নির্বাচনে হেরে বেলারুশ ছাড়লেন বিরোধীদলীয় নেত্রী

বণিক বার্তা ডেস্ক

বেলারুশিয়ান বিরোধীদলীয় নেত্রী সভেতলানা তিখানোভস্কায়া দুদিন আগের নির্বাচনকে ‘তামাশাপূর্ণ’ বলে প্রত্যাখ্যান করার পর এবার দেশ ছেড়ে গেলেন। তিনি বলেছেন, সন্তানদের কথা ভেবেই কঠিন এ সিদ্ধান্তটি তাকে নিতে হয়েছে।

নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে গত রবি ও সোমবার টানা দুরাতে বিক্ষোভ হয়েছে। সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। এরই মধ্যেই পরাজিত প্রার্থী সভেতলানা দেশ ছেড়ে গেলেন। তিনি এখন লিথুয়ানিয়ায় অবস্থান করছেন এবং ওই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সেখানে বেশ ‘নিরাপদে’ আছেন। 

নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হন আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। যদিও নির্বাচনে জালিয়ারি ভুরি ভুরি অভিযোগ তোলা হয়েছে। 

নির্বাচনের পর টানা দুই রাতে পুলিশের সঙ্গে বিরোধীদলীয় সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়, যাতে একজনের মৃত্যুর খবর এসেছে। এছাড়া বহু জায়গা থেকে পুলিশের নিষ্ঠুর নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে। 

বিরোধীদলকে চাঙ্গা করে তুলে স্বৈরশাসক লুকাশেঙ্কোর জন্য সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে আসেন সভেতলানা। ১৯৯৪ সাল থেকে সাবেক সোভিয়েত দেশটিকে শাসন করে আসছেন লুকাশেঙ্কো। সভেতলানা অবশ্য তাকে আর চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস দেখাচ্ছেন না। তাইতো বিদেশ পাড়ি জমালেন। 

বিরোধীদলীয় নেত্রীর বিদেশ যাত্রার সুযোগটা নিলেন লুকাশেঙ্কো, যিনি বিরোধীদলীয় সমর্থকদের ‘ভেড়া’ বলে অভিহিত করলেন, যাদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে বিদেশ থেকে।

লিথুয়ানিয়া যাত্রার আগে সমর্থকদের উদ্দেশে ধারণ করা এক আবেগঘন ভিডিওবার্তায় সভেতলানা বলেছেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এবারের অভিযান আমাকে ইস্পাতকঠিন করে তুলবে এবং অনেক বেশি শক্তি দেবে, যা দিয়ে আমি যেকোন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব। কিন্তু আমার মনে হয়, আমি এখনো সেই দুর্বল নারীই রয়ে গেছি।’

সভেতলানা বলেছেন, তার সিদ্ধান্তটি ‘সম্পূর্ণ নিজের’ এবং এখানে কারো কোনো প্রভাব ছিল না। যদিও এজন্য অনেকে তাকে ‘নিন্দা’ জানাবে ও ‘ঘৃণা’ করবে। তার কথায়, ‘যা ঘটছে তাতে কারো জীবনের মূল্য নেই। আমাদের জীবনে অবশ্য শিশুরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ নির্বাচনের আগেই সন্তানদের লিথুয়ানিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

সভেতলানার অবস্থান নিয়ে যখন জল্পনা-কল্পনা শুরু হয় তখন লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিনাস লিনকেভিসিয়াস টুইট করে বলেন, ‘সভেতলানা তিখানোভস্কায়া নিরাপদে রয়েছেন। তিনি লিথুয়ানিয়ায় আছেন।’

নির্বাচনী প্রচারণায় আলোয় আসেন ৩৭ বছর বয়সী সভেতলানা। এর আগে তিনি ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। যদিও রাজনীতিতে আসার আগে তিনি একেবারেই গৃহিনীর ভূমিকায় ছিলেন। রাজনীতিক স্বামী গ্রেফতার হলে তার জায়গা নেন সভেতলানা। তাকে অবশ্য ‘বাচ্চা মেয়ে’ আর ‘বিদেশী পুতুল’ আখ্যায়িত করে অবজ্ঞাই করতে থাকেন লুকাশেঙ্কো।


সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন