বিবিএসের তথ্য

২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.২৪%

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ২৪ শতাংশ। স্থিরমূল্যে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। এছাড়া মাথাপিছু আয় হাজার ৬৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ মাসে গড় মাথাপিছু আয় প্রায় ১৪ হাজার ৬০০ টাকা। অর্থবছরের প্রথম আট মাসের তথ্যের ভিত্তিতে পুরো বছরের জন্য প্রবৃদ্ধিরপ্রাক্কলিত হিসাবচূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)

২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা ছিল দশমিক শতাংশ। কিন্তু কভিড-১৯-এর কারণে সে লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরেও দশমিক শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিবিএসের তথ্যমতে, গত অর্থবছরে জিডিপির পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে কম কৃষি খাতের। কৃষির সব উপখাত মিলে জিডিপিতে অবদান এখন ১৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল সেবা খাতের। মোট জিডিপিতে খাতের অবদান ছিল ৫১ দশমিক ৩০ শতাংশ। সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবদান খুচরা পাইকারি ব্যবসার। ফলে জিডিপিতে কৃষি খাতের চেয়ে খুচরা পাইকারি ব্যবসায়ের অবদান এখন বেশি। শিল্প খাতের অবদানও কিছুটা বেড়েছে। জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান এখন ৩৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ, যা তার আগের অর্থবছর ছিল ৩৫ শতাংশ।

গত অর্থবছরে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল হাজার ৬৪ ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় লাখ ৭৪ হাজার ৮৮৮ টাকা। ফলে মাসে গড় আয় ১৪ হাজার ৫৭৪ টাকার মতো। মাথাপিছু আয় ২০১৮-১৯ অর্থবছর ছিল হাজার ৯০৯ ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে হাজার ৭৫১ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে হাজার ৬১০ ডলার।

সেবা কৃষি খাতের অবদান কমছে, শিল্পের বাড়ছে: গত অর্থবছরে সেবা খাতের পাশাপাশি কৃষি খাতের অবদান কমছে। গত অর্থবছরে শিল্প খাতের অবদান ছিল ৩৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। তবে কৃষি খাতে ক্রমাগতভাবে কমছে। গত অর্থবছরের মোট জিডিপিতে কৃৃষি থেকে এসেছে লাখ ৪৭ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল লাখ ২২ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। তবে টাকার অংকে কৃষি খাতে আয় কিছুটা বাড়লেও জিডিপিতে কৃষি খাতের মোট অংশ কমে গেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ১৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় দশমিক ৩০ শতাংশ কম।

কৃষিতে আশার আলো মত্স্য উপখাত: জিডিপিতে কৃষির অবদান কমলেও মত্স্য উপখাতের অবদান কিছুটা বেড়েছে। মোট জিডিপিতে মত্স্য উপখাতের অবদান ২০১৬-১৭ সালে ছিল দশমিক ৬১ শতাংশ। তা কিছুটা কমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং  ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দশমিক ৪৯ শতাংশে দাঁড়ায়। তবে গত অর্থবছরে মত্স্য উপখাতের অবদান কিছুটা বেড়ে দশমিক ৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে টাকার অংকে মত্স্য উপখাত থেকে জিডিপিতে যুক্ত হয়েছে ৮২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৭৪ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। এই খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল দশমিক ১০ শতাংশ।

খাতভিত্তিক প্রবৃদ্ধির শীর্ষে স্বাস্থ্য, পিছিয়ে শস্য গ্যাস খাত: গত অর্থবছরে তিনটি খাত উপখাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে স্বাস্থ্য সেবা খাতের। এর পরই রয়েছে নির্মাণ খাত। দুটি খাতে প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে দশমিক ৯৬ এবং দশমিক শূন্য দশমিক শতাংশ। তবে একটি খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস অপরিশোধিত তেল খাতে শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ। এর পরই সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে শস্য খাতে। গত অর্থবছরে শস্য খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ। এছাড়া শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি ছিল এমন খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে মত্স্য, বিদ্যুৎ জ্বালানি, হোটেল রেস্টুরেন্ট, পরিবহন গুদামজাত, শিক্ষা, জনপ্রশাসন প্রতিরক্ষা খাত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন