মসজিদের ভেতরে ছড়িয়ে রয়েছে মানুষের ছিন্নভিন্ন ত্বক আর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের তল্লা বাইতুল ছালাহ জামে মসজিদে ছড়িয়ে রয়েছে মুসল্লিদের বিচ্ছিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। মিম্বরে ও দেয়ালে লেপটে আছে শরীরের ত্বক। মসিজদের ভেতরে এখন এমন ভয়ানক দৃশ্য। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এশার নামাজ শেষে ইমাম যখন মোনাজাত করছিলেন ঠিক তখনই বিকট শব্দে ছয়টি এসসির বিস্ফোরণ ঘটে। আগুন ধরে যায়, ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো মসজিদ। বিস্ফোরণের শব্দে মসজিদের জানালার কাচ ও থাই সাঁটানো একটি পার্টিশন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। কাচের টুকরা বিদ্ধ হয় মুসল্লিদের গায়ে। কাচ ও থাইগ্লাসের টুকরো শার্পনেলের শরীরে আঘাত করার কারণে অনেকের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অংশবিশেষ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেগুলো পড়ে আছে মসজিদের মেঝেতে। সঙ্গে আগুন থাকার কারণে অনেকে শরীরের ত্বকও ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে ছড়িয়ে গেছে। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক যেখানে নামাজ পড়ান ঠিক সেই মিম্বরের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে বেশ কিছু ত্বকের টুকরা পড়ে আছে। মসজিদের বারান্দায় ছড়িয়ে আছে জমাট বাঁধা রক্ত। আগুন নেভাবে পানি ব্যবহার করায় অনেক স্থানে জমে আছে রক্তলাল পানি।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আরেফিন সিদ্দিক জানান, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে তারা যখন মসজিদে আসেন তখন ভেতরে দগ্ধ প্রায় ৮ থেকে ১০ জনকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িত করে হাসপাতালে পাঠান। যাদের তারা উদ্ধার করেছেন তাদের অনেকেরই ত্বক হাতে লেগে যাচ্ছিল। অনেকের শরীরের ৫০ থেকে ৯০ ভাগ পর্যন্ত পুড়ে গেছে।

তিনি বলেন, বিস্ফোরণে দগ্ধ আহাজারিতে পুরো এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। আহতদের স্বজন ও এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রায় অর্ধশত মানুষকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্য থেকে ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন বলেন, ২০ থেকে ২৫ জন রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। ভিক্টোরিয়া হসপিটালে যেক’জন রোগী এসেছেন তাদের শরীরের ৫০ ভাগ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। প্রত্যেকের অবস্থাই সংকটাপন্ন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন