এখন শুধু ফ্রন্টলাইন কর্মীদের ভ্যাকসিন দিতে চায় চীন

বণিক বার্তা ডেস্ক

বর্তমান পরিস্থিতিতে চীনের প্রত্যেককে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন চীনের শীর্ষ একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। বেইজিং তাদের ফ্রন্টলাইনের কর্মী উচ্চঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেবে বলে মনে করেন তিনি।

চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরিচালক গাও ফু বলেছেন, উহানে শনাক্ত হওয়ার পর চীন এরই মধ্যে কয়েকবার কভিড-১৯-এর প্রভাব থেকে বেঁচে গেছে। শনিবার শেনজেন শহরে একটি ভ্যাকসিন শীর্ষ সম্মেলনে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে ভ্যাকসিন দেয়ার প্রয়োজন নেই। যদিও এর মধ্যে কোথাও গুরুতর প্রাদুর্ভাব ঘটলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে।

প্রায় চার মাস ধরে চীনে সংক্রমণের সংখ্যা কম রয়েছে। যদিও এর মধ্যে কয়েকটি ক্লাস্টার সংক্রমণ ঘটেছে। মে মাসে উত্তর-পূর্ব জিলিন প্রদেশে, জুনে বেইজিংয়ে জুলাইয়ে জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। তবে তাত্ক্ষণিক লকডাউন গণপরীক্ষার মতো ব্যবস্থা নেয়ায় কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রাদুর্ভাব কমে এসেছিল।

গাও ছোট আকারের প্রাদুর্ভাবকে চীনের কার্যকর নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ঘটনাগুলো প্রমাণ করেছে যে মহামারীটির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে আমাদের বেশ কয়েকটি জাদুকরী উপায় আছে। তিনি বলেন, যেকোনো সম্ভাব্য ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে ফ্রন্টলাইনের কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এর মধ্যে চিকিৎসা কর্মী, বিদেশে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবযুক্ত অঞ্চলে কর্মরত চীনা নাগরিক এবং রেস্তোরাঁ, বিদ্যালয় বা পরিচ্ছন্নতা পরিষেবাগুলোর মতো ঘন উচ্চঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করা মানুষজন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

যদিও চীন করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতায় বিশ্বের অন্যতম বড় খেলোয়াড়। চীনের মানব ভ্যাকসিন শিল্পের ২০১৮-২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, চীন বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদক ভোক্তা। দেশজুড়ে থাকা ৪০টি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা বছরে এক বিলিয়নেরও বেশি ডোজ সরবরাহ করতে পারে।

বিশ্বজুড়ে মানব পরীক্ষায় থাকা ৩০টির বেশি ভ্যাকসিনের মধ্যে নয়টিই চীনের, যা একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি। দেশটির নয়টির মধ্যে চারটি ভ্যাকসিনেরই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। গত সপ্তাহে হংকং বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করেছে, মূল ভূখণ্ডের চীনা গবেষকদের সহযোগিতায় তৈরি করা তাদের একটি নাকে স্প্রে উপযুক্ত ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পেয়েছে।

এদিকে শেষ ধাপের পরীক্ষা সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই চীন কয়েকটি ভ্যাকসিন নির্দিষ্ট জনসংখ্যার মধ্যে প্রয়োগ শুরু করেছে। জুনের শেষ দিকে দেশটির সামরিক বাহিনীর জন্য একটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। জুলাই থেকে দেশটি চিকিৎসা পেশাদার সীমান্ত এজেন্টদের মতো উচ্চঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা লোকদের ওপর আরেকটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে আসছে। উভয় ভ্যাকসিনই এখনো তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল সম্পন্ন করেনি।

অন্য কয়েকটি দেশও চীনের দেখানো পথে হাঁটতে পারে। গত রোববার ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকার কভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রার্থীদের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই জরুরি ব্যবহারে অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনা করছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করে গাও বলেছেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণা একটি অত্যন্ত কঠোর প্রক্রিয়া। কারণে বিজ্ঞানীদের আরো কিছুটা সময় দেয়া দরকার।

সিএনএন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন