বার্সাকে ৮ গোলের বন্যায় ভাসিয়ে সেমিতে বায়ার্ন

ক্রীড়া ডেস্ক

একটাই ম্যাচ। জিতলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের টিকেট, হারলে বিদায়। লিসবনে তাই জমজমাট এক ম্যাচের প্রত্যাশাই ছিল ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু কিসের কি!

ম্যাচের যখন ৩১ মিনিট তখনই হয়তো অনেকেই টেলিভিশন বন্ধ করে উঠে পড়েছেন। বার্সেলোনার বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখ তখন এগিয়ে ৪-১ গোলে। এরপর ম্যাচের বাকি সময়টা ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। কিন্তু তাতেও বার্সাকে ন্যূনতম ছাড় দেয়নি জার্মান জায়ান্টরা। বার্সার ডিফেন্স নিয়ে এদিন রীতিমতো ছেলেখেলায় মেতেছিল বায়ার্ন অ্যাটাকাররা। শেষ পর্যন্ত বার্সার বিদায় ঘণ্টা বাজাতে বায়ার্ন গোল দেয় ৮ টি। জয়ের ব্যবধান ৮-২। এ যেন অবিশ্বাস্য ফল!

এদিন শুরু থেকেই খাপছাড়া ছিল দু দলের ডিফেন্স। তবে ৪ মিনিটে করা বায়ার্নের প্রথম গোলটিতে অবদান ছিল দুই স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডোভস্কি ও থমাস মুলারের। লেভার সঙ্গে বল দেয়া নেয়া করে বাঁ পায়ের বুদ্ধিদীপ্ত  শটে বল জালে জড়ান মুলার। তবে সেটি ছিল নাটকীয়তার কেবল শুরু। তিন মিনিট পর বায়ার্নকে স্তব্ধ করে দেন নিজেদেরই  খেলোয়াড় ডেভিড  আলাবা। 

গোল বাঁচাতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল জড়ান আলাবা। ম্যাচে সমতা ফেরার পর কিছু সময়ের জন্য জ্বলে উঠেছিল বার্সা। বেশ কয়েকটি সুযোগও তৈরি করেছিল তারা। যদিও তাতে দায় ছিল বায়ার্ন ডিফেন্সের। গোলরক্ষক ম্যানুয়াল নয়ারকে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন লুইস সুয়ারেজ। মাঝে একবার বল প্রতিহত বারে লেগে। তবে দ্রুত ম্যাচে ফিরে আসে বায়ার্ন।

সে সময় নড়বড়ে হয়ে পড়ে বার্সা ডিফেন্সও। ২১ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঢুকে বুলেট গতির শট নেন ইভান পেরিসিচ। সেটি ঠেকানোর চেষ্টা করেও পারেননি টের স্টেগেন। ২-১ গোলে পিছিয়ে বার্সার খেলোয়াড়রা যেন হাল ছেড়ে দিয়েছিল। ২৭ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করেন সের্গে নাব্রি। লেগে থাকা ডিফেন্ডার লেংলেটকে ছিটকে বল জালে জড়ান এই ফরোয়ার্ড। একটু পর লেভাকে স্টেগেন নিরাশ না করলে তখনই  হতে পারতো ৪-১। যদিও ৩১ মিনিটে সেটি করেই ফেলেন মুলার। জশোয়া কিমিচের ক্রসে পা ছুঁয়ে বল জালে জড়ান এই জার্মান কিংবদন্তি। এই ব্যবধান নিয়েই বিরতিতে যায় দু দল। 

বিরতি থেকে ফিরে কিছুটা এলোমেলো  ফুটবল খেলে দু দল। তবে ৫৭ মিনিটে এক গোল শোধ করে বার্সা শিবিরে কিছুটা আশা জাগান সুয়ারেজ। জর্ডি আলবার অ্যাসিস্টে গোলটি করেন তিনি। অবশ্য বার্সার আশা ফের নিরাশায় পরিণত হতে সময় লাগেনি। 

৬৩ মিনিটে বায়ার্নের হয়ে ব্যবধান ৫-২ করেন কিমিচ। যদিও এই গোলটি কেবলই আলফানসো ডেভিসের। দারুণ নৈপুণ্যে বল নিয়ে বার্সা ডিফেন্সে ঢুকে অ্যাসিস্টটি করেছিলেন এই ১৯ বছর বয়সী কানাডিয়ান তারকা। এরপর বার্সাকে চেপে ধরে আরো সুযোগ তৈরি করেছিল বায়ার্ন। 

চেষ্টা করেছিল বার্সাও। কিন্তু দিনটা মেসিদের যে ছিলই না। ৮২ মিনিটে উল্টো ৬ষ্ঠ গোলটি হজম করে কাতালান ক্লাবটি। খেলা অবশ্য এখানেই শেষ হয়নি। বেলো হরিজন্তের সাত গোলের স্মৃতিটা আরেকবার ফিরিয়ে এনে ব্যবধান ৭-২ করেন বদলি হিসেবে নামা ফিলিপ্পে কুতিনহো।

সেই কুতিনহোই পরে ব্যবধান করেন ৮-২। এই ব্যবধানেই  শেষ হয় ম্যাচ। ইতিহাসের বাজে এক হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন