করোনায় অর্ধেকে নেমেছে বার্জারের ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রভাবে রঙ উৎপাদনকারী বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবসা অর্ধেক কমে গেছে। বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৯ শতাংশ কমেছে। আর ব্যবসা কমার কারণে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা কমেছে ৭৯ শতাংশ।

কর্মকর্তারা বলছেন, কভিড-১৯-এর কারণে এপ্রিল মে মাসে দেশব্যাপী লকডাউনের ফলে বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গত বছরের তুলনায় কোম্পানির মুনাফাও অনেক কমেছে। তাছাড়া বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে কালেকশনের পরিমাণও কমেছে এবং এতে কোম্পানির নগদ অর্থপ্রবাহ কমে গেছে।

বার্জার পেইন্টেসর প্রথম প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ২৩২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৪৫৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বিক্রি কমে যাওয়ার প্রভাবে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির গ্রস মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৯৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকায়। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে গ্রস মুনাফা ছিল ২১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির পরিচালন আয় হয়েছে ১৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে পরিচালন আয় ছিল ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ছিল ৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে টাকা ৩২ পয়সা, যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১১ টাকা ১২ পয়সা। ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২০৬ টাকা ৫২ পয়সা।

৩১ মার্চ সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২৯৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বার্জার পেইন্টস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ৫২ টাকা ২২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪৪ টাকা ২৭ পয়সা। ৩১ মার্চ কোম্পানিটির সম্মিলিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২০৪ টাকা ২০ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৭৬ টাকা ৯৭ পয়সা।

২০১৯ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল বার্জার পেইন্টস। তার আগের হিসাব বছরে ২০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।

২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বার্জার পেইন্টসের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৯০০ কোটি ৬৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা কোটি ৬৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮০। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৯৫ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে দশমিক ৪৫, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের হাতে দশমিক ১৪ সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে বাকি দশমিক ৪১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২৫ দশমিক ২৮, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতেও যা ১৪৬ দশমিক ২।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল শেয়ারটির সর্বশেষ দর ছিল হাজার ৩৫৫ টাকা ২০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর হাজার ২০৮ টাকা থেকে হাজার ৬১৪ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন