টিকটকের প্রতিদ্বন্দ্বী ডাবস্ম্যাশ ক্রয়ে আলোচনায় ফেসবুক ও স্ন্যাপ

বণিক বার্তা ডেস্ক

বৈশ্বিক সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক ইনকরপোরেশন স্ন্যাপচ্যাটের প্যারেন্ট কোম্পানি স্ন্যাপ ইনকরপোরেশন টিকটকের প্রতিদ্বন্দ্বী সেবা ডাবস্ম্যাশ ক্রয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। চীনভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানি বাইটডান্স নিয়ন্ত্রিত শর্ট ভিডিও তৈরির সোস্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক ক্রয়ে যখন সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফট মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার সম্ভাব্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন সামনে এল ফেসবুক স্ন্যাপের ডাবস্ম্যাশ ক্রয়ের সংবাদ, যা শর্ট ভিডিও কিংবা পপ ভিডিও তৈরির সেবা খাতে চার মার্কিন প্রতিষ্ঠানের অবস্থান দৃঢ় করবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেসবুক কিংবা স্ন্যাপ কোনো প্রতিষ্ঠানই এখনো অধিগ্রহণ চুক্তিতে পৌঁছানোর পর্যায়ে আলোচনা নিয়ে এগোতে পারেনি।

বিষয়ে স্ন্যাপ ইনকরপোরেশনের এক মুখপাত্র জানান, আমরা ডাবস্ম্যাশ টিমের প্রশংসা করি। তবে অধিগ্রহণ বিষয়ে ডাবস্ম্যাশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এখনো সক্রিয়ভাবে কোনো আলোচনা হয়নি।

অধিগ্রহণ বিষয়ে ডাবস্ম্যাশের তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা গুজবনির্ভর কোনো অধিগ্রহণ চুক্তির বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নয়।

নিরাপত্তা দুর্বলতার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক উইচ্যাট নিষিদ্ধে পৃথক দুটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে টিকটককে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম মার্কিন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর পরই টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম কিংবা বৈশ্বিক কার্যক্রম ক্রয়ে আলোচনা শুরু করে মাইক্রোসফট। পরবর্তী সময়ে টিকটকের ক্রেতা তালিকায় যুক্ত হয় টুইটার। টিকটক ইস্যুতে যখন ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ বাদানুবাদ চলছে, তখন সামনে এল ফেসবুক স্ন্যাপের টিকটকের প্রতিদ্বন্দ্বী ডাবস্ম্যাশ ক্রয়ের তথ্য। ধারণা করা হচ্ছে, টিকটকের হাতবদল হলে তা যদি মাইক্রোসফট কিংবা টুইটারের নিয়ন্ত্রণে যায়, সেক্ষেত্রে শর্ট ভিডিও খাতে প্রতিযোগিতা জোরদারের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ডাবস্ম্যাশ ক্রয়ে আলোচনা শুরু করেছে ফেসবুক স্ন্যাপ।

আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধে নির্বাহী আদেশে সই করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম স্থানীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরে ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ব্যবসা পরিচালনার পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালিকানা হস্তান্তরে ব্যর্থ হলে দেশটিতে আর কোনো আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না টিকটক কর্তৃপক্ষ। টিকটক নিষিদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

বিবৃতিতে টিকটক জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ব্যবসা ধ্বংস করতে অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এমনকি তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম বিক্রি করতে বাধ্য করার মতো পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তথ্য নিরাপত্তার অজুহাতে দেশটিতে তাদের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে তারা আইনের আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

টিকটক বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। বেইজিংয়ের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও তৈরির অ্যাপ টিকটকের স্থানীয় কার্যক্রম নানা অজুহাত অপকৌশলে বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন, যা কোনো পরিস্থিতিতেই মেনে নেয়া হবে না। বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পে প্রতিযোগিতা নয়; একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আমেরিকা ফার্স্ট নীতি অনুসরণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত হেনস্তার শিকার হচ্ছে। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর অগ্রগতি থামাতে একের পর এক অন্যায় অভিযোগ করা হচ্ছে। মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেক্কা দিতে সক্ষম সব চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন তথ্য নিরাপত্তার অভিযোগ তুলছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসার দিক থেকে দাবিয়ে রাখতে পরিকল্পিত ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এমন অপকৌশলের জবাব দেয়ার যথেষ্ট সুযোগ পন্থা চীনের হাতে রয়েছে। চীন প্রশাসন তাদের পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চালানো শুরু করলে তা মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য খুব একটা ইতিবাচক হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন