প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা এ বছর না নেয়ার প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের পঞ্চম শ্রেণীর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের চিন্তা-ভাবনা করছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল। নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে। বিকল্প হিসেবে এবার কেবল প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে পরীক্ষা হতে পারে।

বিষয়ে প্রাথমিক গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, কেবল বছরের প্রাথমিক ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না নেয়ার জন্য তারা সরকারের কাছে শিগগিরই সারসংক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাব পাঠাবেন। এরই মধ্যে প্রস্তাব প্রায় তৈরি করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে প্রস্তাব পাঠানো হবে।

করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে এখন তা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। ছুটির কারণে এইচএসসি পরীক্ষাও নেয়া যায়নি।

জেএসসি-জেডিসিতে বিষয় সিলেবাস কমানোর প্রস্তাব: পাঠ্যসূচি সংকোচন বিষয় কমিয়ে আগামী ডিসেম্বরে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেডু) সম্প্রতি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব জমা দিয়েছে বেডু।

দেশের বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে বেডু। মূলত জেএসসি, এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে তারা। বেডুর প্রস্তাবে জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে বলা হয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যদি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু রাখা যায়, তার ভিত্তিতে জেএসসি-জেডিসি নিয়ে বেডু প্রথম প্রস্তাবটি করেছে। ওই তিন মাস শ্রেণী কার্যক্রম চললেও নির্ধারিত শিক্ষাক্রম পাঠ্যসূচি সমাপ্ত করা সম্ভব নয়। এজন্য শিক্ষাক্রম পাঠ্যসূচি সংকোচন করে পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। তারা বলছে, সংকুচিত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে আগের মতোই ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়া সম্ভব।

সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের বাস্তবতা ধরে নিয়ে ভিন্ন একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে পাঠ্যসূচি সংকোচন করে ডিসেম্বরে শুধু বহু নির্বাচনী প্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষা

নেয়া যেতে পারে। প্রক্রিয়ায় ঘণ্টার পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়া হবে।

পরীক্ষার মোট বিষয়ের সংখ্যা কমানোর কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, জেএসসি পরীক্ষা চালুর আগে অষ্টম শ্রেণীতে যে বৃত্তি পরীক্ষা হতো, তাতে কেবল বাংলা, ইংরেজি, গণিত বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা হতো।

প্রস্তাবে সবকয়টি বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে প্রশ্নপত্র ছাপার ক্ষেত্রে যে দীর্ঘ সময় লাগে, সেটা কমবে। এছাড়া সব বোর্ডের ফলাফলেও সমতা আসবে। এছাড়া প্রস্তাবে সংকুচিত শিক্ষাক্রম পাঠ্যসূচির আলোকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। যদি নভেম্বর থেকে এক মাসের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে এটি করা যাবে। বিদ্যালয়কেন্দ্রিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে শুধু অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষার ফল শিক্ষা বোর্ডগুলোতে পাঠাতে হবে। এখানেও আসন বিন্যাসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভিন্ন সেটে প্রতিদিন দুই পালায় পরীক্ষায় নেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য মনোনয়ন দেয়া যেতে পারে।

এদিকে চলতি বছর বিদ্যালয়ে যদি শ্রেণী কার্যক্রম আদৌ চালু করা সম্ভব না হয়, তাহলে কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবে। এজন্য একটি শিক্ষাবর্ষকে বাতিল না করে শিক্ষাক্রমের অবশিষ্ট অংশকে পরবর্তী শ্রেণীতে সমন্বয় করা যেতে পারে।

বেডুর দেয়া প্রস্তাব বিষয়ে মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বেডুর দেয়া প্রস্তাবগুলো  পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন