করোনায় গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও পুষ্টিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে —ইউএসএআইডি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

কৃষি জিডিপিতে ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ অবদান নিয়ে প্রাণিসম্পদ বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিতে অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করে। হাজার ৬০০ কোটি ডলার অর্থমূল্যের দুধ মাংস খাত গ্রামীণ যুবক এবং মহিলাদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ সরবরাহের পাশাপাশি পুষ্টিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। তবে নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারী গ্রামীণ কর্মসংস্থান এবং পুষ্টি উভয়কেই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ লাইভস্টক প্রডাকশন ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন প্রকল্প নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল গোলটেবিলে তথ্য জানানো হয়।

এতে জানানো হয়, কভিড-১৯ মহামারী গত মার্চ থেকে বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ খাতকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে। মহামারীর প্রভাবকে সহনীয় করতে প্রকল্পটি স্থানীয় দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের সঙ্গে বিকল্প কৌশল হিসেবে অনলাইন খাদ্য সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করেছে। ফলে অনেক প্রক্রিজাতকারী স্থানীয় গ্রাহকদের কাছে দ্রব্য বিক্রি বৃদ্ধি করে তাদের ব্যবসায়ের অর্থনৈতিক প্রভাব অনেকাংশে হ্রাস করতে পারছে।

ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ লাইভস্টক প্রডাকশন ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন প্রকল্প ২০১৫ সাল থেকে প্রাণিসম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ পরিবারের পুষ্টি আয় বৃদ্ধিতে কাজ করে আসছে। প্রকল্পটি প্রাণিসম্পদ বিভাগ (ডিএলএস) এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয়ে কাজ করে খামারিদের কাছে প্রাণিখাদ্য যেমন উন্নত জাতের ঘাস ফিড, প্রাণির স্বাস্থ্যসেবা, কৃত্রিম প্রজনন সুবিধা ইত্যাদি সহজলভ্য করে তুলছে। প্রকল্পটি খামারি, দুধ সংগ্রহকারী এবং দুগ্ধজাত পণ্য প্রস্তুতকারীদের স্বাস্থ্যকর উপায়ে দুধ উৎপাদন, সংরক্ষণ প্রক্রিয়াজাতে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে দুগ্ধজাত পণ্যের প্রচার প্রসারে সহায়তা করে।

প্রকল্প থেকে উপকৃত হয়েছেন এমন একজন বরিশালের খামারি ফাহিমা তালুকদার জানান, প্রশিক্ষণ থেকে যা শিখেছি তা ব্যবহার করে আমি আমার দুটি গরু থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচ লিটার দুধের উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে পেরেছি। প্রকল্পটির সহায়তায় এখন আমরা দুধ প্রক্রিয়াজাতকারীদের কাছে সরাসরি দুধ বিক্রি করতে পারি। এক বছরেরও কম সময়ে, দুধ বিক্রি থেকে আমাদের মাসিক আয় ১৭ হাজার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২২ হাজার ৮০০ টাকা হয়েছে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যা স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৭-১৮- দেখা গেছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩১ শতাংশের বয়সের তুলনায় কম উচ্চতা, ২২ শতাংশের বয়সের তুলনায় কম ওজন এবং শতাংশের ক্ষীণকায় বা উচ্চতার তুলনায় কম ওজন। বাংলাদেশে একজন ব্যক্তি গড়ে দৈনিক মাত্র ১৫৮ মিলিলিটার দুধ পান করে, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একজন ব্যক্তির প্রতিদিন ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান করা প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন