খোলার দিনই ষাটগম্বুজ মসজিদে দর্শনার্থীর ভিড়

বণিক বার্তা প্রতিনিধি বাগেরহাট

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে গত ছয় মাস ঐতিহ্যবাহী ষাটগম্বুজ মসজিদে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। অবশেষে গতকাল থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় প্রশাসন। তাই বিভিন্ন জেলা শহর থেকে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন ষাটগম্বুজ মসজিদে। তবে সামাজিক দূরত্বে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সচেষ্ট ছিল প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘদিন পর ষাটগম্বুজে সশরীরে প্রবেশ করতে পেরে খুশি দর্শনার্থীরাও। গতকাল সকাল ১০টায় প্রধান ফটকের মধ্যে টিকিট কাউন্টার খোলা হয়। টিকিট কেটে বিভিন্ন জেলার দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে থাকেন। ভেতরে প্রবেশ করে শিশুরা বিভিন্ন রাইডে চড়েন। প্রধান ফটক থেকে ঢুকেই ডান পাশে অবস্থিত বাগেরহাট জাদুঘরে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখেন দর্শনার্থী। তারপর ষাটগম্বুজ মসজিদের ভেতর বাইরের নয়নাভিরাম টেরাকোটা উপভোগ করেন তারা। ষাটগম্বুজ মসজিদ চত্বরে ফোটা নানা রঙের ফুল দর্শনার্থীদের আরো বেশি বিমোহিত করেছে। দীর্ঘদিন পর আজ প্রথম ষাটগম্বুজ মসজিদ উন্মুক্ত হওয়ায় এক নতুনমাত্রা যোগ হয়েছে। দর্শনার্থীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে।

দর্শনার্থীরা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে ষাটগম্বুজ বন্ধ ছিল। আজ (গতকাল) সকালে খোলায় আমরা এখানে এসেছি। প্রথমে গেটের সামনে রাখা হাত ধোয়ার পানি সাবান দিয়ে হাত ধুয়েছি। টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করেছি। মাস্ক ছাড়া কাউকে ষাটগম্বুজের ভিতর প্রবেশ করতে দেয়নি। এটা খুবই ভালো লেগেছে আমাদের।

গাজীপুর থেকে আসা হূদয় হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকায় বাইরে ঘুরতে বের হয়েছি। সকালে ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণ ঘুরে প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন দেখে খুবই ভালো লাগছে। আমরা জানতাম না যে ষাটগম্বুজ মসজিদ বন্ধ ছিল। প্রবেশ গেটে এসেই জানতে পারলাম যে, আজ প্রথম খুলেছে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ।

মাগুরা থেকে আসা উম্মে কুলসুম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইচ্ছা ছিল ষাটগম্বুজে আসব। কাল রাতে সংবাদে দেখলাম বুধবার সকাল থেকে দর্শনার্থীদের জন্য ষাটগম্বুজ উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। নিউজটি দেখেই সিদ্ধান্ত নিই, সকালে বাগেরহাট যাব ষাটগম্বুজ দেখতে। তাই চলে এলাম। ষাটগম্বুজ মসজিদ বাগেরহাট জাদুঘর দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। সত্যিই অনেক স্থাপত্য শিল্পের অনন্য নিদর্শন ষাটগম্বুজ মসজিদ।

স্থানীয় লুত্ফর রহমান বলেন, আসলে ষাটগম্বুজ মসজিদ আমাদের একটি গর্বের জায়গা। করোনা পরিস্থিতিতে মার্চ থেকে এখানে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। আমাদের মনের মধ্যে একটি চাপা কষ্ট ছিল। আজ অনেক ভালো লাগছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান গোলাম ফেরদাউস বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ১৯ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল প্রাণের ষাটগম্বুজ মসজিদ। সংস্কৃত বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আজকে আমরা ষাটগম্বুজ মসজিদ উন্মুক্ত করে দিয়েছি। প্রথম দিনেই অনেক দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যেই দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আমরা আশা করব, দর্শনার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ষাটগম্বুজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন