কভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যস্ত অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ সংস্থা

৫০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলারে বেইলআউট এএপির

বণিক বার্তা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থাকে ৫০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলারে বেইলআউট দিল দেশটির সরকার। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আঞ্চলিক সাংবাদিকতাকে সহায়তার অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এএপি) সহায়তা দিল অস্ট্রেলিয়া সরকার। খবর এপি, এএফপি।

এক বিবৃতিতে যোগাযোগমন্ত্রী পল ফ্লেচার বলেন, সংবাদ সম্প্রচারে বৈচিত্র্যের জন্য এএপি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত ৮৫ বছরের ইতিহাসে সবসময়ই সঠিক, তথ্যভিত্তিক স্বাধীন সাংবাদিকতায় প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে এসেছে সংবাদ সংস্থা।

কভিড-১৯ মহামারীর কারণে অস্ট্রেলিয়ার আঞ্চলিক গণমাধ্যম খাতে অভূতপূর্ব সংকট দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞাপন থেকে আয় লক্ষণীয়ভাবে কমার কারণে অনেক সংবাদমাধ্যমের টিকে থাকা হুমকিতে পড়েছে।

অস্ট্রেলিয়াজুড়ে ২৫০টিরও বেশি আঞ্চলিক পত্রিকায় সংবাদ সরবরাহ করে আসছে এএপি। জাতীয়, রাজ্য আঞ্চলিক সব ধরনের সংবাদ সরবরাহ করছে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় সংবাদ সংস্থাটি।

ফ্লেচার বলেন, জনস্বার্থে সাংবাদিকতা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন গুরুত্বপূর্ণ। এই ৫০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলারের অর্থায়নের ফলে দেশব্যাপী বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ খবর পৌঁছে দেবে এএপি।

এক যৌথ বিবৃতিতে শীর্ষ নির্বাহীরা বলছেন, শত শত সংবাদপত্র রেডিও স্টেশনকে কনটেন্ট সরবরাহ করে আসছে এএপি। ওই সংবাদপত্রগুলোর বেশির ভাগই আঞ্চলিক, যাদের পক্ষে সব জায়গায় প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া সম্ভব নয়। আমাদের রাজধানী, আদালতে কিংবা ক্রীড়াঙ্গনে কী ঘটছে, তা সরাসরি গিয়ে সংগ্রহ করা কঠিন।

বিরোধীদলীয় গণমাধ্যমবিষয়ক মুখপাত্র মিশেল রাওল্যান্ড বলেন, আরো কয়েক মাস আগে কেন্দ্র সরকারের সহায়তা পাঠানো উচিত ছিল।

এএপিকে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে চিঠি দিয়েছেন তিন সিনেটর জ্যাক লাম্বি, রেক্স প্যাট্রিক স্টার্লিং গ্রিফ। প্রধান দলগুলোর বাইরের তিন সিনেটর প্রস্তাব করেন, নভেল করোনাভাইরাস সংকটের ধাক্কা সামলাতে আগামী তিন বছর এএপিকে অর্থায়ন করে যেতে হবে।

শুক্রবার ঘোষিত আর্থিক সহায়তা সরকারের পাবলিক ইন্টারেস্ট নিউজ গ্যাদারিং প্রোগ্রামের আওতায় এককালীন অনুদান হিসেবে দেয়া হচ্ছে। মহামারীর মধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনস্বার্থে সাংবাদিকতার জন্য গণমাধ্যমকে সহায়তায় গত মে মাসে কর্মসূচি চালু হয়েছিল। কর্মসূচির আওতায় এএপিসহ ১০৭টি আঞ্চলিক প্রকাশক সম্প্রচারমাধ্যমকে কোটি ৫০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা কোটি ডলার অনুদান দিয়েছে সরকার। তবে অসংখ্য আঞ্চলিক পত্রিকা এখনো কোনো আর্থিক সহায়তা পায়নি।

এএপির সঙ্গে চুক্তির বিস্তারিত তথ্য আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। গত জুলাইয়ে পুরনো মালিকদের কাছ থেকে এএপি কিনে নিয়েছিল মানবহিতৈষী বিনিয়োগকারীদের একটি কনসোর্টিয়াম। সাবেক মালিকপক্ষ গত মার্চে এক ঘোষণায় জানিয়েছিল, তারা জুনের মধ্যে তা বিক্রির কথা ভাবছে। তখন ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে তহবিল জড়ো করে এএপি।

চলতি বছরের শুরুতে অর্ধেক কর্মী নিয়ে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নবযাত্রা শুরু করেছিল এএপি। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর আগে থেকেই আর্থিক সংকটে ভুগছিল পুরনো সংবাদ সংস্থা। সরকারের বেইল আউট ঘোষণায় এএপি ঘুরে দাঁড়াবে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন