এফইআরবি’র সেমিনারে বক্তারা

জ্বালানি খাতে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি খাতকে এগিয়ে নিতে হলে তার প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন জরুরি। সরকারের কাছে সুযোগ থাকলেও প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে জ্বালানি খাতকে দক্ষ ও উচ্চতায় নিতে যেতে পেরেছিলেন আমরা সেখানে নিতে পারিনি। প্রাতিষ্ঠানিক পারফরমেন্স খুবই দুর্বল আমরা।

আজ বৃহস্পতিবার এফইআরবি আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু : এনার্জি সিকিউরিটি এবং আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এমন বিষয় তুলে আনা হয়। মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের এডিটর মোল্লাহ আমজাদ হোসেন। ভার্চুয়াল এ আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশন (বিপপা)।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের সাংবাদিকরা।

মূল প্রবন্ধে মোল্লাহ আমজাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন নিজস্ব সম্পদকে ব্যবহার করে গ্যাস উৎপাদন করার। তবে আমাদের নিজস্ব সম্পদ এত বেশি নেই। আপত্তি নেই আমদানিতে। বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাপেক্স ভোলায় তেল-গ্যাস আবিষ্কার, কেনো সেখানে রাশান কোম্পানি গ্যাজপ্রমকে দিতে হবে। এটি বাপেক্স এককভাবে দেওয়া উচিত। হিলে গ্যাজপ্রমকে দিতে পারি। এখন বলা হচ্ছে, কয়লা থেকে সরিয়ে এলএনজিতে যেতে হবে। এটি করার আগে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মূল্যায়ন করা দরকার। বিদ্যুতের সিস্টেমলস কমানো দরকার। এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুরে ২ শতাংশ সিস্টেমলস। বিদ্যুৎ খাতের সঙ্গে ম্যাচ করতে পারছে না জ্বালানি খাত। প্রয়োজনে জ্বালানি আমদানি করবো। কিন্তু নিজস্ব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

প্যানেল আলোচক বাপেক্স’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মর্তুজা আহমেদ ফারুক চিশতী বলেন, গত দশ বছরে, অনেক কাজ হয়েছে। তবে জ্বালানি খাতে কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারলে আরও অনেক বেশি সফল হওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, বাপেক্সে ২০১৩ সাল থেকে ২০২০ সালে পর্যন্ত ৮ জন এমডি পরিবর্তন হয়েছে। তাহলে কিভাবে কাজ করবে সংস্থাটি। বাপেক্সের বোর্ডে কারা আছেন। যারা অবদান রাখতে পারবে, যাদের টেকনিক্যাল ও ম্যানেজমেন্ট ক্যাপাবিলিটি রয়েছে, যারা সৎ ও দক্ষ তাদেরকে দেওয়া উচিত। অনেক সক্ষমতা থাকার পরও ম্যানেজমেন্ট ও বোর্ডের দুর্বলতার জন্য সফল হওয়া যায় নি। অনেক দক্ষ জনশক্তি বাপেক্স ছেড়ে চলে গেছে, অনেকে অবসরে গেছেন। এখন দক্ষ জনবল তৈরি করতে অনেক সময় লাগবে। যারা অবসরে গেছেন তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

এখন বিডিং করে তেমন সাড়া পাওয়া যাবে না। এখন তেলের দাম কমে গেছে। অতীতে বিডিং হয় নি। অতীতে যারা কাজ করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা সমঝোতার মাধ্যমে কাজ করা উচিত। ওয়ান-টু ওয়ান আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া উচিত। ডিপ ড্রিলিংয়ের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, ফাইন্যান্সিয়াল সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে। ওয়েস্টে অনেক ড্রিলিং করার পর গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। সেই বিষয়গুলি দেখা উচিত। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে জেভি করে কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ খন্দকার সালেক সুফী বলেন, যেসব গ্যাস ফিল্ড রয়েছে এগুলোতে আর গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা নেই এ কথা বলবো না। পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস পাওয়া যাবে না এ কথা বলার সুযোগ নেই। আমি মনে করি বাংলাদেশের ফুলবাড়ি কয়লা ক্ষেত্র রেডি রয়েছে। যদি তারা দক্ষ না হয় তাহলে চুক্তি বাতিল করেন। তবে আমি মনে করে এটা জটিল। কারণ বিলিয়ন ডলার জরিমানা গুণতে হবে। পেট্রোবাংলার কথা বলবো, এগুলো ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে আমলারা। বোর্ডগুলো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে রিস্ট্রাকচার করা হয়। স্ক্যাডা নিশ্চিত করতে পারলে সহজেই চিহ্নিত করা যেতো কোথাও চুরি হতো। আমলাদের দিয়ে চালাতে পারবেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন