ফের বাড়ছে আদার দাম

আমদানি করা ১৫৫ টাকা কেজি দেশী ১৮০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ব্যুরো

করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে মসলাপণ্যের বাজারে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে আদা বহুমুখী ঔষধি গুণের কারণে মসলাটির চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আদার দামে পাইকারি পর্যায়ে এরই মধ্যে আমদানি করা আদার কেজি ১৫০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে দেশে উৎপাদিত আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে ব্যবসায়ী আমদানিকারকরা বলছেন, বাড়তি চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সীমিত হয়ে আসায় দেশের বাজারে আদার দাম নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো ঘুরে গতকাল চীন থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি আদা মানভেদে ১৪০-১৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায় পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আদা মানভেদে বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ১২০-১৩৫ টাকায় তবে বাজার ঘুরে মিয়ানমারের তুলনায় চীন থেকে আমদানি করা আদার আধিক্য দেখা গেছে অন্যদিকে এদিন দেশে উৎপাদিত আদা কেজিপ্রতি ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয় বাজারে দেশে উৎপাদিত আদার সরবরাহ নেই বললেই চলে কারণে আমদানি করা আদার তুলনায় দেশী আদা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশে উৎপাদিত আমদানি করাদুই ধরনের আদার সরবরাহ দ্রুত বাড়ানো না গেলে আগামী দিনগুলোয় পাইকারি বাজারে মসলাপণ্যটির দাম বর্তমানের তুলনায় আরো বাড়তে পারে বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা

চলতি বছর আদার দামে এমন ঊর্ধ্বগতি এবারই প্রথম নয় গত রোজার ঈদের সময় দেশে আদার দাম আকাশ ছোঁয় ওই সময় খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আদা ৩০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হতে দেখা গিয়েছিল আর খুচরা বাজারে পণ্যটির আরো বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল ঈদ করোনাকালীন বাড়তি চাহিদা আদার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ব্যবসায়ীরা তবে পণ্যটির দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রাখতে তত্পর ছিল সরকার বাজার মনিটরিং, অভিযান পরিচালনাসহ নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল ওই সময় খাতুনগঞ্জে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ব্যবসায়ীদের এমন দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয় দেখা যায়, অনেক আমদানিকারক ব্যবসায়ী ১২০ টাকা কেজি দরে আমদানি করা আদা কৃত্রিম সরবরাহ সংকটের অজুহাতে ৩০০ টাকায় বিক্রি করেছেন

সরকারি তত্পরতায় অল্প সময়ের মধ্যে দেশের বাজারে আদার দাম কমে আসে তবে ওই সময় থেকে ব্যবসায়ী আমদানিকারকরা আদা আমদানি কমিয়ে দিতে শুরু করেন এতদিন পর এসে বাজারে এর প্রভাব পড়েছে আমদানি শ্লথ হয়ে আসায় দেশের বাজারে নতুন করে আদার দাম বাড়তে শুরু করেছে একই সঙ্গে বৃষ্টি বন্যার কারণে দেশে উৎপাদিত আদার সরবরাহও কমে এসেছে এজন্য পণ্যটির দামও বাড়তির দিকে রয়েছে

বিষয়ে খাতুনগঞ্জের মেসার্স এসএন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবু বক্কর সিদ্দিকী বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে আদার বাজারের সিংহভাগ আমদানি করা চীনা আদার ওপর নির্ভরশীল এর বাইরে মিয়ানমার থেকে সামান্য পরিমাণ আদা আমদানি হয় রোজার ঈদের পর থেকে দেশীয় আমদানিকারকরা আমদানি কমিয়ে দেয়ায় বর্তমানে দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় আদার সরবরাহ কমে গেছে মূলত কারণে মসলাপণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না

চীনে আদার বুকিং দর বর্তমানে আগের তুলনায় বেড়েছে দেশে মূল্যবৃদ্ধির জের ধরে সম্প্রতি কয়েকজন আমদানিকারক চীন থেকে আদা আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন তবে এসব আদা দেশে আসতে আরো কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বাড়তি বুকিং দরের কারণে আমদানি পর্যায়ে দাম পড়তে পারে কেজিপ্রতি ১৭০-১৮০ টাকা তাই আগামী দিনগুলোয় দেশের পাইকারি বাজারে আদার দাম কমার সম্ভাবনা নেই বললেই চলেএমনটাই মনে করছেন আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা

তবে আদার দাম বাড়তির দিকে থাকলেও খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে কমে এসেছে রসুনের দাম গতকাল এখানকার পাইকারি বাজার ঘুরে চীন থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি রসুন মানভেদে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায় আর খুচরা বাজারে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০-৬৫ টাকায় ব্যবসায়ীরা জানালেন, খাতুনগঞ্জ বাজারে অনেক দিন পর রসুনের দাম এতটা কমে এসেছে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন