
প্রতিষ্ঠান একদম
নতুন ধরনের
ভ্যাকসিন প্রস্তুত
করছে, যেগুলো
আগে কখনো
ব্যাপকভাবে ব্যবহূত
হয়নি। এর
ভেতরে এমআরএনএ
ভ্যাকসিন ও
অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর
ভ্যাকসিন উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া ভ্যাকসিন
তালিকায় রয়েছে
সনাতন পদ্ধতিতে
তৈরি ইনেক্টিভেটেড
ও প্রোটিন/পেপ্টাইড
ভ্যাকসিন।
অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর ভ্যাকসিন
ভ্যাকসিন
তৈরির এ
পদ্ধতিতে রিকম্বিনেন্ট
টেকনোলজির মাধ্যমে
অ্যাডিনোভাইরাসের মধ্যে
করোনাভাইরাসের স্পাইকপ্রোটিনের
জিন প্রবেশ
করিয়ে দেয়া
হয়। এতে
অ্যাডিনোভাইরাসটি যখন
টিকার মাধ্যমে
শরীরে প্রবেশ
করে, তখন
আমাদের ইমিউন
সিস্টেম এ
ভাইরাসটিকে করোনাভাইরাস
হিসেবে চিহ্নিত
করে এর
বিপরীতে রোগপ্রতিরোধ
ব্যবস্থা গড়ে
তোলে, যা
পরবর্তী সময়ে
আমাদের আসল
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ
থেকে সুরক্ষা
দেয়।
অক্সফোর্ড ও
অ্যাস্ট্রাজেনিকার যৌথ
উদ্যোগে উদ্ভাবিত
চ্যাডক্স-১
ভ্যাকসিন তৈরিতে
ব্যবহার করা
হয়েছে শিম্পাঞ্জি
অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর।
ভ্যাকসিনটির প্রি-ক্লিনিক্যাল
ট্রায়াল চালানো
হয় ইঁদুর
ও বানরের
ওপর। এতে
দেখা যায়
যে ভ্যাকসিনটি
ইঁদুরের রক্তে
পর্যাপ্ত পরিমাণ
নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি
(ওমএ) তৈরি
করতে এবং
ভাইরাসবিরোধী টি-সেল
রেসপন্স ঘটাতে
পারে (নেচার,
২০ জুলাই)।
পরবর্তী সময়ে
ভ্যাকসিনটির ফেইজ-১/২
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
চালানো হয়
যুক্তরাজ্যের পাঁচটি
হাসপাতালে ১
হাজার ৭৭
জন ভলান্টিয়ারের
ওপর। ফলাফলে
দেখা যায়,
প্রথম ডোজ
দেয়ার ১৪
দিন পর
ভাইরাসের স্পাইক
প্রোটিনের বিপরীতে
পর্যাপ্ত পরিমাণ
টি-সেল
তৈরি হয়েছে
রক্তে এবং
২৮ দিন
পরে দ্বিতীয়
ডোজ দেয়ায়
১০০ শতাংশ
টিকা গ্রহীতার
রক্তেই নিউট্রালাইজিং
অ্যান্টিবডি তৈরি
হয়েছে, যার
টাইটার কনভালেসেন্ট
প্লাজমায় প্রাপ্ত
অ্যান্টিবডি টাইটারের
সমান (ল্যানসেট,
২০ জুলাই)।
অক্সফোর্ড এখন
তাদের ভ্যাকসিনটির
ফেইজ-৩
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
চালাচ্ছে ব্রাজিল,
দক্ষিণ আফ্রিকা,
ভারত, যুক্তরাজ্য
ও যুক্তরাষ্ট্রের
৪০ হাজার
ভলান্টিয়ারের ওপর।
চীনের ক্যানসিনোবায়ো
ভ্যাকসিনটিও তৈরি
করা হয়েছে
অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর
ব্যবহার করে,
তবে এক্ষেত্রে
তারা ব্যবহার
করছে হিউম্যান
অ্যাডিনোভাইরাস-৫
(অ্যাড-৫)।
এ ভ্যাকসিনের
ফেইজ-১
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
চালানো হয়
১০৮ জন
ভলান্টিয়ারের ওপর।
ফলাফল অনেকটা
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের
মতোই। এক
ডোজ ভ্যাকসিন
দেয়ার ১৪
দিন পরেই
রক্তে পর্যাপ্ত
পরিমাণ ভাইরাসবিরোধী
টি-সেল
তৈরি হয়।
আর ২৮
দিনের ভেতরে
রক্তে তৈরি
হয় ভাইরাস
নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি
(ল্যানসেট, ২২
মে)।
এ ভ্যাকসিন
এখন তাদের
ফেইজ-৩
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
চালাচ্ছে সৌদি
আরব ও
পাকিস্তানে।
অন্যদিকে রাশিয়ার
স্পুটনিক-৫
ভ্যাকসিনটিতে ব্যবহার
করা হয়েছে
দুটি হিউম্যান
অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর
অ্যাড-৫
ও অ্যাড-২৬।
২১ দিন
ব্যবধানে দেয়া
দুই ডোজের
ভ্যাকসিনে প্রথম
ডোজে ব্যবহার
করা হয়েছে
অ্যাড-২৬
নামে বিরল
প্রজাতির অ্যাডিনোভাইরাস
এবং দ্বিতীয়
ডোজে ব্যবহার
করা হয়েছে
সাধারণ অ্যাড-৫
জাতের অ্যাডিনোভাইরাস।
ভ্যাকসিনটির ফেজ-১/২
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
চালানো হয়
৭৬ জন
ভলান্টিয়ারের ওপর
এবং তার
পূর্ণ ফলাফল
প্রকাশিত হয়
ল্যানসেট জার্নালে।
ট্রায়ালে দেখা
যায় প্রথম
ডোজ টিকা
দেয়ার ২৮
দিনের ভেতরেই
শতভাগ ভ্যাকসিন
গ্রহীতার রক্তে
পর্যাপ্ত নিউট্রালাইজিং
অ্যান্টিবডি তৈরি
হয় এবং
দুই ডোজ
ভ্যাকসিন দেয়ার
পরে সবার
শরীরেই টি-সেল
রেসপন্স হয়
(ল্যানসেট, ৪
সেপ্টেম্বর)।
রাশিয়া এখন
তাদের ভ্যাকসিনটির
ফেইজ-৩
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
চালাচ্ছে নিজ
দেশের প্রায়
৪০ হাজার
ভলান্টিয়ারের ওপর।
উল্লিখিত ভ্যাকসিনগুলোয়
কিছু সাধারণ
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও পরিলক্ষিত
হয়েছে। যেমন
ভ্যাকসিন-পরবর্তী
গা ব্যথা,
জ্বর, মাথাব্যথা,
টিকার স্থানে
ব্যথা ইত্যাদি।
তবে কোনো
ভ্যাকসিনই তেমন
কোনো মারাত্মক
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি
করেনি।
এ ধরনের
অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর
ভ্যাকসিনগুলোর একটা
বড় সমস্যা
হচ্ছে অ্যান্টি-ভেক্টর
ইমিউনিটি। অ্যাডিনোভাইরাস
খুব সাধারণ
একটা ভাইরাস
এবং এটা
প্রতিনিয়ত আমাদের
শরীরে ঠাণ্ডা,
সর্দি-জ্বর
সৃষ্টি করে।
আর এ
কারণেই আমাদের
শরীরে অনেক
ক্ষেত্রেই ভাইরাসটির
বিপরীতে ইমিউনিটি
বা অ্যান্টিবডি
তৈরি হয়ে
থাকে। কারো
শরীরে যদি
ভ্যাকসিন দেয়ার
আগেই অ্যাডিনোভাইরাসের
বিপরীতে অ্যান্টিবডি
টাইটার বেশি
থাকে, সেক্ষেত্রে
এ ধরনের
ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা
অনেকটাই হ্রাস
পেতে পারে।
এ রকম
সমস্যা এড়ানোর
জন্যই অক্সফোর্ড
মানুষের অ্যাডিনোভাইরাস
ব্যবহার না
করে ব্যবহার
করেছে শিম্পাঞ্জির
অ্যাডিনোভাইরাস। আর
রাশিয়া হিউম্যান
অ্যাডিনোভাইরাস ব্যবহার
করলেও এক্ষেত্রে
তারা বেছে
নিয়েছে বিরল
প্রজাতির অ্যাডিনোভাইরাস
(অ্যাড-২৬),
যার বিপরীতে
আমাদের শরীরে
ইমিউনিটি খুবই
কম। আর
এর ফলেই
স্পুটনিক-৫
ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতায়
অ্যান্টি-ভেক্টর
ইমিউনিটি তেমন
কোনো বিরূপ
প্রভাব ফেলবে
না। [চলবে]
ডা. খোন্দকার মেহেদী আকরাম:
সিনিয়র রিসার্চ
অ্যাসোসিয়েট
শেফিল্ড
ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্য