দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে শিরোপা জিতলেন থিয়েম

ক্রীড়া ডেস্ক

ইউএস ওপেন ফাইনালে প্রথম দুই সেট হেরেও শেষ পর্যন্ত বিজয়ীর নাম ডমিনিক থিয়েম। পাঁচ সেটের ম্যারাথন ম্যাচে জার্মানির আলেক্সান্ডার জভেরেভকে ২-৬, ৪-৬, ৬-৪, ৬-৩, ৭-৬ (৮-৬) গেমে হারিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপার স্বাদ পেলেন থিয়েম। 

২০১৮ ও ২০১৯ সালের ফ্রেঞ্চ ওপেন ও ২০২০ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ফাইনালে হারের যন্ত্রণা এখনো দগদগে থিয়েমের হূদয়ে। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফাইনালেও হারের শঙ্কায় পড়েন তিনি। যদিও এবার অলৌকিক কিছুই ঘটল ফ্লাশিং মিডোতে। ২৩ বছর বয়সী জভেরেভ তৃতীয় সেটে গিয়ে গতি হারিয়ে ফেলেন, যার পুরো সুফল তুলে নেন ২৭ বছর বয়সী থিয়েম। ফল নির্ধারণী পঞ্চম সেটে গিয়ে দুজনই নিজের সার্ভকে কাজে লাগিয়ে জয় তুলে নিতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। অবশেষে জয়টা ধরা দেয় অস্ট্রিয়ান তারকা থিয়েমের হাতে। তার তৃতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টের সময় জভেরেভের ব্যাকহ্যান্ডটি কোর্টের বাইরে গিয়ে আছড়ে পড়লে বিজয়ের আনন্দে কোর্টে শুয়ে পড়েন থিয়েমও। 

দুজনের পরিচয় শৈশব থেকে, ভালো বন্ধুত্বও। জয়ের পর থিয়েম বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, এখানে আজ দুজন বিজয়ী আছে, আমরা দুজনই শিরোপার দাবিদার।’

করোনাভাইরাসে পজিটিভ হওয়ার কারণে জভেরেভের ফাইনাল দেখতে পারেননি বাবা ও কোচ আলেক্সান্ডার ও মা ইরিনা, তারা দুজনই ছিলেন জার্মানিতে। কান্নারত কণ্ঠে বাবা-মাকে নিয়ে জভেরেভ বলেন, ‘এখানে তাদের ভীষণভাবে অনুভব করেছি। আমি নিশ্চিত, ফাইনালে আমি হারলেও বাড়িতে থেকে তারা গর্বই অনুভব করেছেন। আশাকরি, একদিন আমিও এ শিরোপাটি নিয়ে বাড়ি ফিরব।’

১৯৯৬ সালে বরিস বেকারের পর প্রথম কোনো জার্মান পুরুষ খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের সুযোগ ছিল জভেরেভের। তবে এ যাত্রায় চকচকে ট্রফিটিতে চুমু খাওয়া হলো না তার।  

এর আগে গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালে প্রথম দুই সেট হেরে গিয়েও শেষ পর্যন্ত জেতার নজির আছে ২০০৪ সালে, ফ্রেঞ্চ ওপেনে সেবার এমন কীর্তি গড়েছিলেন আর্জেন্টিনার গ্যাস্টন গাউদিও। ইউএস ওপেনে এ কীর্তির ইতিহাস আরো পুরনো। ১৯৪৯ সালে আমেরিকান খেলোয়াড় পানচো গঞ্জালেজ দেখিয়েছিলেন প্রত্যাবর্তনের এমন কৃতিত্ব। 

২০১৪ সালে ক্রোয়েশিয়ার মারিন চিলিচের পর থিয়েমই প্রথম খেলোয়াড় যিনি ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতলেন। মাঝের এই সময়টাতে দাপট দেখিয়েছেন ‘বিগ থ্রি’খ্যাত রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল ও রাফায়েল নাদাল। এই তিনজন সম্মিলিতভাবে জিতেছেন ৫৭টি গ্র্যান্ড স্লাম। 

ইনজুরির কারণে এবার ইউএস ওপেন খেলেননি ফেদেরার, নাদাল খেলেননি করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে, আর জোকোভিচ দ্বিতীয় রাউন্ডে লাইন জাজের গায়ে বল মেরে ডিসকোয়ালিফায়েড হন। এ কারণে এবারের দর্শকহীন আসরটি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ে, সুযোগ আসে নতুন কারো শিরোপা জয়ের। এ সুযোগ নিয়ে ফ্লাশিং মিডোর নতুন ‘রাজা’র মুকুট পরলেন থিয়েম।

সূত্র: বিবিসি 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন