ভারতে পার্সোনাল কম্পিউটারের (পিসি) বাজারে বড় ধস নেমেছে।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) পিসির বাজার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে।
এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে দেশটিতে পিসি সরবরাহ ২১ লাখ ইউনিটে দাঁড়িয়েছে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
খবর ইটি টেলিকম।
আইডিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময় ভারতের বাজারে ডেস্কটপ, নোটবুক ও ওয়ার্কস্টেনের বেচাকেনায় মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে।
এর মধ্যে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ নিয়ে দেশটির বাজারে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে মার্কিন বহুজাতিক পার্সোনাল পিসি নির্মাতা হিউলেট প্যাকার্ড (এইচপি)। এর পরই দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে হংকংভিত্তিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান লেনোভো।
এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বাজার হিস্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
আর ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ হিস্যা নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ডেল।
এর পরই যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে অ্যাসার ও আসুস।
প্রতিষ্ঠান দুটির বাজার হিস্যা যথাক্রমে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ ও ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
ভারতের পিসির বাজারে এইচপির শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখার মূলে রয়েছে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে চাহিদা।
দেশটির বাজারে পাঁচ শীর্ষ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এইচপিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
এমনকি করোনাকালের মধ্যেও চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহ বেড়েছে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ।
আইডিসি বলছে, ভারতের বাজারে সব মিলিয়ে এ সময়ে পিসির সরবরাহ কমেছে ৬২ দশমিক ৭ শতাংশ।
এ সময়ে ডেলকে পেছনে ফেলে বাজারের দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে যেতে সক্ষম হয়েছে লেনোভো।
মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের ব্যবসায়ী (এসএমবি), উদ্যোক্তা
ও ভোক্তা শ্রেণীর মধ্যে লেনোভোর পিসির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সময় ভালো অবস্থানে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও ইলেকট্রনিক্স করপোরেশন অব তামিলনাড়ুর (ইএলসিওটি) সঙ্গে হওয়া ১১ লাখ ইউনিটের একটি চুক্তিও প্রতিষ্ঠানটির বাজার হিস্যা বাড়াতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
অন্যদিকে ডেলের বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে।
ডেস্কটপ সেগমেন্টে চাহিদা কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠান পিসির বাজারে পিছিয়ে পড়েছে।
তবে এ সময়ে এন্টারপ্রাইজ সেগমেন্টে প্রতিষ্ঠানটির পিসির চাহিদা বেড়েছে।
এক্ষেত্রে দ্বিতীয় শীর্ষ বিক্রেতার জায়গা দখল নিতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আর চতুর্থ অবস্থানে থাকা অ্যাসারকে কমার্শিয়াল ডেস্কটপ সেগমেন্টে শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছাতে সহায়তা করেছে।
মূলত আগের কিছু ক্রয়াদেশের পণ্য এ সময়ে সরবরাহ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বাজার হিস্যা বেড়েছে।
তবে সব মিলিয়ে এ সময়ে প্রতিষ্ঠাটির সরবরাহ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
আইডিসি ইন্ডিয়ার পিস ডিভাইস বিভাগের বাজার বিশ্লেষক ভারত সেনয় বলেন, দ্বিতীয় প্রান্তিকে পিসি সরবরাহ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
তবে এর পরও এ প্রান্তিকে ক্রয়াদেশ বাস্তবায়ন করেছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান।
নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট সংকট এবং অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থায় পিসির বাজার বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে বলে মনে করছে আইডিসি ইন্ডিয়ার ক্লায়েন্ট ডিভাইস বিভাগের অ্যাসোসিয়েট রিসার্চ ম্যানেজার জয়পাল সিং।
