মোদির মন্ত্রিসভা ছাড়লেন পাঞ্জাবের নেত্রী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার জন্মদিনে অসংখ্য শুভেচ্ছা টুইট পেলেও অন্তত এটা ছিল দুঃসংবাদ। তার মন্ত্রিসভা থেকে কৃষি বিলের বিরোধিতায় পদত্যাগ করেছেন পাঞ্জাবের নেত্রী হরসিমরত কউর বাদল। তিনি বিজেপির অন্যতম পুরনো শরিক পাঞ্জাবের অকালি দলের অন্যতম নেত্রী। মোদি সরকারের দুই মেয়াদে এই প্রথম কেউ তার মন্ত্রিসভা থেকে সরকারি নীতির বিরোধিতা করে পদত্যাগ করলেন।

তবে পদত্যাগ করলেও সরকারের সঙ্গেই থাকছে দলটি। দলের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি মোদি সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রীর দায়িত্বে  ছিলেন। পাঞ্জাবের স্থানীয় রাজনীতিতে, বিশেষ করে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির নেতারা সম্প্রতি ভারতে কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কারে নেয়া দুটি বিলের ব্যাপক সমালোচনা করেন। এমনকি যেসব সংসদ সদস্যরা এই আইনকে সমর্থন করবেন, তাদের রাজ্যে প্রবেশেও বাঁধা দেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়েছে। 

লকডাউনের মধ্যেই গত জুন মাসে কৃষি ক্ষেত্রে তিনটি অধ্যাদেশ জারির সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। অধ্যাদেশগুলোতে ১. অত্যাবশ্যক পণ্য আইনে সংশোধন করে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, গম, ভোজ্যতেল, তৈলবীজ যত ইচ্ছে মজুত করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ২. কৃষিপণ্যের ব্যবসায়ী, রফতানিকারী ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলি যাতে চুক্তির ভিত্তিতে চাষ করিয়ে সরাসরি চাষিদের থেকে ফসল কিনতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়। ৩. বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায় ফসলের দাম নিশ্চিত করতে ও চাষিদের স্বার্থরক্ষায় অধ্যাদেশ জারি হয়। বিলগুলোকে কৃষক বিরোধী আখ্যা দিয়ে হরসিমরতের মন্ত্রিসভায় থাকারও সমালোচনা তুঙ্গে ওঠে। বিরোধীদের চাপে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা ছাড়ার ঘোষণা দেন হরসিমরত। 

অবশ্য তার পদত্যাগেও বিল থেমে থাকেনি। বিরোধীদের স্লোগান আর ওয়াকআউটের মধ্যেই লোকসভায় দুটি বিল পাস হয়ে যায়। রাজ্যসভায় পাস করানোর আগে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবিও সরকার সর্বদলীয় বৈঠকে খারিজ করে দেয়া হয়। রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে টুইট করে বলেন, এই ঐতিহাসিক বিল কৃষিক্ষেত্রে ফড়েয়াদের রাজত্ব দূর করবে। চাষিরা ভাল দাম পাবেন। সরকারি ক্রয় এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও (এমসিপি) বহাল থাকবে।

তার আগে কংগ্রেসের সংসদ সদস্যরা সংসদ চত্বরেই বিলের কপি পোড়ান। তাদের অভিযোগ, আম্বানি, আদানিদের মতো সরকারের ‘বন্ধু’ শিল্পপতিদের সুবিধা দিতেই সরকার এই সব পদক্ষেপ করেছে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি-র ব্যবস্থাও তুলে দেওয়া হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর অবশ্য লোকসভায় দাবি করেন, এমএসপি চালু থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন