করোনা সংক্রমিত মাত্র ৫৮ জন, তবুও নির্বাচন পেছালো নিউজিল্যান্ড

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে ফিরে আসায় নিউজিল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচন চার সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। যদিও দেশটিতে এ মুহূর্তে কভিড-১৯ রোগী মাত্র ৫৮ জন!

নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ১৯ সেপ্টেম্বর, কিন্তু নতুন সূচিতে এখন ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৭ অক্টোবর।

এ সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশটির বৃহত্তম শহর অকল্যান্ডে লকডাউন দেয়া হয়।

আরডার্ন আজ বলেছেন, নতুন তারিখ দলগুলোকে বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন করে পরিকল্পনা করার সুযোগ এনে দেবে। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তটি দলগুলোকে আগামী ৯ সপ্তাহজুড়ে প্রচারণা চালানোর সুযোগ এনে দেবে এবং নির্বাচন কমিশনও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে পাবে।’ নির্বাচন এরপর আর কোনোভাবেই বিলম্বিত করার ইচ্ছা নেই বলেও জানান তিনি।

নির্বাচন পেছানোর যথেষ্ট কারণও রয়েছে। বিরোধী ন্যাশনাল পার্টির দাবি ছিল নির্বাচন যেন পেছানো হয়, কেননা তাদের ধারণা মহামারীতে বর্তমান বিধিনিষেধের মধ্যে সীমিত আকারে প্রচারণা চালাতে হচ্ছে বলে অন্যায্যভাবে আরডার্নই সুবিধা পাবেন। 

অকল্যান্ডে সম্প্রতি বেশ কিছু মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় শহরটিতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ নতুন করে নয়জনের সংক্রমিত হওয়ার খবর দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ। ফলে অকল্যান্ডের ক্লাস্টারে মোট সংক্রমিত এখন ৫৮ জন। অকল্যান্ডের এই ৫৮ সংক্রমণই দেশের জাতীয় নির্বাচনকে পিছিয়ে দিল।

প্রাদুর্ভাবটি প্রাথমিকভাবে একটি পরিবারের মধ্যেই সংক্রমণ খুঁজে পায়। যদিও আরডার্ন জানান, পরবর্তীতে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে দেখা গেছে, তাদের সঙ্গে এক দোকানের কর্মীর সংযোগ ঘটেছে, যে ৩১ জুলাই থেকে অসুস্থ ছিল। 

পরিবারটিকে চেনেন এমন এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডকে বলেন, যা ঘটেছে তা নিয়ে পরিবারটি ভীষণ ‘মর্মাহত’ আর ‘লজ্জিত’ বোধ করছে।

৫০ লাখ মানুষের দেশ নিউজিল্যান্ড দীর্ঘ ১০২ দিন ধরে সংক্রমণমুক্ত ছিল এবং তাদের পদক্ষেপ বিশ^ব্যাপী প্রশংসা কুড়ায়। তবে সম্প্রতি নতুন করে অকল্যান্ডে সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। 

করোনাভাইরাসের জন্য নিউজিল্যান্ডে চার ধরণের ‘এলার্ট সিস্টেম’ রয়েছে। অকল্যান্ডে বর্তমানে তৃতীয় মাত্রার এলার্ট চলছে। এছাড়া বাকি দেশে রয়েছে দ্বিতীয় মাত্রার এলার্ট। সংক্রমণের নতুন ক্লাস্টার পাওয়ার আগে লকডাউন অধিকাংশই শিথিল করে দিয়েছিল সরকার, যা চালু হয়েছিল গত মার্চে। 

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, মহামারী শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে এক হাজার ৬০০ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন আর মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। 

শুরুর দিকে নেয়া লকডাউন, সীমান্তে কঠোর বিধিনিষেধ, কার্যকর স্বাস্থ্যবার্তা ও আগ্রাসী পরীক্ষা নিরীক্ষা, কন্টাক্ট ট্রেসিং কর্মসূচির কারণেই একটি সময় দেশটি থেকে ভাইরাসটি বিদায়ই নিয়েছিল। ভাইরাসটি নতুন করে ফেরায় তা নির্বাচনকে প্রভাবিত করল।

এ বছর নির্বাচনের পাশাপাশি ‘শান্তির মৃত্যু’ আর ‘ক্যানাবিস (গাঁজা)’ নামক মাদক গ্রহণের বিষয়কে বৈধতা দানের প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে নিউজিল্যান্ডে।  

সূত্র: বিবিসি ও সিএনএন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন