ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ে বাইডেনের প্রার্থী কমলা হ্যারিস

বণিক বার্তা ডেস্ক

আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে সিনেটর কমলা হ্যারিসকে বেছে নিয়েছেন ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন। দেশটিতে এই প্রথম কোনো অশ্বেতাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত হলেন। খবর বিবিসি।

মনোনয়নের বিষয়ে বাইডেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসকে বেছে নিতে পারা তার জন্য দারুণ সম্মানের। তিনি কমলাকে একজন নির্ভীক যোদ্ধা দেশের অন্যতম সেরা পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বর্ণনা করেন। অবশ্য গত মার্চেই বাইডেন বলেছিলেন, তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কোনো নারীকে বেছে নিতে পারেন। কমলাকে পদটিতে মনোনয়ন দিয়ে তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন।

অবশ্য বাইডেন কমলা এখন একই সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হলেও, এর আগে তারা প্রেসিডেন্ট পদের জন্য পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিলেন। উভয়েরই লক্ষ্য ছিল ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ায়। সময় প্রতিপক্ষ হিসেবে বাইডেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন কমলা। কিন্তু ভারতীয়-জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত ৫৫ বছর বয়সী সেই হ্যারিসকেই রানিং মেট হিসেবে বেছে নিয়ে দারুণ চমকে দিয়েছেন বাইডেন।

মনোনীত হওয়ার পর কমলা টুইটারে বলেন, মি. বাইডেন আমেরিকার জনগণকে একত্রিত করতে পারবেন। কারণ তিনি আমাদের জন্য লড়াইয়ে তার পুরো জীবন ব্যয় করেছেন এবং একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমেরিকাকে তিনি এমনভাবে নির্মাণ করবেন, যার সঙ্গে আমাদের আদর্শগত মিল রয়েছে। আমি লড়াইয়ে তার সঙ্গে যোগ দিতে পেরে নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। তাকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বিজয়ী করার জন্য আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

ভাইস নির্বাচনী দৌড়ে প্রেসিডেন্ট পদপার্থীর ভূমিকা সব সময় স্পষ্ট নয়। তবে ঐতিহ্যগতভাবে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা জনসমক্ষে তুলে ধরা পদে মনোনীতের অন্যতম প্রধান কাজ। আর সুযোগে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী দলের বার্তা পৌঁছে দেয়ার কাজটি নির্বিঘ্নে করতে পারেন। সাংবিধানিকভাবে প্রেসিডেন্ট মারা গেলে কিংবা অফিস ছেড়ে দিলে ভাইস প্রেসিডেন্ট তার স্থলাভিষিক্ত হন। নভেম্বরে বাইডেনের বয়স হবে ৭৮। এর মানে হলো, নির্বাচিত হলে তিনি হবেন আমেরিকার সব থেকে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। এর আগে ৭৭ বছর বয়সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অফিস ত্যাগ করেছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান।

কমলা হ্যারিসের আগে আমেরিকার ইতিহাসে আর মাত্র দুজন নারী কোনো প্রধান দলের থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত হয়েছিলেন। এর মধ্যে ২০০৮ সালে রিপাবলিকান পার্টি থেকে মনোনীত হয়েছিলেন সারাগ পলিন ১৯৮৪ সালে ডেমোক্র্যাট দলের থেকে মনোনীত হয়েছিলেন জেরালদিনে ফেরারো। তবে তাদের কেউই শেষ পর্যন্ত জয়ী হননি।

কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ডে অভিবাসী পিতা-মাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাবা জ্যামাইকান। কমলা পড়াশোনার জন্য ভর্তি হন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে চার বছর কাটিয়ে আইন বিষয়ে পড়তে হেস্টিংসের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটিতে যান। পরে ২০০৩ সালে তিনি সানফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি হন। পরবর্তী সময়ে প্রথম নারী অশ্বেতাঙ্গ হিসেবে নির্বাচিত হন ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল পদে। পদে দায়িত্ব পালনকালেই তাকে ডেমোক্র্যাট পার্টির গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। পরে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে মার্কিন সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন