হংকংয়ে ক্রমে রাজনৈতিক অধিকার সংকুচিত করার অভিযোগে শহরটির শীর্ষ নির্বাহী ক্যারি লাম এবং হংকং ও চীনের অন্য ১০ শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
৭ আগস্ট ঘোষিত ওয়াশিংটনের ওই নিষেধাজ্ঞায় হংকংয়ের আর্থিক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে যাচ্ছে।
খবর রয়টার্স।
হংকংয়ে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকরের এক মাস পর মার্কিন ওই নিষেধাজ্ঞায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে।
এছাড়া আমেরিকান ব্যক্তি বা কোম্পানিকে তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে দেয়া হবে না।
গত জুনে আরোপকৃত নিরাপত্তা আইনটি পশ্চিমা সরকারগুলোর কড়া সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে।
আইনটির সমর্থকরা বলছেন, এক বছর ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর এতে বাণিজ্যনগরীটিতে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
তবে আইনটির ফলে হংকংয়ের আর্থিক খাত সংকটে পড়তে পারে।
আইনের আওতায় অন্য কোনো দেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ ও নির্দেশনা গ্রহণ করা যাবে না।
এছাড়া হংকং কিংবা মূল ভূখণ্ড চীনের ওপর অন্য কোনো দেশের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে পারবে না হংকংয়ের কোম্পানিগুলো।
আইনবিদরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অনুসরণ করলে নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন হবে ুিকনা, এটা স্পষ্ট নয়।
ব্যাকার ম্যাকেঞ্জির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রধান মিনি ভান্ডপল বলেন, অল্প কথায় বললে উত্তর হচ্ছে—হ্যাঁ।
মূল আইনের ২৯ (৪) অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে, হংকং কিংবা পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার (পিআরসি) বিরুদ্ধে বিদেশী কোনো সরকার বা পক্ষের নিষেধাজ্ঞা মান্য করা আইনের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।
তিনি বলেন, হংকংয়ের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য এ ধারা বিস্তৃত ব্যাখ্যা দাবি করে।
আজ পর্যন্ত আমরা ২৯ (৪) অনুচ্ছেদের বাস্তবায়ন দেখিনি এবং এটা কীভাবে কার্যকর হবে—এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা পাইনি।
শনিবার হংকং মনিটারি অথরিটি (এইচকেএমএ) এক সার্কুলারে জানায়, হংকংয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মতো হংকংয়ের ব্যাংকগুলোর জন্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার কোনো বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য নয়।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থেকে বিরত থাকার জন্য ব্যাংকগুলোর ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করা হবে কিনা, বার্তা সংস্থা রয়টার্স থেকে এ প্রশ্ন করা হলে এইচকেএমএ জানায়, সার্কুলারে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলার কিছু নেই।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় কোন ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং কীভাবে, সে বিষয়ে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো ব্যাংক বা অ্যাসেট ম্যানেজার নিষেধাজ্ঞা ঘোষিত ১১ ব্যক্তি বা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো কোম্পানির সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না।
কমপ্লায়েন্সপ্লাস কনসাল্টিংয়ের কৌঁসুলি ও পরামর্শক পরিচালক জোসেফাইন চুং বলেন, নিষেধাজ্ঞা ঘোষিত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার ব্যাপারে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসরণ করবে হংকংয়ে থাকা ব্যাংকগুলো, তার সম্ভাবনা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কোম্পানিগুলো ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে বাধ্য থাকবে না এবং নিষেধাজ্ঞা ঘোষিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনায় তাদের কোনো সমস্যা নেই।
এমনকি তারা যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা কোম্পানির সঙ্গেও স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
হংকংয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আর কোনো চাপ আসতে পারে কিনা, সে বিষয়েও চিন্তার জায়গা রয়েছে।
গত ১৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে শুক্রবারের ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ওই নির্বাহী আদেশের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হংকং স্বায়ত্তশাসন আইন।
হংকংয়ের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের সঙ্গে লক্ষণীয় কাজ করা যেকোনো বিদেশী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের ওপর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।
লক্ষণীয় লেনদেন বলতে কী বোঝানো হচ্ছে এবং কারা এর সঙ্গে যুক্ত, এ বিষয়ে স্পষ্ট করে জানা যায়নি।