রাজস্ব আহরণ কমেছে ৫ হাজার কোটি টাকা : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার প্রভাবে সর্বশেষ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ কমেছে প্রায় হাজার কোটি টাকা। তবে রাজস্ব বাড়াতে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এক পেজের মাধ্যমে আয়কর বিবরণী জমা দেয়া যাবে। আরো গ্রাহকবান্ধব সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে করদাতার সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। আর সিপিডি তথ্য রফতানির ব্যবসা করে। আন্দাজের ওপর তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্তি করছে।

রাজস্ব বিভাগের রাজস্ব আদায় অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মপরিকল্পনাসংক্রান্ত সভা শেষে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। গতকালের বৈঠকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল লাখ ১৮ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় হাজার কোটি টাকা কম। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি  লাখ ২৩ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা আদায় সম্ভব হয়েছিল। সম্পূর্ণভাবে কার্যক্রম অটোমেশনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আয়কর বিভাগের ৬৫ শতাংশ রাজস্বই আদায় হয় উৎসে কর থেকে। উৎসে কর আদায়ে যথাযথ মনিটরিং উৎসে কর্তনে কর ফাঁকি রোধকল্পে টাস্কফোর্স গঠন, -টিডিএস সিস্টেম তৈরির উদ্যোগসহ ইনোভেশন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশী নাগরিকদের কর ফাঁকি রোধে ডাটাবেজ তৈরিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির বিশেষ ধরনের নম্ব্বর প্লেট বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তথ্য নিয়ে সরকারি তথ্যের সঙ্গে সিপিডির দ্বিমত পোষণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, সিপিডি আমাদের তথ্যগুলো কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে। এরপর এসব তথ্য পাচার রফতানি করে থাকে। তারা নেতিবাচক কথা বললে লাভবান হয়। এজন্যই আন্দাজনির্ভর কথা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে থাকে। এক অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বের করে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতেই জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব দিয়েছে। আমরা যদি দশমিক ভাগ দাবি করতাম তাহলে সিপিডি প্রশ্ন করতে পারত। কিন্তু দশমিক ভাগ দাবি করায় এমন কথা বলতে পারে না। আমাদের ক্ষেতের ফসল, খাল-বিল, নদী-নালা, শিল্প-কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণ জনপদ অর্থনৈতিক অবস্থা সবকিছু দেখলেই বোঝা যাবে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় আছে। অনুমান না হয় তথ্য-উপাত্ত দুটোর ওপর ভিত্তি করে জিডিপি হিসাব করতে হবে। বিবিএস তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে কথা বলে। সিপিডি যদি আন্দাজের ওপর ভিত্তি করে কথা বলে তাহলে এটা কতটা গ্রহণযোগ্য আপনারাই বলেন।

বিবিএসের তথ্য সিপিডি ব্যবহার করে এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছর দেখেছি তারা আমাদের এটাকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা বাজেট দিলেই তাদের অনুষ্ঠান দেয়ার সময় এসে যায়। সারা বছর কয়টা অনুষ্ঠান করে। কাঁচামাল এখান থেকে নিয়ে রফতানি করে। এই হলো তাদের ব্যবসা। সহজ ব্যবসা। তবুও আমি তাদের (সিপিডি) কিছু বলব না। তারা আছে বলেই আমরা বেশি অনুপ্রাণিত হই। শক্তিশালী হওয়ার জন্য প্রত্যয়ী হই আমরা কাজ করে প্রমাণের চেষ্টা করি।

সিপিডির মতো সংস্থা আন্দাজের ওপর মন্তব্য করেছেএটি যথার্থ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি যা বলছি তা যথার্থ। তাদের বলেন কত হবে আমাদের। তাদের এক বছরের জিডিপি বের করে দিতে বলেন। আর এজন্য আমাদের পরিসংখ্যান অফিসে না গিয়ে নিজেরা পরিসংখ্যান দিক।

এনবিআরের রাজস্ব আহরণে আরো গুরুত্ব দিতে হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা রেজাল্ট না দিলে অর্থনীতি ধসে পড়বে। তবে গত অর্থবছরে করোনাকালে এনবিআর ভালো করেছে। দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে।

অনলাইনে এনবিআরের রাজস্ব আদায় কার্যক্রমের বিষয়ে আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ২৫ আগস্ট ১০০টি মেশিনের পাইলট কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন