বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাপানি পরিচালকের প্রামাণ্যচিত্র

‘তার বয়স এখন ৭ বছর। তার নাম রাসেল...শেখ রাসেল’

এসএম রশিদ

জাপানি পরিচালক নাগিসা ওশিমা পরিচালিত রহমান, দ্য ফাদার অব বেঙ্গল শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। ওশিমা কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে পলিটিক্যাল হিস্ট্রি বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এর পরই তিনি দ্রুত চলচ্চিত্রের জগতে জড়িয়ে যান। ১৯৫৯ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম ছবি টাউন অব লাভ অ্যান্ড হোপ। পরের বছর তার নাইট অ্যান্ড ফগ ইন জাপান ছবিটি সমালোচকদের দৃষ্টি কাড়ে। ১৯৭৮ সালে তার এম্পায়ার অব প্যাশন ছবির জন্য ওশিমা কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতে নেয়।

রহমান, দ্য ফাদার অব বেঙ্গল পরিচালনার পাশাপাশি এতে ব্যবহূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাত্কারও নিয়েছেন নাগিসা ওশিমা। আধা ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের প্রামাণ্যচিত্রে জাপানি ভাষায় ধারাবিবরণী দিয়েছেন মুতসুহিরো তুরা। চিত্রগ্রহণ করেছেন সিজো সেনজেন কিয়োশি ওগাসাওয়ারা। প্রামাণ্যচিত্রের প্রযোজক ছিল নিপ্পন -ভি প্রডাকশনস (এনএভি)


রহমান, দ্য ফাদার অব বেঙ্গল প্রামাণ্যটিত্রে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই নয়, দেখা যাবে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশকে, তার মানুষকে। প্রামাণ্যচিত্রের শুরুতেই পরিচালক দর্শককে জানান তারা শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। সে যাত্রা ছিল নদীপথে। ঢাকা থেকে তারা রওয়ানা হন। নদীপথে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছতে তাদের একদিন একরাত সময় লেগেছিল। পরিচালক নাগিসা জানাচ্ছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা যেত এক ছোট্ট বালককে এবং বিষয়টি জাপানি পরিচালককে মুগ্ধ করেছিল। বলাইবহুল্য বালকটি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেল। মজার ব্যাপার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে শেখ রাসেলের কিছু দৃশ্য দেখানোর পর প্রামাণ্যচিত্রে ওশিমা সাক্ষাত্কারে বঙ্গবন্ধুকে বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্ন ছিল, আপনার সঙ্গে আমি এক ছোট বালককে দেখি, বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি তার সম্পর্কে আপনাকে কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই, তার নাম কী এবং তার বয়স কত? বঙ্গবন্ধু উত্তরে বলেন, তার বয়স এখন সাত বছর। তার নাম রাসেল...শেখ রাসেল। এরপর বঙ্গবন্ধু বলেন, রাসেলের এই জীবনকালে আমি বেশির ভাগ সময়ই কারাগারে ছিলাম। বিষয়টি এই অল্প বয়সের রাসেলের জন্য কঠিন ছিল। কারণে সে আমার কাছ থেকে দূরে থাকতে চায় না।...

নাগিসার পরের প্রশ্নটি ছিল, বঙ্গবন্ধু রাসেলকে কী হিসেবে দেখতে চান? বঙ্গবন্ধুর উত্তর ছিল, আমি চাই সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে।

প্রামাণ্যচিত্রে দেখা যায় পরিচালক নাগিসা ওশিমা একদিন সকালে তার টিম নিয়ে হাজির হন বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। বঙ্গবন্ধুকে পাওয়া যায় খাবার টেবিলে। পাশেই কনিষ্ঠ পুত্র রাসেল এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা। খাবারের টেবিলে যে একেবারে সাধারণ খাবার দিয়েই সবাই খাচ্ছিলেন সেটা জানাতে ভোলোননি ওশিমা।

রহমান, দ্য ফাদার অব বেঙ্গল প্রামাণ্যচিত্রে পরিচালক শেষ যে কথাটি বলেন তা রকম—‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানতার জীবনের অতীত, বর্তমান ভবিষ্যৎ সবটাই বাংলাদেশের জন্য উৎসর্গ করা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন