ইউএই-বাহরাইনের সঙ্গে চুক্তির পর পরই গাজায় বোমা হামলা ইসরায়েলের

বণিক বার্তা ডেস্ক

সংযুক্ত আরব আমিরাত বাহরাইনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চুক্তি হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গাজায় ব্যাপক রকেট হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা বলছে, বুধবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকা এলাকার বেশকিছু স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। খবর আল জাজিরা।

ওয়াফা জানায়, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় উপত্যকার বেইত লাহিয়া, মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ শহর দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের কিছু অংশ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলে রকেট হামলার জবাবে হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে অন্তত ১০টি বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এর একটি প্রতিহত করে ইসরায়েলের আয়রন ডোম অ্যান্টি মিসাইল সিস্টেম। অপরটি আশদুদ শহরে আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে দুজন ইসরায়েলি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে, আমাদের জনগণ প্রতিরোধ লড়াইয়ের বিপরীতে ইসরায়েলের যেকোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। ইসরায়েলের দখলদারিত্ব যতদিন বহাল থাকবে, আমরাও আমাদের কড়া প্রতিক্রিয়া জারি রাখব।

যুক্তরাষ্ট্রে যখন আমিরাত বাহরাইনের সঙ্গে ইসরায়েলের কথিত ঐতিহাসিক চুক্তি হচ্ছিল, ঠিক সেই মুহূর্তেই ইসরায়েলি ভূমিতে হামলা চালায় ফিলিস্তিনিরা। ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় হওয়া ওই চুক্তি ফিলিস্তিনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মনে করছে দেশটির জনগণ।

এর আগে গত মাসেই ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে বেশ কয়েকদিন অগ্নি-বেলুন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীরা। জবাবে টানা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।

২০০৮ সালের পর থেকে গাজা উপত্যকায় তিনটি যুদ্ধ চালানো ইসরায়েল সব ধরনের সহিংসতার জন্য হামাসকে দায়ী করছে। হামাস বলছে, ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনিরা ক্ষুব্ধ।

ইসরায়েলের সঙ্গে ইউএই বাহরাইনের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার ফিলিস্তিনজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিয়ে মুখে নীল মাস্ক পরে পশ্চিম তীরের নাবলুস হেবরন এবং গাজায় বিক্ষোভ করেছে তারা। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তর রামাল্লাতেও বিক্ষোভ করেছে কয়েকশ বিক্ষোভকারী।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সতর্ক করে বলেন, যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল স্বীকৃতি না দেবে ততদিন পর্যন্ত চুক্তিগুলোর মাধ্যমে অঞ্চলে শান্তি আসবে না। যতদিন পর্যন্ত ইসরায়েল তার দখলদারিত্বের অবসান না ঘটাবে, ততদিন অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা স্থিতিশীলতা আসবে না।

২০০৭ সালের পর ইসরায়েল মিসরের অবরোধের কারণে পঙ্গু হয়ে পড়েছে গাজার অর্থনীতি জীবনযাপন। খাদ্য, জ্বালানি ওষুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে তারা। বিশ্বব্যাংক বলছে, গাজার ২০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকই দারিদ্র্যে রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন