জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি : স্পন্সরদের শেয়ার বিক্রি-হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে মন্দ কোম্পানি হিসেবে পরিচিত জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর পরিচালন মান উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একগুচ্ছ কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মধ্যে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেয়া ও উদ্যোক্তা বা স্পন্সরদের শেয়ার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়ও রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আজ অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৭৩৫তম কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিএসইসির নেয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো-

১. জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির সব স্পন্সর ও বর্তমান পরিচালকদের ধারণকৃত শেয়ার বিক্রয়, হস্তান্তর, স্থানান্তর ও প্লেজ বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা নিজ কোম্পানির ধারণকৃত শেয়ার বিক্রি, কারো নামে স্থানান্তর, কাউকে উপহার দিতে বা এসব শেয়ার জামানত রেখে কোনো ধরনের ঋণ নিতে পারবেন না।

২. জেড ক্যাটাগরিতে লেনদেনকৃত কোম্পানিগলোকে ছয় মাসের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে হবে।

৩. সব ধরনের শেয়ারহোল্ডার মিটিং (এজিএম/ইজিএম) ই-ভোটিং/ অনলাইনের সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে ডিজিটাল প্লাটফর্মে অথবা হাইব্রিড সিস্টেমে করতে হবে।

৪. যেসব কোম্পানি দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে জেড ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে, সেসব কোম্পানি ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে চলমান বোর্ড পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হলে বর্তমান পরিচালক ও স্পন্সররা অন্য কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি, পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী ও পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন না। কমিশন এক্ষেত্রে বিশেষ নিরীক্ষক ও কমিশন কর্তৃক পর্যবেক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে বোর্ড পুনর্গঠন করে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করবে।

৫. পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ চার বছরের মধ্যে কোম্পানির সার্বিক অবস্থার উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হলে স্টক এক্সচেঞ্জ সেই কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতিসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৬. অন্যদিকে ছয় মাস বা তার বেশি সময় কোম্পানির উৎপাদন বা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে অথবা পরপর দুই বছর নিট কার্যকর লোকসান অথবা নেগেটিভ ক্যাশ ফ্লো অপারেশন থাকলে অথবা যদি তালিকাভুক্ত কোম্পানির পুঞ্জিভ’ত লোকসান তার পরিশোধিত মূলধনকে অতিক্রম করে অথবা কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি যদি সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করে, তবে কমিশনের অনুমতিক্রমে স্টক এক্সচেঞ্জ সেই শেয়ারকে জেড ক্যাটাগিরিতে স্থানান্তর করতে পারবে।

এদিকে, জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচার প্রক্রিয়া সহজ হচ্ছে। বিএসইসি এসব শেয়ার লেনদেনে নিষ্পত্তির সময় কমিয়েছে। রোববার থেকে জেড ক্যাটাগরির শেয়ারের লেনদেন টি প্লাস থ্রি (টি+৩) ভিত্তিতে নিষ্পন্ন হবে। এতদিন এই ক্যাটাগরির শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তি হতো টি প্লাস নাইন (টি+৯) ভিত্তিতে।

এ প্রক্রিয়ায় শেয়ার কেনার চতুর্থ দিনে বিনিয়োগকারীর বিও অ্যাকাউন্টে শেয়ার জমা হবে। একইভাবে কেউ শেয়ার বিক্রি করলে চতুর্থ দিনে তার টাকা পাবেন। এতদিন দশম দিনে শেয়ার বা টাকা পাওয়া যেত।

দুর্বল শেয়ার নিয়ে কারসাজি কমানোর লক্ষ্যে ২০১৩ সালে জেড ক্যাটাগরির লেনদেন নিষ্পত্তির সময় বাড়িয়ে টি প্লাস নাইন নির্ধারণ করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন